বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫ ।। ২০ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭


মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের আধিপত্য

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে বিদেশি কর্মীদের উপস্থিতি দীর্ঘদিনের বাস্তবতা। তবে সর্বশেষ সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, বৈধ অভিবাসী কর্মীদের মধ্যে বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ অভূতপূর্ব মাত্রায় পৌঁছেছে।

দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী স্টিভেন সিম জানান, বর্তমানে মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকের সংখ্যা ২১.৪ লাখ (২.১৪ মিলিয়ন)। যার মধ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা ৮০৩,৩২২ জন।

এ তথ্য শুধু সংখ্যার বিচারে নয়, মালয়েশিয়ার সামাজিক-অর্থনৈতিক কাঠামোর প্রেক্ষাপটেও গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশিরা শীর্ষে

১৫টি উৎস দেশ থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক যাচ্ছে। তালিকার শীর্ষে বাংলাদেশ, এরপর ইন্দোনেশিয়া (৫৪৩,৫১৪) এবং নেপাল (৩৩২,৭১২)। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় সব দেশই মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে অংশীদার হলেও বাংলাদেশিদের প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি

কেন মালয়েশিয়ায় এত বাংলাদেশি?

বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ইতিহাস প্রায় চার দশকের। কম খরচে কর্মসংস্থান, মুদ্রার উচ্চমান, এবং মালয়েশিয়ার শ্রমনির্ভর শিল্পগুলো বিশেষত—নির্মাণ, কৃষি, প্লান্টেশন, উৎপাদন ও সেবা খাত বাংলাদেশি শ্রমিকদের আকর্ষণীয় গন্তব্য করে তুলেছে।

তাছাড়া মালয়েশিয়া সরকার ও বাংলাদেশের মধ্যে সরকার-টু-সরকারি  (জিটুজি) চুক্তি এবং পরবর্তীতে প্রাইভেট রিক্রুটমেন্ট সিস্টেম খোলার ফলে শ্রম রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

অর্থনীতিতে প্রভাব

এই বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী শুধু মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে অবদান রাখছে না। বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মালয়েশিয়া থেকে আসা রেমিট্যান্স বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম বড় উৎস। ২০২৪ সালে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স ছিল প্রায় ২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ঝুঁকি চ্যালেঞ্জ

যদিও সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সুযোগ বাড়ছে, তবুও সমস্যা এবং চ্যালেঞ্জও রয়ে গেছে। উচ্চ রিক্রুটমেন্ট খরচ, প্রতারণা ও ভিসা জালিয়াতি,অননুমোদিত অভিবাসী হওয়ার ঝুঁকি,   কর্মক্ষেত্রে শোষণ ও নিরাপত্তাহীনতা থাকছে।

বর্তমানে মালয়েশিয়া সরকার অননুমোদিত অভিবাসীদের সংখ্যা নির্ধারণের কাজ করছে। যা বৈধ শ্রমবাজারে প্রভাব ফেলতে পারে।

ভবিষ্যৎ প্রবণতা

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মালয়েশিয়ার শ্রমনির্ভর খাতের চাহিদা আগামী কয়েক বছরে আরও বাড়বে। তবে ডিজিটাল অটোমেশন এবং এআই-নির্ভর প্রক্রিয়া চালুর কারণে কিছু খাতে শ্রমিক চাহিদা কমতেও পারে। এ কারণে দক্ষতা উন্নয়ন ও আইনগত কাঠামো মেনে চলা হবে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য টিকে থাকার মূল চাবিকাঠি।

আরএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ