বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১৯ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭


জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছে না এনসিপি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দলটির মিডিয়া গ্রুপে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

এনসিপির মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন রাত ২টার দিকে গ্রুপটিতে দেওয়া বার্তায় লেখেন, জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অংশগ্রহণ করবে না।

তিনি বলেন, এনসিপি মনে করে, এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কোনো আইনি ভিত্তি অর্জিত হবে না। এটি কেবল আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। এনসিপি বহুবার স্পষ্টভাবে আইনি ভিত্তির প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছে। আইনি ভিত্তি নিশ্চিত হওয়ার পূর্বে এ ধরনের আনুষ্ঠানিকতা “জুলাই ঘোষণাপত্র”-এর মতো আরেকটি একপক্ষীয় দলিলে পরিণত হবে।’

বার্তায় আরও বলা হয়, এনসিপি কমিশনের পরবর্তী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবে। দাবি পূরণ হলে পরবর্তীতে এনসিপি স্বাক্ষর প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে।

 এদিকে, শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত রাষ্ট্রীয় সংস্কারের দলিল ‘জুলাই সনদ’ আজ স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে। এতে অন্তর্ভুক্ত ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে একমত হয়েছে সকল রাজনৈতিক দল। তবে রাষ্ট্রীয় সংস্কারের এই দলিলের প্রকাশিত খসড়ায় ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তুলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

তারা বলছে, এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ’২৪-এর জুলাই ছাত্র-জনতার ধারাবাহিক লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস সম্পূর্ণভাবে অনুপস্থিত, যা জুলাইয়ের শহীদদের রক্তের সঙ্গে এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে প্লাটফর্মটির সভাপতি রিফাত রশিদের পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, ’২৪-এর জুলাই ছাত্র-জনতার যে রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট ও খুনি হাসিনার পলায়ন ঘটেছিল, তা ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার ধারাবাহিক লড়াই-সংগ্রামের ফসল। যার সূচনা হয় ১ জুলাই ২০২৪-এ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গঠনের মধ্য দিয়ে, যা ক্রমে ৯ দফা থেকে এক দফায় রূপান্তরিত হয়। সেই এক দফা ছিল ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’।

রিফাত বলেন, এই যে ৯ দফা এবং পরবর্তীতে এক দফা, যার মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতার অতি অভিপ্রায় স্পষ্ট হয়েছিল; সেই অভিপ্রায়ের ফলেই বাংলাদেশের আমূল সংস্কার, নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবং একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নের বুনিয়াদ স্থাপিত হয়েছিল। কিন্তু এই জুলাই সনদে সেই বুনিয়াদকে ধ্বংস করার পাশাপাশি ছাত্র-জনতার অভিপ্রায়ের বিকৃতি ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ার নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জুলাইয়ের শহীদ পরিবার, আহত ব্যক্তি ও ছাত্রদের উপেক্ষা করা হয়েছে। কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে রাষ্ট্রের ইতিহাসকে বিলীন করা হয়েছে, যার নজির পূর্বেও রয়েছে। অতীতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা ছাত্র-জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বারবার প্রতারণা করতে দেখেছি।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ