মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ৮ পৌষ ১৪৩২ ।। ৩ রজব ১৪৪৭

শিরোনাম :
নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা না বাড়লে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা চায় পুলিশ দল ব্যবস্থা নিলেও নির্বাচন করব: রুমিন ফারহানা হাসনাত আবদুল্লাহর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন দলীয় নেতাকর্মীরা ‘ভারত যদি বাংলাদেশে নজর দেয় - পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো জবাব দেবে’ নোয়াখালীর হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দু'পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৫ ২৫ ডিসেম্বরের পর লাগাতার কর্মসূচি: ইনকিলাব মঞ্চ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সরকার কাজ করছে : অর্থ উপদেষ্টা তারেক রহমানের আগমন ঘিরে ব্যানার-বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে রাজধানী আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলা বিচারিক আদালতে পাঠানোর আদেশ তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন ঘিরে অর্ধকোটির বেশি মানুষের উপস্থিতি হবে: রিজভী

মুসলিম নির্মূলের ডাক: গ্রেপ্তার করায় পুলিশকে অভিশাপ দিলেন ধর্মগুরু

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সহকর্মীকে আটক করায় হিন্দুত্ববাদী ধর্মগুরু যতি নরসিংহানন্দ অভিশাপ দিলেন পুলিশকে। বৃহস্পতিবার ভারতের উত্তরাখণ্ডে এ ঘটনা ঘটে।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, গাড়িতে বসে থাকা জিতেন্দ্র ত্যাগীকে গ্রেপ্তার করতে আসা পুলিশকে উদ্দেশ করে গুরু যতিকে চিৎকার করে বলতে দেখা যায়, ‘তোমরা সবাই মরবে... এমনকি তোমাদের সন্তানরাও!’

উত্তরপ্রদেশ শিয়া সেন্ট্রাল ওয়াক্ফ বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াসিম রিজভিকে ধর্মান্তর করিয়ে হিন্দু করেছেন নরসিংহানন্দ, নাম দিয়েছেন জিতেন্দ্র সিংহ নারায়ণ ত্যাগী।

ডিসেম্বরে হরিদ্বারে নরসিংহানন্দ যে ‘ধর্ম সংসদ’-এর আয়োজন করেছিলেন, সেখানে আরও অনেক বক্তার সঙ্গে জিতেন্দ্রও অন্য ধর্মের প্রতি ঘৃণায় ভরা নানা কথা বলেছিলেন। মাত্রা ছাড়িয়ে রক্তপাত ও খুন-জখমের জিগির তুলেছিলেন মূলত নরসিংহানন্দ এবং সাধ্বী অন্নপূর্ণা, কিন্তু ঘটনার পরে সুপ্রিম কোর্টের চাপে পড়ে জিতেন্দ্রের বিরুদ্ধেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বিজেপি সরকারের পুলিশ।

এফআইআরে নরসিংহানন্দ ও অন্নপূর্ণা-সহ জনা দশেকের নাম দেওয়া হলেও বাকিদের শুধু তদন্তে সহযোগিতা করার আরজি জানিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামীর প্রশাসন।

১৭ থেকে ১৯ ডিসেম্বর হরিদ্বারে ওই অনুষ্ঠানটি হওয়ার পর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে অনলাইনে। হিন্দুত্ববাদী বক্তাদের বক্তৃতায় অন্য ধর্মের প্রতি ঘৃণায় ভরা ও দাঙ্গার উসকানিমূলক নানা আস্ফালন শোনার পরে ভারতের নানা স্তরের মানুষ প্রতিবাদে সরব হন। এমনকি পাকিস্তান সরকার সে দেশের ভারতীয় দূতকে তলব করে নিন্দা জানায়। ভারতীয় মুসলিমদের রক্ষায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহ্বান করে।

ওই সময় রাজ্যের বিজেপি সরকার বিষয়টি নিয়ে গা করেনি। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে একটি মামলা গ্রহণ করে অসাংবিধানিক ও বেআইনি কার্যকলাপের পরে রাজ্য সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তার হলফনামা তলব করে। এর পরেই নড়ে বসে নরসিংহানন্দ, জিতেন্দ্র-সহ ১০ জনের নাম দিয়ে এফআইআর করে হরিদ্বার পুলিশ। জিতেন্দ্রের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরে বৃহস্পতিবার উত্তরাখণ্ডের রুরকি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের সময়ের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে, যেখানে নরসিংহানন্দকে পুরানের দুর্বাসা মুনির ভূমিকা নিয়ে পুলিশকে অভিশাপ দিতে দেখা যায়। পুলিশ গাড়িটি থামালে নরসিংহানন্দ তার সফরসঙ্গী জিতেন্দ্রকে গ্রেপ্তারে বাধা দেন।

নরসিংহানন্দ পুলিশকে বলেন, “ও তো একা কোনো কাজ করেনি। আমরা সবাই তার সঙ্গে ছিলাম। ও যা বলেছে, আমরাও সেই কথা বলেছি। তা হলে শুধু ওকে কেন তোমরা গ্রেপ্তার করবে?” উত্তরে গাড়ি থেকে নেমে এসে কাজে সহযোগিতার জন্য নরসিংহানন্দকে জোড় হাতে অনুনয়-বিনয় করতে দেখা যায় পুলিশকে। তারা বাধ্য হয়ে এই কাজ করছেন বলে জানান। সেই সময়েই উগ্র হয়ে উঠে শাপশাপান্ত করেন বিতর্কিত ধর্মগুরু। বলেন, “ও নতুন হিন্দু হয়েছে, সবার ওর পাশে থাকা উচিত। তা না করে...”

উত্তরাখণ্ডেও বিধানসভা নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে। তার আগে এমন একটি বিষয় নিয়ে খানিকটা হলেও বিপাকে মোদি সরকার। পুরোটা নয়, কারণ বিজেপির একটা বড় অংশের ধারণা— এই অবসরে হরিদ্বারের সেই ধর্ম-সভার বার্তা ‘ভক্ত’-দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে ভোটারদের মধ্যে ধর্মীয় মেরুকরণ তৈরি করবে। এর সুফল পেতে পারে বিজেপি। বিজেপির আইটি সেলের কর্মীরা তাই নিয়মিত এই সভার বক্তৃতামালা সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করে চলেছে।

এনটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ