রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ ।। ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ।। ১১ জিলকদ ১৪৪৫


কর্নাটক হাইকোর্টের রায়ে যা বললেন বাংলাদেশের ইসলামী রাজনৈতিক নেতারা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জুলফিকার জাহিদ।।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার অধিকার চেয়ে কর্নাটকের মুসলিম ছাত্রীরা যে আবেদন করেছিলেন, সেই মামলাতে ভারতের কর্নাটক রাজ্যের হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করে বলেছে- মেয়েদের হিজাব পরা কখনোই ইসলাম ধর্মের অপরিহার্য অংশ নয়।

এ রায় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন দেশটির একাধিক রাজনীতিবিদ। কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দারুল উলূম দেওবন্দের মুহতামিম মাওলানা মুফতি আবুল কাসেম নোমানী ও জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা মাহমুদ মাদানি।

এ  সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের ইসলামী রাজনৈতিক দলের নেতারা। প্রতিবেশী দেশটির মুসলমানদের অধিকারের বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।

খেলাফত আন্দোলন প্রধান আমীরে শরীয়ত আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ড্রেস কোড মানার নামে মুসলিম শিক্ষার্থীদের অধিকার হিজাব নিষিদ্ধ করার অধিকার কারো নেই। পবিত্র কুরআনে বর্নিত হিজাবের বিরুদ্ধে রায় মুসলিম নারী শিক্ষার্থীদেরকে তাদের ধর্মীয় রীতি নীতি পালনে রাষ্ট্রীয় প্রতিবন্ধকতার শামিল। হিজাব নিষিদ্ধ হওয়ায় মুসলিম নারী শিক্ষার্থীরা তাদের নাগরিক অধিকার শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, ভারতীয় বিজেপি সরকার একের পর এক ইসলামি বিধি বিধান নিষিদ্ধ করে ভারতকে মুসলিম শুন্য করার পায়তারা করছে। এ রায় ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাজ্য ভারতীয় সংবিধান পরিপন্থী। ধর্ম বিদ্বেষমূলক এ অযৌক্তিক রায় বাতিল করার দাবি জানিয়ে তারা বলেন এ ধরনের রায় সে দেশে শান্তি বিনষ্ট করবে।

তিনি আরো বলেন, পুরুষ সহ শিক্ষার্থীদের যৌন লিপ্সা থেকে বাচতে পোশাকের শালীনতা বজায় রাখার বিধান জাপানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও রয়েছে। অবিলম্বে হিজাব বিরোধী রায় প্রত্যাহার করতে বিজেপি সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি কারার জন্য শান্তিকামি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান  তিনি।

এই রায় মুসলমানদের কলিজা আঘাত দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব শায়খুল হাদিস হাফেজ মাওলানা ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম।

তিনি বলেন,  পর্দা ও হিজাব ইসলামের ফরজ বিধান। মুসলমান কোরআন সুন্নাহ মোতাবেক জীবন যাপন করবে।এই রায় কোন মুসলমান মানবে না। এই রায়ের কারণে মুসলিম মেয়েদের উচ্চ শিক্ষাকে বাধাগ্রস্ত করবে।

তিনি আরো বলেন, ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিক নিজ নিজ ধর্ম পালন করার পূর্ণ অধিকার আছে। পর্দা মুসলমানদের একটি ফরজ বিধান। কর্নাটক হাইকোর্টের রায় সংবিধান পরিপন্থী। সংবিধান পরিপন্থী এই রায় প্রত্যাহার করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।

এদিকে হিজাব বিরোধী এই রায়েরর প্রতিবাদ করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের  ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ।

তিনি বলেন, কর্ণাটকের হাইকোর্টের হিজাব বিরোধী এ রায় ইসলাম বিরোধী। ইসলামী শরীয়তে একজন নারী প্রাপ্ত বয়স্ক হলে তার উপর পর্দার বিধান ফরজ করা হয়েছে। কোনো কোর্টের ক্ষমতা নেই আল্লাহর বিধানের বিপরীত রায় ঘোষণা করার। এ রায়ের মাধ্যমে মুসলমানদের অন্তরে চরম আঘাত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আদালতের হিজাব নিয়ে ঘোষিত রায় ভারতের সংবিধান বিরোধী। অবিলম্বে ইসলাম ও ভারতের সংবিধান বিরোধী এ রায় বাতিল করার জন্য ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের উচ্চ আদালতের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ