সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৩০ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
‘৩ মে’র মহাসমাবেশ হবে তৌহিদি জনতার গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক’ ৩ মের মহাসমাবেশ সফল করতে হেফাজত আমিরের আহ্বান হজ অ্যাপ ‘লাব্বাইক’ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা ইসলামবিরোধী কবিতা লিখে নির্বাসিত, ৫০ বছরেও ফিরতে পারেননি দেশে তিন পুরুষের জমিয়ত উত্তরসূরী মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী আজ হজ ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা হেফাজতের খুলনা মহানগরী সভাপতি মাওলানা সাখাওয়াত, সম্পাদক গোলামুর রহমান যুদ্ধের মাঝে যৌথ অস্ত্র উৎপাদন: ভারত-ইসরায়েল সামরিক সম্পর্কের বিবর্তন তাকওয়ার ছায়ায় মানবসভ্যতার বিকাশ ‘মানুষের ক্ষুধা নিবারণ না করতে পারলে সংস্কার-নির্বাচন ভেস্তে যাবে’

ঘরে ইবাদতের জায়গা থাকা কাম্য

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: পরিবেশ শিশুদের পরিবর্তনে অসামান্য ভূমিকা রাখে। তাদের প্রথম পাঠ শুরু হয় মায়ের কোল থেকে। যে ঘরে দ্বীনি পরিবেশ আছে, সে ঘরের পরবর্তী প্রজন্ম স্বভাবত দ্বীনদার হিসেবেই বেড়ে ওঠে।

এ জন্য আমাদের ঘরের মধ্যে যদি এমন একটি সুনির্দিষ্ট জায়গা থাকে, যেখানে গিয়ে আমরা নামাজ আদায় করব, নির্জনে আল্লাহকে ডাকতে পারব, তাহাজ্জুদ ও তিলাওয়াত করব; তাহলে শিশুরাও এটা দেখে দেখে আমাদের থেকে শিখবে এবং এর প্রভাব শিশুদের মনে প্রবলভাবে গেঁথে যাবে।

এভাবে নামাজের জায়গা করার জন্য বিশেষ আহামরি কোনো কিছু করার প্রয়োজন নেই; বরং একটু জায়গা ভিন্নভাবে সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখলেই তা ঘরোয়া মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। প্রিয় নবী (সা.) এ ধরনের মসজিদের নির্মাণের কথা বলেছেন। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘরে ঘরে, পাড়া-মহল্লায় মসজিদ নির্মাণ করার এবং তা পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধিময় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৫৫)।

আবদুল্লাহ ইবনে শাদ্দাদ (রা.) বলেন, আমি আমার খালা নবী (সা.)-এর স্ত্রী মাইমুনা (রা.) হতে শুনেছি যে তিনি হায়েজ অবস্থায় নামাজ আদায় করতেন না; তখন তিনি আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর নামাজের জায়গায় সোজাসুজি শুয়ে থাকতেন। নবী (সা.) তাঁর চাটাইয়ে নামাজ আদায় করতেন। সিজদা করার সময় তাঁর কাপড়ের অংশ আমার (মাইমুনার) শরীর স্পর্শ করত। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৩৩)।

হাদিসে নামাজের জায়গা থেকে ঘরে নামাজের নির্ধারিত স্থান উদ্দেশ্য। (ফাতহুল বারি : ১/৫৫০)।

ঘরোয়া মসজিদের আরেকটি লাভ হচ্ছে, কোনো বেনামাজি মেহমান যদি বাড়িতে আসে তাহলে তার ওপরও নামাজের বিশেষ প্রভাব পড়বে। এ জন্য সাহাবায়ে কেরামও ঘরোয়া মসজিদ বানানোর আদেশ গুরুত্বের সঙ্গে তামিল করেছেন। মাহমুদ ইবনে রাবি (রা.) বলেন, আমি ইতবান ইবনে মালিক আনসারি (রা.), যিনি বনু সালিম গোত্রের একজন, তাঁকে বলতে শুনেছি, আমি নবী সা.-এর কাছে গিয়ে বললাম, আমার দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে গেছে এবং আমার বাড়ি থেকে আমার গোত্রের মসজিদ পর্যন্ত পানি আমার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমার একান্ত ইচ্ছা আপনি আমার বাড়িতে এসে এক জায়গায় নামাজ আদায় করবেন, যেটা আমি নামাজ আদায় করার জন্য নির্দিষ্ট করে নেব। নবী (সা.) বললেন, ইনশাআল্লাহ, আমি তা করব। পরদিন রোদের তেজ বৃদ্ধি পেলে আল্লাহর রাসুল (সা.) এবং আবু বকর (রা.) আমার বাড়িতে এলেন। নবী সা. প্রবেশের অনুমতি চাইলে আমি তাঁকে অনুমতি দিলাম।

তিনি না বসেই বললেন, তোমার ঘরের কোন স্থানে তুমি আমার নামাজ আদায় পছন্দ করো? তিনি পছন্দমতো একটি স্থান নবী (সা.)-কে নামাজ আদায়ের জন্য ইঙ্গিত করে দেখালেন। অতঃপর তিনি দাঁড়ালেন, আমরাও তাঁর পেছনের কাতারে দাঁড়ালাম। অবশেষে তিনি সালাম ফিরালেন, আমরাও তাঁর সালামের সময় সালাম ফেরালাম। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৪০)।

আমরা অনেক সময় ছেলেশিশুদের মসজিদে সঙ্গে নিয়ে যাই। কিন্তু মেয়েশিশুদের সঙ্গে নেই না। যদি আমাদের এ রকম ঘরোয়া মসজিদ থাকে, তাহলে মেয়েশিশুরাও সেখানে গিয়ে নামাজ পড়তে অভ্যস্ত হবে। খুব অল্প সময়েই সে সেখানে গিয়ে ইবাদত করতে অভ্যস্ত হয়ে যাবে। আর এই ইবাদতের আবহে ঘরে তৈরি হবে মধুময় পরিবেশ।

তা ছাড়া ঘরের মধ্যে এসব নামাজের জন্য নির্ধারিত জায়গার বরকতে আল্লাহ তাআলা ঘরকে যাবতীয় অনিষ্টতা থেকেও মুক্ত রাখবেন।

-এসআর


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ