বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫ ।। ২০ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
একীভূত হওয়া ৫ ব্যাংকের অর্থ ও আমানত সুরক্ষিত থাকবে : গভর্নর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিত শিক্ষার্থী ফোরামের মানববন্ধন বৈষ্যমের বিরুদ্ধে সিলেটবাসীকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলন করতে হবে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রনে সরকারকে ন্যাপের আহ্বান জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ব্যতীত দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠন সম্ভব নয়: কামাল হোসেন ঘূর্ণিঝড় টাইফুন কালমেগি আঘাত, নিহত বেড়ে ১০০, নিখোঁজ ২৬ নড়াইল-২ এনপিপির চেয়ারম্যানকে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ ঢাকাস্থ বাজিতপুর-নিকলী উলামা পরিষদের মতবিনিময়, কর্মসূচি গ্রহণ মিসরে বাংলাদেশি ছাত্রদের সংগঠন ‘ইত্তিহাদ’-এর নতুন কমিটি দাওরায়ে হাদিস সনদধারীদের নিয়োগে ধর্ম উপদেষ্টার ডিও লেটার

দিনাজপুরে অনুষ্ঠিত হলো দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত। এই জামাতে একসঙ্গে প্রায় ছয় লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন বলে দাবি আয়োজকদের। প্রখর রোদ আর তীব্র দাবদাহেও নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে বৃহৎ এই জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মুসল্লিরা।

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) উত্তরের ১৬ জেলাসহ সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মিনার ও মাঠ গোর-এ শহীদ ময়দানে এবার ঈদের নামাজ আদায় করতে এসেছিলেন ফরিদপুর ও চুয়াডাঙ্গার কয়েকজন মুসুল্লি।

এশিয়ার বৃহত্তম ঈদগাহ দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দান ও ঈদগাহ মিনারটি। সাড়ে ২২ একর আয়তন বিশিষ্ট এই ঈদগাহে ১৯৪৭ সাল থেকে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হলেও আধুনিক নির্মাণশৈলীতে এই ঈদগাহে বৃহৎ পরিসরে ঈদের জামাত শুরু হয় ২০১৭ সাল থেকে। কিন্তু মাঝখানে করোনা পরিস্থিতির জন্য দুই বছর এই ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়নি ঈদের জামাত। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সকাল ৯টায় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হওয়ায় এ যাবত কালের সর্বোচ্চ সংখ্যক মুসুল্লি নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় ঈদুল ফিতরের জামাত।

তীব্র গরম উপেক্ষা করে সকাল ৭টা থেকেই মুসল্লিরা সমবেত হতে শুরু করেন এই ঈদগাহে। ঠিক ৯টায় শুরু হয় নামাজ। এখানে ঈমামতি করেন মাওলানা শামসুল আলম কাশেমী। নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহসহ প্রধানমন্ত্রী জন্য শান্তি কামনা করে করা হয় মোনাজাত।

বৃহৎ এই জামাতে অংশ নেন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহম্মেদ, দিনাজপুর পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল, বিচার বিভাগের কর্মকর্তা, প্রশাসনের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনতা।

দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচার প্রতি নামাজের পূর্ব মুহূতে এম ইনায়েতুর রহিম মুসুল্লিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, রমজানে আমরা যে তাকওয়া অজর্ন করেছি, তা হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। 

নামাজ শেষে বৃহৎ এই জামাতের প্রধান উদ্যোক্তা জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি বলেন, একসঙ্গে ৬ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসুল্লি শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করেছে এই জামাতে। সফলভাবে ঈদের জামাত সম্পন্ন হওয়ায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি। 

তিনি জানান, এশিয়ার মধ্যে বৃহৎ এই জামাত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি লাভের জন্য ইতিমধ্যেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।

ঈদগাহ মিনার ও ময়দানটি আরো সম্প্রসারণ করার জন্য দেশি-বিদেশি কনসালটেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। বিশ্বের বড় বড় মিনারগুলোর খবরা-খবর নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে বৃহৎ এই জামাতে অংশ নিতে পেরে খুশি মুসল্লিরা। তারা জানান, এবার ঈদের জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে দূর-দূরান্তের মুসুল্লিরা এসে অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন। গোর-এ শহীদ ময়দানে বৃহৎ পরিসরে ঈদের জামাত শুরু হওয়ার পর থেকে এবার সর্বোচ্চ মুসুল্লি অংশগ্রহণ করেছেন। এখানে নামাজ আদায় করতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেন তারা।

শুধু দিনাজপুর ও আশপাশের জেলা নয়, এই জামাতে নামাজ আদায় করতে আসেন দূর-দূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিরা। ঢাকা থেকে আগত মুসল্লি ব্যাংক কর্মকর্তা ইয়ানুর ইসলাম (৪০) ও নীলফামারী জেলা থেকে এসেছিলেন কাউয়ুম হোসেন (৬৩) জানান, তারা এই জামাতের কথা শুনেছেন। এবার তারা দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে এখানে এসে নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি। 

তারা বলেন, এতবড় মাঠ ও এত মুসুল্লির সঙ্গে নিয়ে এটাই তাদের প্রথম নামাজ। এই অনুভূতি কাউকে বুঝানোর নয়। তারা এখানে নামাজ আদায় করতে পেরে এবং ব্যবস্থাপনা দেখে খুব খুশি।
 
এখানে নামাজ আদায় করে একইরকম অনুভূতি প্রকাশ করেন সাজয়পুরহাট থেকে আসা অলিম উদ্দিন (৫৫)। 

তিনি বলেন, এশিয়ার বড় জামাতের কথা শুনে ঈদের নামাজ আদায় করতে এসেছি। এটি আসলেই বৃহৎ জামাত। এই বড় জামাতে নামাজ আদায় করেছে বড় সয়াবের আশায়। তবে দূরের মুসল্লিদের জন্য বিশেষ ট্রেন কিংবা বিশেষ কোনো পরিবহন ব্যবস্থা করলে মুসল্লিরা এখানে সহজেই আসতে পারতো।

বগুড়া থেকে আসা সাদেকুল ইসলাম বলেন, ঈদের কারণে যানবাহন পেতে সমস্যা হয় দেখে ইচ্ছা থাকলেও অনেকে নামাজ আদায় করতে আসেন না। যদি প্রতিটি জেলা থেকে বিশেষ পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে মুসুল্লি আরো বেড়ে যাবে।

বৃহৎ এই জামাতে অংশ নেওয়া মুসল্লিদের জন্য স্থাপন করা হয় শৌচাগার, ওজুর ব্যবস্থা। বসানো হয় মেডিক্যাল টিম। পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে নেওয়া হয় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সুষ্ঠুভাবে নামাজ সম্পন্ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রশাসনের কর্মকর্তারাও।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ