শনিবার, ০৩ মে ২০২৫ ।। ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৫ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
জ্ঞান ও প্রজ্ঞার আধার, বিশ্বমানের বাংলাদেশি আলেম চলে গেলেন আল্লামা সুলতান যওক নদভী এবার চা বাগানে ছবি তোলার সময় দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেলো বিএসএফ কর্মকর্তাদের মেরুদণ্ড শক্ত করে কাজ করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর এখন মানুষ মন খুলে লিখছেন, সমালোচনা করছেন : প্রেস সচিব গাজায় ত্রাণ বহনকারী জাহাজে ইসরায়েলের হামলা কাশ্মীর হামলার পেছনে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা : দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন নারীবিষয়ক সংস্কার প্রস্তাব আগাগোড়া ইসলামবিরোধী: হেফাজতে ইসলাম পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে খাদ্য মজুতের নির্দেশ হেফাজতের মহাসমাবেশ সফল করতে সাভারে মোটর সাইকেল শোডাউন

আশুরা ও কারবালা, একটি তাত্ত্বিক পর্যালোচনা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাওলানা মুহাম্মদ হেমায়েত উদ্দীন।।

ইসলামী ইতিহাসের স্পর্শকাতর বিষয়ের একটি কারবালা ও আশুরার অধ্যায়। ইতিহাসের গভীর থেকে বুঝতে গিয়ে অনেকেই হোঁচট খেয়েছে এ বিষয়ে। আশুরা ও কারবালা দু’টিকে একত্র করে ভুল বোঝাবুঝিও হয়েছে। কেউ বলে, আশুরা হচ্ছে যেদিন হুসাইন রা.-এর শাহাদাতের ঘটনা ঘটে ছিল। এ ধারণা নিতান্তই ভুল।

আশুরার ইতিহাস

মূলত আশুরা হচ্ছে মহররমের দশ তারিখ, যে তারিখে বনী-ইসরাঈলকে ফেরাউনের হাত থেকে মুক্তি দেয়া হয়। তারা সমুদ্র পাড়ি দিয়ে প্রাণ বাঁচায়। তাই এর শুকরানা স্বরূপ তারা রোজা রাখতো। পরবর্তীতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরতের পর যখন এ বিষয়ে অবগত হন, তখন তিনি বলেন, منكم بموسى احق نحن অর্থাৎ মুসা আ. এর আদর্শ পালনে তোমাদের থেকে আমরা বেশি হকদার। তোমরা রোজা রাখলে আমরা অবশ্যই রাখবো। তাই ইহুদীদের সঙ্গে সাদৃশ্যতার দূরত্ব বজায় রেখে দশে মহররমের সঙ্গে আগে পরে আরো একটি রোজা রাখতে সাহাবায়ে কেরামকে আদেশ করেছেন। এ ছিল আশুরার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।

আশুরার শিক্ষা
আশুরার এ ইতিহাস থেকে দু’টি শিক্ষা পাওয়া যায়। এক. আমাদের পূর্বপুরুষদের উপর যে নেয়ামত দেয়া হয়েছে, সে নেয়ামতগুলোকে আমাদের উপর দেয়া হয়েছে বলে সম্মান করা। দুই, নেয়ামতের শোকর আদায় করা।

এ থেকে পরিষ্কার হলো, আশুরার দিন হুসাইন রাযি. এর শাহাদাতের ঘটনা জড়িত না। এবং এ কারণে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরাকে মূল্যায়ন করেননি। এবং এ কারণে দিনে রোজা রাখার কথা বলেননি। কারণ হোসাইন রাযি.-এর শাহাদাতের ঘটনা ঘটেছে ৬১ হিজরীর শুরুর দিকে, তাহলে হিজরীর বিগত ৬০ বছর পর্যন্ত হুসাইন রাযি.- এর ঘটনার কারণে রোজা রাখেননি অবশ্যই ভিন্ন কারণে রেখেছিলেন।

এ ইতিহাস থেকে পরিষ্কার বুঝে আসে আশুরার প্রেক্ষাপটের সঙ্গে হুসাইন রাযি.- এর বিদায়ের ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। এমনকি হুসাইন রাযি. নিজেও এ উদ্দেশ্যে আশুরা পালন করতেন না। বরং মূসা আ.-এর আদর্শ হিসেবে পালন করতেন, যেমনটা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন । তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম যে উদ্দেশ্যে আশুরা পালন করেছেন, সে উদ্দেশ্যেই আমাদের আশুরা পালন করা উচিৎ।

বোঝা গেল আশুরার মূল্যায়ন কারবালার ঘটনার কারণে নয়। তাই আশুরার তাৎপর্য এবং শিক্ষা বলতে গিয়ে কারবালার ঘটনাকে জোর করে আনা যাবে না। আশুরার শিক্ষা ও তাৎপর্যের সঙ্গে কারবালার কোন সম্পর্ক নেই।

তবে আশুরার মোবারক দিনে হুসাইন রাযি.-এর শাহাদাতের ঘটনা ঘটেছিল। এটা ভিন্ন একটি প্রসঙ্গ। দুঃখগাথা একটি ঘটনা। এ দিনে শাহাদাতের ফলে তার মূল্য অবশ্যই বৃদ্ধি পাবে। বৃদ্ধি পাবে তার মাকাম। তবে আশুরার মর্যাদা যথা স্থানে স্থির থাকবে।

গ্রন্থপঞ্জি
১.আকবরশাহ নুজিববাদী {প্রথম খন্ড}
২.আহকামে সুলতানিয়া {আবুল হাসান}
৩. আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া {ইবনে কাসীর}
৪.আল কামেল ফিত তারিখ {ইবনে আসির}

শ্রুতিলিখন: কাওসার আইয়ুব, শিক্ষার্থী যাত্রবাড়ী মাদরাসা।

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ