মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪ ।। ৩১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৬ জিলকদ ১৪৪৫


মেয়েদের শিক্ষা ই'স্যুতে তালে*বান প্রধানকে মুফতি তাকি উসমানির চিঠি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।।কাউসার লাবীব।।

আফগানিস্তানে মেয়েদের শিক্ষা বিষয়ে মুসলিম বিশ্বের অন্যতম ইসলামিক স্কলার জাস্টিজ আল্লামা মুফতি তাকি উসমানি তালেবান প্রধান মোল্লা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।

তালেবান নেতাকে মুফতি তাকি উসমানির পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে মেয়েদের শিক্ষার বিষয়টি শত্রুদের পোপাগান্ডার উৎসে পরিণত হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ইসলামি আমিরাতের উদার চিন্তাচেতনা এবং বিজ্ঞ পদক্ষেপ প্রশংসার দাবিদার। তবে আমাদের মত হলো, শরিয়ার সীমার মধ্যে থেকে মেয়েদের শিক্ষা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

মুফতি তাকী উসমানী বলেন, শিক্ষিত নারী দেশ ও সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন। ‘ইসলাম বা ইসলামী আমিরাত নারী শিক্ষার বিরোধী’ এটা ভুল ধারণা। সূত্র: জিও নিউজ

আওয়ার ইসলাম পাঠকের জন্য পুরো চিঠির অনুবাদ নিচে দেয়া হলো। চিঠিটির অনুবাদ করেছেন মুহাম্মাদ মুহিউদ্দীন মাযহারী।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
মুহতারাম জনাব মোল্লা হাইবাতুল্লাহ সাহেব, আমিরুল মুমিনিন, ইসলামি ইমারাত, আফগানিস্তান।

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।

আমরা পাকিস্তানের মুসলিমগণ দোয়া করি, যেমনিভাবে আল্লাহ তাআলা আপনাদেরকে সারা দুনিয়ার বিভিন্ন দেশের সৈনিকদের মুকাবালায় ‘ফাতহে মুবিন’ (সুস্পষ্ট বিজয়) দান করেছেন, তেমনিভাবে আফগানিস্তানকে একটি দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী কল্যাণময় ইসলামী রাষ্ট্র বানানোর তৌফিক দান করুন এবং এই পথের সকল বাধা-বিপত্তি দূর করে দিন। আমিন।

ইতিপূর্বে আপনার পক্ষ থেকে কয়েকটি পত্র এই অধম বান্দার নিকট পৌঁছেছে। আমি অন্তরের অন্তরস্থল থেকে আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমি আমার সামর্থ্য অনুযায়ী ইসলামী ইমারাতের খেদমতকে নিজের সৌভাগ্য মনে করি।

افغانستان میں لڑکیوں کی تعلیم کے معاملے پر مفتی تقی عثمانی کا طالبان سربراہ کو مراسلہ

এই মুহূর্তে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মেয়েদের শিক্ষাসংক্রান্ত; যেটিকে শত্রুরা ইসলামী ইমারাতের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডার মাধ্যম বানিয়ে নিয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ ইসলামি ইমারাত এখনো পর্যন্ত যে দিল প্রশস্তকারী ও প্রজ্ঞাময় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, আমরা এগুলোর কদর করি। কিন্তু আমাদের রায় হলো এই যে, শরীয়তের সীমার মধ্যে থেকে নারীদের শিক্ষার উপযুক্ত ব্যবস্থা করা খুবই জরুরি।

এর কারণ হচ্ছে-

প্রথমতঃ নারীদের বিভিন্ন বিষয়, যেমন চিকিৎসা, শিক্ষা এবং তাদের উপযুক্ত অন্যান্য কাজের জন্য শিক্ষিত নারী দেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি। যেন সমাজে পুরুষ ও নারীর মাঝে মেলামেশার ফেতনা শেষ হয়ে যায়।

দ্বিতীয়তঃ এই ভিত্তিহীন প্রভাব ও ধারণা খতম করা আবশ্যক যে, ইসলাম অথবা ইসলামি ইমারত নারীদের বিরুদ্ধে। অবশ্যই তাদের শিক্ষার এমন কোন ব্যবস্থাপনা করা জরুরি, যা ছেলেদের শিক্ষা থেকে পৃথক হবে। শোনা যায়, ছেলে এবং মেয়েদের পৃথক পৃথক শ্রেণীকক্ষের জন্য জায়গা পর্যাপ্ত নেই। কিন্তু এর সমাধান এটা হতে পারে যে, একই বিল্ডিং এ একসময় ছেলেদের ক্লাস হবে এবং অন্য সময় মেয়েদের ক্লাস হবে। অথবা একই বিল্ডিং এর এক অংশে ছেলেদের এবং অপর অংশে মেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থাপনা থাকবে। এই ধরনের আরও সমাধান পারস্পরিক মাশোয়ারার মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ সহজেই বের করা যেতে পারে।

বিরোধী প্রপাগান্ডাসমূহের কার্যকর প্রতিউত্তর প্রদানও গুরুত্বপূর্ণ মাকসুদসমূহের অন্তর্ভুক্ত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুনাফিকদেরকে হত্যা না করার কারণ এটি বর্ণনা করেছেন যে, এর দ্বারা শত্রুরা এই প্রপাগান্ডার সুযোগ পাবে যে, হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ সাথীদেরকে হত্যা করেন।

সুতরাং যতদূর পর্যন্ত, শরীয়তের সীমার মধ্যে থেকে দুশমনের প্রপাগান্ডার কার্যকর প্রতিউত্তর দেওয়া সম্ভব, তা অবশ্যই দেওয়া উচিত। আল্লাহ তাআলা আপনাকে ইসলামি ইমারাতের মজবুতি, উন্নতি ও কল্যাণের মাধ্যম বানান।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ