বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫ ।। ২১ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
গুমের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড গণতন্ত্র রক্ষায় প্রয়োজন অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করতে হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি বংশােদ্ভূত বিচারপতি হলেন সোমা সাইদ ধূমপায়ীরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হতে পারবেন না ইসরায়েলের অস্ত্রের চালান আটক বেলজিয়ামের হাতে যমুনায় জামায়াতসহ ইসলামি ৮ দলের প্রতিনিধিরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আগুন নিয়ন্ত্রণে নির্বাচন সুষ্ঠ করতে জুলাই সনদের বাস্তবায়নসহ ৮ সুপারিশ লিবিয়ায় বাংলাদেশীকে অপহরণ করে ২০ লক্ষ টাকা আদায়, মানব পাচারকারী গ্রেপ্তার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় জামিন পেল লতিফ সিদ্দিকী

সুন্দর পোশাক

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হযরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন—

“যার অন্তরে সরিষাদানা পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”

এ কথা শুনে এক সাহাবি জিজ্ঞেস করলেন, “মানুষ তো চায় তার পোশাক সুন্দর হোক, জুতা সুন্দর হোক; এটাও কি অহংকারের অন্তর্ভুক্ত?”

রাসুলুল্লাহ (স.) উত্তর দিলেন,

“আল্লাহ সুন্দর, তিনি সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন। অহংকার হলো সত্যকে অস্বীকার করা এবং মানুষকে হীনজ্ঞান করা।”— (সহিহ মুসলিম: ৯১)

পোশাকে আল্লাহর নেয়ামতের প্রকাশ

আবুল আহওয়াস (রহ.)-এর পিতা বর্ণনা করেন—একদিন তিনি সাধারণ পোশাক পরে নবী করিম (স.)-এর নিকট আসেন।

রাসুলুল্লাহ (স.) জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার কাছে কি সম্পদ আছে?”

তিনি বললেন, “হ্যাঁ, আল্লাহ আমাকে উট, ছাগল, ঘোড়া ও দাস ইত্যাদি সম্পদ দান করেছেন।”

তখন নবী করিম (স.) বললেন,

“যেহেতু আল্লাহ তোমাকে সম্পদশালী করেছেন, তাই তাঁর নেয়ামত ও অনুগ্রহের চিহ্ন তোমার পোশাকে প্রকাশিত হওয়া উচিত।”— (আবু দাউদ: ৪০৬৩)

এই হাদিসে বোঝা যায়—আল্লাহর অনুগ্রহ প্রকাশ করা, রুচিশীল ও পরিচ্ছন্ন থাকা ইবাদতেরই একটি অংশ।

সৌন্দর্যবোধ আল্লাহপ্রদত্ত গুণ

আরেক হাদিসে এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বললেন,

“হে আল্লাহর রাসুল, আমি চাই আমার পোশাক, জুতা এমনকি লাঠিটিও সুন্দর হোক।”

রাসুলুল্লাহ (স.) উত্তর দিলেন,

“নিশ্চয়ই আল্লাহ সৌন্দর্য পছন্দ করেন। এগুলো আল্লাহর নেয়ামতের প্রকাশ।” — (মুস্তাদরাক আলাস-সাহিহাইন: ৭৪৭৬)

অতএব, রুচিশীলতা ও পরিপাট্য কেবল বাহ্যিক বিষয় নয়, এটি একজন মুমিনের আল্লাহপ্রেম ও কৃতজ্ঞতার প্রতিফলন।

কোরআনের দিকনির্দেশনা

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন—

“হে আদম সন্তান! তোমরা প্রত্যেক সালাতের সময় সুন্দর পোশাক পরিধান করো।”— (সুরা আরাফ: ৩১)

আলেমগণ বলেন, নামাজের সময় পরিষ্কার ও সুন্দর পোশাক পরিধান করা আল্লাহর নেয়ামতের প্রতি শুকরিয়া ও সম্মানের প্রকাশ। এটি দেখায় যে মানুষ তার স্রষ্টার সামনে নিজেকে যথাযথ মর্যাদায় উপস্থাপন করছে।

ইসলামের ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি

ইসলামের দৃষ্টিতে সুন্দর পোশাক মানেই দামি পোশাক নয়। বরং পরিচ্ছন্ন, মার্জিত ও রুচিসম্মত পোশাক-ই প্রকৃত সৌন্দর্য।

সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে অপরিচ্ছন্ন বা ছেঁড়া পোশাক পরা ইসলাম সমর্থন করে না—কারণ তা আল্লাহর নেয়ামতের প্রতি অকৃতজ্ঞতা।

ইসলাম শেখায়—পরহেজগারি হৃদয়ের বিষয়, পোশাকের বাহুল্য নয়।

অহংকার হলো সত্যকে অস্বীকার করা এবং মানুষকে হীন চোখে দেখা, কিন্তু সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন পোশাক পরা নয়।

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে যেন তাঁর দানকৃত নেয়ামতের প্রতি শুকরিয়া আদায়কারী বানান,

আমাদের পোশাক ও আচরণে যেন নম্রতা, পরিশুদ্ধতা ও সৌন্দর্য ফুটে ওঠে,

এবং তিনি যেন আমাদের অহংকার, অপচয় ও গর্ব থেকে রক্ষা করেন। আমিন।

 এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ