সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ৭ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
থালাপতি বিজয়সহ দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা আফগানিস্তান সফরের অভিজ্ঞতা জানালেন ইবনে শাইখুল হাদিস ‘আওয়ামী লীগ আমাকে জোর করে নমিনেশন দিয়েছিল’ পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের তৃতীয় স্পিকার আবদুল ওয়াহাব খান রহ. 'বৈচিত্র্যময় শিক্ষা দিচ্ছে ইকরা কারিকুলাম' খাগড়াছড়িতে মসজিদ-মাদরাসায় আগুন ও হামলা আওয়ামী ষড়যন্ত্রের অংশ : খেলাফত আন্দোলন খাগড়াছড়ির অস্থিরতা বাংলাদেশ নিয়ে ভূরাজনৈতিক কূটচালের অংশ: ইসলামী আন্দোলন ফরিদরের মধুখালীতে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু দুর্গাপূজায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে সজাগ থাকতে হবে: খেলাফত মজলিস ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিকল্প নেই’

পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের তৃতীয় স্পিকার আবদুল ওয়াহাব খান রহ.

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর

পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন ও ‘ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তান’ নামকরণের পেছনে যাঁর সভাপতিত্ব এক ঐতিহাসিক মাইলফলক হয়ে আছে, তিনি হলেন নেজামে ইসলাম পার্টির নেতা ও পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের তৃতীয় স্পিকার আলহাজ্ব আবদুল ওয়াহাব খান রহ.।

১৯৫৬ সালে জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে তাঁর সভাপতিত্বেই নেজামে ইসলাম পার্টির পক্ষ থেকে ইসলামী শাসনতন্ত্রের ঐতিহাসিক ২২ দফা মূলনীতি উপস্থাপিত হয়। একই অধিবেশনে পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান অনুমোদিত হয় এবং “Islamic Republic of Pakistan” (পাকিস্তান ইসলামি প্রজাতন্ত্র) হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানে ইসলামী রাষ্ট্র বিনির্মাণের সংগ্রামে নেজামে ইসলাম পার্টির সফলতা সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়।

আবদুল ওয়াহাব খান ১৮৯৮ সালে বরিশালের বাকেরগঞ্জ জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্বপুরুষ রহমত খান ছিলেন একজন আফগান অভিবাসী। তিনি বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে ১৯১৮ সালে বি.এ. এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২১ সালে বি.এল. ডিগ্রি অর্জন করেন। দীর্ঘ দুই দশক বরিশাল আদালতে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষাব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন— বরিশাল জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান, বরিশাল পৌরসভার কমিশনার, জেলা স্কুল বোর্ডের সভাপতি ইত্যাদি পদে।

তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা কৃষক প্রজা পার্টি থেকে শুরু হয়ে মুসলিম লীগ ও পরবর্তীতে যুক্তফ্রন্টের অন্যতম শরীক দল নেজামে ইসলাম পার্টির মাধ্যমে একটি স্বতন্ত্র রূপ লাভ করে।

১৯৩৭ সালের নির্বাচনে তিনি কৃষক প্রজা পার্টির টিকিটে পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৬ সালে তিনি রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন করে মুসলিম লীগে যোগ দেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের শরীক নেজামে ইসলাম পার্টির প্রার্থী হয়ে পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৫ সালে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে নির্বাচিত হয়ে স্পিকার হন। তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের তৃতীয় স্পিকার।

উল্লেখ্য, তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন চৌধুরী মোহাম্মদ আলী। তিনিও পরবর্তীতে নিজ দল বিলুপ্ত করে নেজামে ইসলাম পার্টিতে যোগদান করেছিলেন।

একজন প্রাজ্ঞ ইসলামি রাজনীতিবিদ, বিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবে আবদুল ওয়াহাব খান ইসলামী শিক্ষা, নৈতিক মূল্যবোধ ও শরীয়াহভিত্তিক আইন প্রতিষ্ঠার পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। তাঁর ঐতিহাসিক অবদানই আজও তাঁকে পাকিস্তানের সাংবিধানিক ইতিহাসে অমর করে রেখেছে।

লেখক: ছাত্রবিষয়ক সচিব, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি

আরএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ