পাইলটের উড্ডয়ন ত্রুটির কারণেই বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওপর বিধ্বস্ত হয়েছে। বিমানের উড্ডয়নের সময় ত্রুটি ছিল। প্রশিক্ষণের জন্য পাইলট ফ্লাই করার পর পরিস্থিতি তার আয়ত্তের বাইরে চলে যায়।
গত ২১ জুলাই উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার তদন্ত কমিটির প্রধান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জেনারেল এস এম কামরুল হাসানসহ একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তদন্ত প্রতেবদনটি জমা দেয়। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমীতে প্রেস ব্রিফিং করে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ওই ঘটনায় পাইলটসহ অন্তত ৩৫ জন নিহত ও শতাধিক আহত হন। ঘটনা তদন্তে ২৭ জুলাই ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তিন মাস তদন্ত শেষে কমিটি এ রিপোর্ট দেয়।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, তদন্ত কমিটি ১৫০ জনের সঙ্গে কথা বলেছে। এর মধ্যে বিশেষজ্ঞ ও ভুক্তভোগীরা আছেন। সবার সঙ্গে কথা বলে তারা ১৬৮টি তথ্য উদঘাটন করেছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য তদন্ত কমিটি ৩৩টি সুপারিশ করেছে। প্রধান সুপারিশ হলো, জননিরাপত্তার স্বার্থে এখন থেকে বিমানবাহিনীর সব প্রাথমিক প্রশিক্ষণ ঢাকার বাইরে পরিচালিত হবে।
শফিকুল আলম বলেন, ‘দুর্ঘটনার মূল করণ ছিল পাইলটের উড্ডয়নের ত্রুটি। ট্রেনিংয়ের সময় যখন তিনি ফ্লাই করছিলেন, পরিস্থিতি তার আয়ত্তের বাইরে চলে যায়। এটা হচ্ছে কনক্লুশন।’
প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘এই স্কুল রাজউকের বিল্ডিং কোডের অনুমোদনে হয়নি। বিল্ডিংয়ে ন্যূনতম তিনটি সিঁড়ি থাকার কথা ছিল, সেখানে মাইলস্টোনের বিধ্বস্ত বিল্ডিংয়ে ছিল একটি সিঁড়ি, মাঝ বরাবর। বিশেষজ্ঞ কমিটি বলছে, তিনটি সিঁড়ি থাকলে হতাহতের সংখ্যা আরও কম হতো।’
এছাড়া অন্য সুপারিশের মধ্যে বরিশাল ও বগুড়ায় রানওয়ে সম্প্রসারণের কথা বলা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন দেওয়ার সময় এ ব্যাপারে তিনি নির্দেশনাও দিয়েছেন। রাজউকের বিল্ডিং কোড যাতে নতুন সম্প্রসারিত এলাকায় পালিত হয়, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।
প্রেস সচিব বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমানবাহিনীর বিমানের স্বল্পতা আছে। এয়ারপোর্টের আশেপাশে যেন ‘ফোম টেন্ডার’ (বিশেষ ধরনের অগ্নিনির্বাপক গাড়ি যা দাহ্য তরল পদার্থে লাগা আগুন নেভাতে ব্যবহৃত হয় থাকে) সে বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। এটা করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। বিমানবন্দরে টেক অফ এবং ল্যান্ডিংয়ের জন্য বাড়ি বানানোর ক্ষেত্রে উচ্চতার একটা বিধিনিষেধ আছে। অন্যান্য দেশে দেখা গেছে, টেক অফ এবং ল্যান্ডিংয়ের পথে কিছু স্থাপনার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আছে, যেমন হাসপাতাল, স্কুল, ওয়ারহাউজ, ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আছে, এই দিকে যাতে সিভিল এভিয়েশন নজর রাখে, সে বিষয়ে বলা হয়েছে।
তিনি জানান, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে অনেক জায়গায় বিমানবন্দর আছে, সেগুলো যাতে ঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।পুলিশের খোয়া যাওয়া অস্ত্র উদ্ধারে ফের পুরস্কার ঘোষণা
গত বছর গণঅভ্যুত্থানের সময় পুলিশের খোয়া যাওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে ফের পুরস্কার ঘোষণা করেছে সরকার। বুধবার পুলিশ সদরদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গোলাবারুদের প্রকৃত সন্ধানদাতাদের পুরস্কৃত করা হবে। পুরস্কারের পরিমাণ এলএমজি ৫ লাখ টাকা, এসএমজি দেড় লাখ টাকা, চায়না রাইফেল এক লাখ টাকা এবং পিস্তল ও শটগান ৫০ হাজার টাকা। প্রতি রাউন্ড গুলির জন্য পুরস্কার ৫০০ টাকা।
এছাড়া লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গোলাবারুদের প্রকৃত সন্ধানদাতাকে কাছের থানায় যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। সন্ধানদাতার পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রাখা হবে।
এলএইস/