ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ির ঘটনার পরম্পরা দেখলে পরিষ্কার বোঝা যায়, পরিকল্পিতভাবে উত্তেজনা তৈরি করা হয়েছে এবং প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও ক্রমাগত উস্কানি দিয়ে পরিস্থিতিকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আদতে পাহাড়িদের স্বার্থ রক্ষা বা পাহাড়িদের নিরাপত্তার প্রশ্ন এখানে মুখ্য ছিল না বরং মানুষের আবেগকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রকে অস্থির করা হয়েছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বহুদিনের চলমান ভূরাজনৈতিক কূটচালের অংশ হিসেবে সুযোগ সন্ধান করা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চায় যে, বাংলাদেশের অখণ্ডতার প্রশ্ন তৈরি করে এমন কোন চক্রান্ত স্বমূলে প্রতিরোধ করা হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ একটি আধুনিক সীমানাভিত্তিক জাতি রাষ্ট্র। আমাদের ৫৬ হাজার বর্গমাইলের সকলে মিলেই আমরা একটি জাতি। এখানে ভাষা,ধর্ম বা নৃতাত্ত্বিক বিবেচনায় কেউ সংখ্যালঘু না; কেউ সংখ্যাগুরুও না। নাগরিক অধিকারে সকলে সমান। খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের যে ঘটনা ঘটেছে তার অবশ্যই বিচার হতে হবে। প্রশাসনও অভিযুক্ত হিন্দু যুবককে আটক করেছে। তারপরেও বিষয়টা নিয়ে রাজপথে আন্দোলন এবং ক্রমাগত হিংসাত্মক বাক্যবাণে পরিবেশ উত্তপ্ত করার কোন কারণ নাই; প্রয়োজনও নাই। তারপরেও যুদ্ধাবস্থা তৈরি করা হয়েছে, নাগরিকের প্রাণহানি হয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসার ও সদস্যরা নিজ দেশেই আহত হয়েছেন। পুরো বিষয় বিশ্লেষণ করলে এর পেছনে ভূরাজনীতির নোংরা কৌশল কাজ করছে বলে প্রতীয়মান হয়। আমরা আশা করি, আমাদের অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাদের পূর্ণ মনোযোগ সহকারে দক্ষতার সাথে এই কূটকৌশলকে প্রতিহত করবে; ইনশাআল্লাহ। আমরা তাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, পুরো বাংলাদেশ আপনাদের সাথে আছে।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে যে কোন আলোচনায় দেশের একটি শ্রেণী পাহাড়ে সেনা মোতায়েন থাকার বিষয়ে আপত্তি তোলেন। তাদের আপত্তির পেছনে কোন দুরভিসন্ধি আছে কিনা তা আমাদের ভাবিয়ে তোলে। সেনা মোতায়েন থাকার পরেও পাহাড়ে নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। প্রায়শই সশস্ত্র অপরাধের ঘটনা ঘটছে। এই বাস্তবতায় সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহারের দাবি সরল কোনো দাবি নয়। এই ধরণের দাবীর মাধ্যমে প্রচ্ছন্ন বার্তা দেয়া হচ্ছে যে, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী নিপীড়নমূলক অবস্থান নিয়েছে। আদতে এটা সম্পূর্ণ ভুল। বরং সেখানে সেনাবাহিনী নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে অবস্থান করছে। তাই জ্ঞাত বা অজ্ঞাত কোনোভাবেই যেনো কারো অবস্থান দেশের সার্বভৌমত্বের বিপক্ষে না যায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান করছি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র অস্থিরতায় নিহতদের পরিবার ও আহতদের প্রতি সহমর্মীতা ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। আহত সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এবং তাদের সাহস, ধৈর্য ও দক্ষতার প্রশংসা করেছেন।
আরএইচ/