রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ ।। ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে দেওয়া হবে না : নেতানিয়াহু বিশ্ব অপরিণত নবজাতক দিবস ২০২৫: জীবন রক্ষায় সচেতনতার নতুন অঙ্গীকার মাওলানা ফজলুর রহমানের সিলেট আগমন উপলক্ষে ইস্তেকবাল প্রস্তুতি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বাস–ট্রাকের সংঘর্ষে নিহত ৪ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ইসিকে ইসলামী আন্দোলনের ১২টি প্রস্তাবনা অপরাধ কমাতে প্রয়োজন সঠিক ধর্মীয় শিক্ষা: ড. এম এ কাইয়ুম জমিয়তের সুধী সমাবেশ মঙ্গলবার, প্রধান অতিথি মাওলানা ফজলুর রহমান মারকাযু দিরাসাতিল ইকতিসাদিল ইসলামী পরিদর্শনে মুফতি তাকী উসমানীর সাহেবজাদা হাসিনার পতনের পেছনে আল্লাহর গজব দেখছেন কাদের সিদ্দিকী মধুপুর মাদরাসায় বুখারির দরস দিলেন মাওলানা ফজলুর রহমান

নানা ভোগান্তির শিকার ইসলামি টাওয়ারের নারী ক্রেতারা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সাঈয়েদা হাবিবা: সাবিহা ইসলাম, ছদ্মনাম। তিনি উত্তরা থেকে এসেছেন বাংলা বাজারের ইসলামি টাওয়ারে বই কিনতে। সাথে এসেছেন তার বয়স্ক মা। নিজের ক্লাসের কিছু কিতাব কিনবেন। সেই সঙ্গে কিনবেন কিছু ইসলামি বই। কিন্তু প্রায় সব প্রকাশনীর সামনেই পুরুষদের ভীড়। দু-একটা প্রকাশনীর সামনে তারা দাঁড়াতেই পারলেন না। আর দু-একটা প্রকশনির সামনে দাঁড়ালেও কেউ তাদের দিকে খুব একটা ভ্রুক্ষেপ করলো না। একজন নারী ক্রেতা বাজারে এসেছেন। তিনি আর কয়টা বই-ই কিনবেন বিক্রেতাদের ভাবটা অনেকটা এমন। এছাড়াও আরো কয়েকজন নারী বই ক্রেতা জানান, ইসলামি টাওয়ারে বই কিনতে গেলে বিক্রেতারা খুব একটা গুরুত্ব দেন না।

কওমি মাদ্রাসার সবয়েচে বড় শিক্ষা বোর্ড বেফাকের ২০২২ সালের ফলাফল প্রকাশ পাওয়ার দেখা যায়, ৪৫ তম ব্যাচের পরীক্ষার অংশ নিয়েছেন ৭৩, ৫২১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে বালক ৪৫, ৬১৩ জন। আর বালিকা ২৭, ৯০৮ জন। এই বড় সংখ্যক ধর্মীয় নারী শিক্ষার্থীদের স্বাচ্ছন্দে বই কেনার কোনো জায়গা নেই বললেনই চলে। বেশিরভাগ সময়ই নারীদের বই বড় ভাই, বাবা ও অন্য কোনো অভিভাবকই কিনে দেন। কিন্তু অনেকে প্রয়োজনে অথবা বই কেনার আনন্দ নিতে বের হলেই পড়েন ভোগান্তিতে।

যাত্রবাড়ির একটি মাদ্রসার শিক্ষার্থী রাফিয়া ইসলাম বলেন, ইসলামি টাওয়ারে বই কিনতে আসলে যতটা ভোগান্তিতে পড়ি এতোটা ভোগান্তিতে আর কোথাও গিয়ে পড়তে হয় না। নিউ-মার্কেট, বসুন্ধরা মার্কেট ও যমুনা ফিউচার যেখানেই যাই না কেন সব জায়গাতেই নারীদের আলাদা ওয়াশরুম আছে। নামাজের জন্য সুন্দর আলাদা স্থান আছে। যদিও এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সাথে ইসলামের সম্পর্ক নেই বলেই আমরা জানি। তবে ইসলামি টাওয়ারে সব ইসলামি বই তথা মাদ্রাসার সিলেবাসের বই-ই বেশি বিক্রি হয়। কিন্তু এখানে নারীদের নামাজের কোনো ব্যবস্থা নেই। নারীদের নামাজের ব্যবস্থা তো অনেক পরের কথা। ছেলেদেরই তো ভালো নামাজের স্থান নেই।

অন্যএক মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আলেয়া। তিনি বলেন, ওমর একুশে বই মেলায় গিয়ে বই কিনতে যতটা স্বাচ্ছন্দ বোধ করি ইসলামি টাওয়ারে বই কিনতে এসে ঠিক এতো স্বাচ্ছন্দ বোধ করি না। আমাদের আসলে বই কেনার কোনো জায়গা নেই বললেই চলে। আধুনিক অনেক সপ আছে যেখানে বিক্রেতারা নারী। কিন্তু ইসলামি বই বিক্রির জন্য এমন কোনো লাইব্রেরি এখনো নেই বাংলাদেশে।

নারীদের ভোগান্তির বিষয়ে কথা হয় ইসলামি টাওয়ারের কায়েকজন প্রকাশকের সাথে। তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নারী ক্রেতারা ভোগান্তির শিকার হন এটা সত্য। এ ক্ষেত্রে আসলে আমাদেরও কিছু করার নেই। নারীদের যেসব সুযোগ সুবিধা থাকার কথা ইসলামি টাওয়ারে তার কোনো সুবিধাই নেই।

অন্য আরো একজন বলেন, নারীদের বিষয় তো অনেক পরের কথা। ইসলামি টাওয়ারের প্রকাশকদের বেশির ভাগই হচ্ছে আলেম। তারপরও একটি নামাজের স্থান নেই। এর থেকে লজ্জার আর কি আছে? এ বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেক বার মালিক পক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না।

অন্য আরো একজন প্রকাশক বলেন, নারীদের ওয়াশরুম থাকার বিষয়টি অনেক দূরের কথা। পুরুষদেরই পর্যাপ্ত ওয়াশরুম নেই। অজুর স্থান নেই। এ সব বিষয়ে দোকান মালিকরা টাওয়ারের মালিক পক্ষকে বারবার অবহিত করার পরও কোনো লাভ হচ্ছে না।

ইসলামি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আলেমরা হচ্ছেন আমাদের সমাজের মডেল। সুতরাং আলেমদের প্রকাশনীগুলো যেখানে বেশি সেখানে অবশ্যই নারীদের সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা থাকা উচিত। এ ছাড়া নারী ক্রেতাদের সুযোগ-সুবিধা থাকলে তারা বেশি বেশি যাবেন। বই কিনবেন। এটা তো সবার জন্যই ভালো।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ