রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
যেসব দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে  ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলো যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া জাগো হে কওমি তারুণ‍্য! রাতেই ঢাকাসহ তিন অঞ্চলে ঝড়ের আভাস অর্থনীতির মূল লক্ষ্য হতে হবে উদ্বৃত্ত সৃষ্টি: বাণিজ্য উপদেষ্টা চবির আরবি বিভাগের নতুন সভাপতি অধ্যাপক ড. গিয়াস উদ্দিন তালুকদার ডেঙ্গুতে একদিনে ১২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৭৪০ সিরাতকে ধারণের মাধ্যমেই সত্যিকার পরিবর্তন সম্ভব: ধর্ম উপদেষ্টা সিরাতুন্নবী (সা.) সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতার লাইভ ড্র অনুষ্ঠান ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট

রাত এবং দিনে পথের সন্ধান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

চৌধুরী মনজুর লিয়াকত

মঙ্গলবার দিবাগত যে রজনীর আগমনী শুনছি, তা ছোট বেলা থেকেই উপলব্ধিগত তাড়নায় এক বন্ধন সৃষ্টি করে চলেছে সময়ের আবর্তনে অবিরত। তাই মনে অনুরণিত হচ্ছে স্মৃতি জাগানিয়া এই রাতের কথা, যা আসছে আজ দিবার সমাপ্তিতে।

মনে পড়ে যাচ্ছে সেই সময়ের দিনশুরুর প্রস্তুতি আর বিকেল পেরোনো গোসলের কথা। সে গোসলের চাহনি ছিল পবিত্রতার প্রলেপ। তাই সেই পরিচ্ছন্নতা নিয়ে আসতো পবিত্রতার এক সৌরভ। এরপর সফেদ পাজামা-পাঞ্জাবি অথবা পরিচ্ছন্ন কোনো বস্ত্রের পরিধান।

মনে পড়ে সন্ধ্যা থেকে ব্যস্ততম ক্ষণ অতিবাহনের সময়গুলোকে। যদি সত্যি কথা বলি তবে বলতেই হয়, ভোলা তো যায় না সেই প্রিয়জনের কবরস্থানের আলোকিত সারারাত। আর সেখানে একটি ক্ষণে কান্না বিজড়িত আমাদের অবস্থান।

সেই পবিত্রতার ছায়াতল যেন মনে করিয়ে দিতো দোয়ার চাঁদোয়ায় ঘেরা নিজের অজান্তেই নিজকেই মনে করিয়ে দেয়া, অমোঘ পরিণতি সেই মৃত্যুর কথা। কবরস্থানে যাওয়া মানে নিজেকে চিরকালীনতায় পরিচ্ছন্ন রাখার এক অব্যক্ত বাসনা।

এ ছাড়া তো যাওয়া হয় না সাধারণত বেশিরভাগের সে অন্তিম গন্তব্যের সেই প্রারম্ভের এ স্থানে। এ দিনকে প্রয়োজনীয়ই তো মনে হতো উপরের কারণগুলোর একত্রিকরণে।

তারপর নামাযের পাটাতনে রাত পার করে দেয়া সময়গুলো দোলা দেয় মনের গহীনে। মনে পড়ে সেই রাতের মাওলানা সাহেবদের বয়ানগুলোর কথা। মনে দোলা দেয় নিজ বন্ধু আর প্রিয়জনদের সাথে আধ্যাত্মিকতার ছায়াতলের অতিবাহিত রাতের সময়ের স্মৃতিগুলো। যেখানে মন টানতো সুন্দরের অবগাহনে ভ্রমণ করতে।

তারপর ওই রাত জেগে কান্না ভেজা ইবাদত আর একটি সময়ে তাহাজ্জুদের নামায। সেই সময়টির কালজ্ঞানের যে কোনো তুলনায় হয় না, যে বুঝে তার কাছে। আর এভাবেই কাছাকাছি সময়ে পৌঁছে যাওয়া সূর্যোদয়ের। সে সময়ের আলো-আঁধারিতে ফজর নামাযের স্বপ্নিল ধ্যানযোগ। এরপরে নামাযের সমাপ্তিতে চোখ ভেজানো মোনাজাতে মহামহিমের কাছে আকুল চাওয়া এবং একইসাথে ক্ষমা পাওয়ার ব্যাকুলতা।

তারপর মোরগের ডাক, ভোরের আলোয় বাসায় ফেরা আর প্রায় সারাদিন ঘুম। সেই রাত জাগা বন্ধুকে পরেরদিন সন্ধেবেলার প্রশ্নবাণ 'বন্ধু কি খবর বল, ক'রাকাত নামায পড়েছিস গত রাতে?

আমি তো একশ পার করেছি সেজদার তীব্র আনন্দে, যা এবার নিয়ে যা হলো বহুবার'। যদিও কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই বা নেই সংখ্যা এ রাতের নফল নামায অথবা ইবাদতের। যে কোনো দিবা বা রাত্রির মতই নফল নামায আর ইবাদত মানুষ করতে পারে আজও। তবুও স্মৃতি তাড়া করে ফেরে এ মনের আঙ্গিনাতে অতীত সুখের তীর বিধিয়ে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে মনে পড়ে পবিত্র কুরআনের আয়াত 'তোমরা সৎকাজে প্রতিযোগিতা করো'। সত্যিকার অর্থে ফরজ, ওয়াজিব ইবাদত পালনের পাশে এ নফল ইবাদতগুলোও সৎকর্মে অনুপ্রাণিত করে আমাদের। আর দূরে থাকতে সক্ষমতা দেয় অসৎ কাজ থেকে।

আসলে এতক্ষণের কথকথায় বলছিলাম ছোট বেলার স্মৃতিকাতর একটি দিবস আর রজনী অতিবাহনের কথা অর্থাৎ অনেকেই যাকে বলেন 'শবেবরাত'। আজ তা আছে না নেই সে বিতর্কে নাই বা গেলাম। এ রাতে আমার আগামীর বরাত নির্ধারণ হয় কিনা? নাই বা ভাবলাম। ছোট বেলার থেকে করে আসা ইবাদতটিকে চালিয়ে যাই আমরা।

অনেক মন্দ মানুষ এ রাতকে ঘিরে মা-বাবা আর আপনজনের কবরস্থানে গিয়ে আর সারারাত ইবাদত করে অন্যায় থেকে কি বিরত হননি? হননি কি কেউ পরিশুদ্ধ? অবশ্যই হয়েছেন, তাই ইবাদত চলুক অকাতরে।

এ মাসের নাম শাবান। এ মাসেই কিবলা পরিবর্তন হয়েছিল কাবার দিকে। রমজান মাসের পরে এ মাসেই সবচাইতে বেশি নফল ইবাদত করতেন, রোজা রাখতেন 'রাহমাতুল্লিল আলামিন' অর্থাৎ সকল মানুষের জন্য রহমতস্বরূপ এ ধরায় আগত মায়াবী মহামানব রসুলুল্লাহ সা.।

সামনে কয়েকটি দিন বাদেই যে পবিত্র রমজান মাস। আমরাও ইবাদত আর একটি দিন রোজা রাখার মাধ্যমে শুরু করি পবিত্র সেই মাসটিকে সামনে রেখে ইবাদত-বন্দেগির প্রস্তুতি এবং চর্চাটির।

প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ সা. এর প্রতি দরুদ পাঠের নির্দেশনা -সংবলিত অসাধারণ আয়াতটি (সূরা ৩৩ আহজাব, আয়াত ৫৬) এ মাসেই অবতীর্ণ হয়। এ মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত ১৫ তারিখের রাতকে 'শবে বরাত' বা 'লাইলাতুল বরাত' বলা হয়ে থাকে। যা শুনে আসছি অনেকদিন থেকেই। একটু অর্থটি অনুভব করি।

'শবে বরাত' কথাটি ফারসি শব্দ থেকে এসেছে। 'শবে'মানে রাত আর 'বরাত' মানে মুক্তি, মুক্তির রাত। আর আরবি হলো 'লাইলাতুল বরাত' তথা মুক্তির রজনী। হাদিস শরিফে যাকে 'নিসফ মিন শাবান' বা শাবান মাসের মধ্য দিবসের রজনী বলা হয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশ, মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর অনেক দেশের ফারসি, উর্দু, বাংলা, হিন্দিসহ নানা ভাষাভাষী মানুষের কাছে এটি 'শবে বরাত' নামেই সমধিক পরিচিত।

এ 'শবে বরাত' নিয়ে অনেক ধরনের আলোচনা রয়েছে। পালন আর না পালন নিয়ে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় এ রাতটিই যে শুধুমাত্র মুক্তির একমাত্র রাত তা নয়। এ রকম প্রতিটি রাতই আসলে মুক্তির রাত। এরকম দিনগুলো আর রাতগুলো ইবাদত বন্দেগী করার নিমিত্তে যত বেশি বৃদ্ধি করা সম্ভব, ততই ভালো।

নামকরণ ব্যতিরেকেই হোক না তা। তাতেও ক্ষতি কি। ইবাদত আর পরিশুদ্ধতা কিছু হলেও তো অর্জিত হচ্ছে। সারারাত ঘুমের চাইতে এতো অবশ্যই উত্তম। কারণ এ রাত আর দিনগুলোর আনুষ্ঠানিক নিয়ম থাক আর নাইবা থাক সেটা বড় কথা নয়। চলমান অতীতের সুখ আর পবিত্রতার বন্ধনে আবদ্ধ হবার বহমানতার এ রাতে একজন মানুষ সর্বশক্তিমানকে ডেকে যদি নিজেকে একটুও ভালোর দিকে পরিবর্তন করতে পারেন অবশ্যই।

আর তা যদি অতীত থেকে পালন করে আসার ফলেই হয়ে থাকে। তবে সেটা পালনে লাভ ছাড়া ক্ষতিতো নেই। হয়তোবা যে ঘটা করে হালুয়া-রুটিতে ব্যস্ত হয়ে যাওয়া হয় সে বিষয়গুলো একটি দূর করেই। অন্যভাবে দান বৃদ্ধির মাধ্যমেও তো হতে পারে এর পালন।

কারণ দরিদ্র এবং যাদের প্রয়োজন রয়েছে তাদেরকে দান ও খাওয়ানোতে তো মহান রাব্বুল আলামিন খুশীই হন, সর্ব সময়। মানুষ যত বেশী ইবাদত আর অন্যায় কাজ থেকে দূরে থাকার রাত আর দিনের সন্ধান পাবে ততই তারা অন্যায় কাজগুলো ভুলে থাকতে পারবে।

এ রকম রাত আর দিনগুলোতে ব্যস্ত হয়ে পড়বে ইবাদত আর ভাল কাজের জন্য। আর দানের ব্যাপারে যত্নশীল হয়ে চর্চা করতে পারবে দরিদ্র কষ্ট, নয়কি তা?

এ দিনেই বাবা-মা আত্মীয় স্বজনের কবরস্থানে তারা অতিবাহিত করবে একটু হলেও মূল্যবান সময়। ভাববে একটু মৃত্যুর কথা। অন্তত একবার হলেও। হয়তো তা ভেবেই ফিরে আসতে সক্ষম হবে সঠিক পথে। কারণ তখন সে মনে করবে সেই দোয়া যা মহানবী সা. পাঠ করতেন কবরের সামনে। আর তা হলো-'হে কবরবাসী মুমিন ও মুসলিমগন, আপনাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, আমরাও ইনশাআল্লাহ আপনাদের সাথে মিলিত হবো। আমরা আল্লাহর কাছে আমাদের ও আপনাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি' (মুসলিম শরিফের হাদিস)।

আল্লাহর প্রতি ইশক বা মহাব্বতের টানে এ দোয়াটির কথা শুনলেই মনে হয় 'এ কোন প্রেম?' তখনই মনে পড়ে অসম্ভব সুন্দরের সাথে অন্তিম মিলনের উচ্ছসিত বাসনার একটি মাঝপথ হলো কবরবাসীর সাথে মিলন।

সে 'আলমে বরযাখ' অর্থাৎ কবরে থাকার সময়টি। উপরের ওই দোয়া এ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ নবী করিম সা. আমাদের করতে বলেছেন, তার গভীরতা অনেক। এর চাইতে সৌভাগ্য আর কিইবা হতে পারে আমাদের। যেখানে আমরা মৃত্যুর কথা ভেবে নিজেদের পরিশুদ্ধ করার সুযোগ পাচ্ছি।

যার চর্চা অনেকেই করেন জুম্মার দিনেও। এদিনেও অনেকে যান আপনজন আর নিকটাত্মীয়ের কবরে। এখানে মৃত্যুর কথাই স্মরণ করাটাই গুরুত্ববাহী। যা উপলব্ধিগত তাড়নায় হৃদয়ে অন্তর্ভুক্তির আবেদন সৃষ্টি করে।

এ রাতে মানুষ নফল ইবাদতে মেতে উঠে। উঠুক না মেতে মানুষগুলো অনবরত এ রকম ইবাদতে, অন্যায় থেকে দূরে থাকার বাসনায় মশগুল হয়ে, আর এরকম আরো দিন আর রাত আবিষ্কার করে। হোক'না এরকম অগনিত রাতের সমাহার যেখানে চাইবে মানুষ প্রাণ খুলে ওই সর্বোচ্চ সুমহান শক্তির কাছে যা তার চাওয়া। ক্ষমাই প্রার্থনা করুক না মনের মাধুরী দিয়ে।

উচ্চারিত হোক 'ক্ষমা করো হে সর্বময় ক্ষমতাধর এ অধমে, আর হবে না অন্যায়ের পূনরাবৃত্তি কোনদিন'। অগণিত এ রকম রাতে নির্ভর করতে শিখুক মানুষ নিজ কষ্ট ভুলতে সেই মহামহিমের উপর। যিনি কষ্ট দূর করেন।

আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ সাধন নৈতিক ভিত্তি তৈরির একটি সোপান। মানুষ প্রতি রাতকেই ভাবুক না পূণ্যময় আর মহিমান্বিত। ওই যে মধ্যরাতের তাহাজ্জুদের নামায। কি পূর্ণতাই না দেয় তা, উপলব্ধি ব্যতীত বলে বুঝানো সম্ভব নয় যা।

তাই এ রাতেও হোকনা সেই ইবাদতটিও, রাত জাগা ইবাদতগুলোর ধারাবাহিকতায়। জেগে যখন থাকবোই তবে মন দেই একটু সেদিকে। পরের দিনটিতো ছুটিরই দিন, সময় অফুরন্ত বিশ্রামের।

কত দিবসই না পালিত হচ্ছে পৃথিবীতে। একের পর এক ওগুলো বেড়েই চলেছে প্রায় প্রতিদিন। তাহলে এরকম পবিত্র আর পরিচ্ছন্ন ইবাদত-বন্দেগীর দিনগুলোর বৃদ্ধিকরণে আমরা শুধু রাত কেন, বিভিন্ন দিনকেও পালন করি সৎকর্ম সম্পাদনের অঙ্গীকারে। নামে হোক আর নামবিহীন।

এভাবে আমরা সুন্দর আর পবিত্র এ রকম দিবসগুলোর সংখ্যা বৃদ্ধি করি না কেন, একের পর এক। যেখানে মানুষগুলো অনবরত মেতে উঠার সুযোগ পাবে সেই সর্বোচ্চ সুন্দরের কাছাকাছি পৌঁছানোর প্রেরণায়, আর নৈকট্য লাভের আশায়।

আল্লাহ তো প্রতিটি সময়েই থাকেন তার প্রিয় 'সৃষ্টির সেরা জীব' সেই 'আশরাফুল মাখলুকাত' অর্থাৎ মানুষের জন্য রহমতের ডালি নিয়ে। মানুষকে নিতে জানতে হবে সে ডালি থেকে উপহার অর্জনের। প্রতি রাতের মত এ রাতেও তাই ভাবা হয় আল্লাহ রহমতের ভাণ্ডার নিয়ে আরোহণ করেন প্রথম আসমানে।

শেষ রাতে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ সুবহানুআতালাহ পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করে আহবান করেন- 'কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছো কি? আমি ক্ষমা করবো; কোনো রিজিক প্রার্থী আছো কি? আমি রিজিক দেবো; আছো কি কোনো বিপদগ্রস্ত? আমি উদ্ধার করবো। এভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহতাআলাহ মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে আহবান করতে থাকেন (ইবনে মাজাহ ১৩৮৪)।

সত্যিকার অর্থে প্রতিটি দিবস আর রজনী মানুষ কাজে লাগাক ইবাদত, বন্দেগী আর ভালো কাজে। কারণ প্রতিরাত আর দিনের প্রতিটি মূহুর্তই তিনি কাছাকাছি হন আমাদের। কারণ আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন 'তিনি অবস্থান করেন আমাদের গ্রীবাস্থিত ধমনীর চাইতেও কাছে'।

তিনি বলেন 'মনে রেখো আল্লাহ মানুষ আর তার মনের অন্ত:স্থলে থাকেন'। আমরাই অন্যায় আর লোভের কর্মে লিপ্ত হয়ে দূরে সরে যাই তাঁর থেকে। রহমতের ভাণ্ডার থেকে নিতে শিখি না কিছুই। তাই প্রতিটি দিন প্রতিটি রাত আর প্রতিটি ক্ষণই যেন আমরা ডাকতে থাকি তাঁকে। পবিত্র কোরআনে তিনি বলছেন 'রাত বিশ্রামের আর দিন আলোময়' (২৭:৮৬, ৪০:৬১, ৭৯:২৯)।

আবার বলছেন 'রাতে উঠে বেশী মনোযোগ দেওয়া এবং বুঝবার (কোরআন) জন্য উত্তম, দিনের বেলায় দীর্ঘ সময় ধরে কাজে ব্যস্ত থাকো, তাই আল্লাহর নামে জিকির কর আর একাগ্রচিত্ত হও' (৭৩: ৬-৮)।

আরো বলছেন 'তোমাকে ঘুম দিয়েছি ক্লান্তি দূর করার জন্যে, রাতকে করেছি আবরণ এবং দিনকে করেছি জীবিকা অর্জনের সময়' (৭৮: ৯-১১)। আর বলছেন 'আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি শ্রম নির্ভর করেই' (৯০:৪)।

তাই আল্লাহর দেখানো পথেই আমারা সৎ পথের পথিক হই আর হই কর্মনিষ্ঠ ; সেই ইবাদতের ভেলায় ভেসে শক্তি আহরণের মাধ্যমে। কারণ মানুষকে সৎ কাজ সম্পাদনের নিমিত্তে শ্রম নির্ভর করেই গড়েছেন স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা।

আরবি ভাষার জ্ঞান প্রয়োগে ইংরেজি শেখার বিশেষ কোর্স ভতির্ জন্য ক্লিক করুন

তাই রাতে বিশ্রামও গ্রহণ করুক সে, আবার সেই রাতেই ইবাদতে মনোনিবেশ করা যায় বলে ইবাদতেও মনোযোগ দিক বিশ্রামের পাশাপাশি। মনে রাখতে হবে নফল ইবাদত যেন ফরজ আর ওয়াজিব কোন ইবাদতকে বিঘ্নিত না করে।

এভাবে প্রতিরাত আর প্রতিদিন সৎকাজ আর ইবাদতের মিলিত শক্তিতে মানুষ তার মনের পাটাতনে সৃষ্টি করুক পবিত্রতা আর সুন্দরের আলোকচ্ছটা। সকল মানব সহ সৃষ্টি জগতের সবকিছুর কল্যাণ সাধনে এগিয়ে যাই সবাই। সবার মাঝে দূরত্ব ঘুঁচিয়ে এটাই হোক আজ আমাদের শপথ।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতালা বলছেন 'তিনি তোমাকে দেখেছেন তুমি পথের সন্ধান করছো, তাই তিনি তোমাকে পথ দেখিয়েছেন (৯৩:৭)। তাই পথটি সন্ধান করি আমরা। সৎ চেষ্টা করলে নিশ্চয় আল্লাহ্‌ আমাদের সে পথের আলো দেখাবেন। এ আশাই রইলো আজ এ রাতের ইবাদতে, অন্যান্য সব রাত আর দিনের পাশে।

লেখক-প্রাবন্ধিক


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ