শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
শিক্ষক ও বাবুর্চি নিয়োগ দেবে রাজধানীর আল্লামা শামসুল হক রহ.মাদরাসা উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার

এবার ‘হিজাব’ নিষিদ্ধ করলো রাজধানীর ‘সেন্ট গ্রেগরি স্কুল এন্ড কলেজ’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।।কাউসার লাবীব।।
বার্তা সম্পাদক

এবার রাজধানী ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের সেন্ট গ্রেগরি হাই স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষিকাদের জন্য হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির শ্রেণিকক্ষে এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হিজাব না পরতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে জানা যায়।

১৫ ডিসেম্বর (বুধবার) শিক্ষিকাদের এ নির্দেশনা দিয়ে নোটিশ জারি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ব্রাদার প্রদীপ প্লাসিড গোমেজ। তার স্বাক্ষরিত সেই নোটিশটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানায়। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করার জন্য আওয়ার ইসলামের কাছে একাধিক ইমেইল আসে।

[caption id="" align="aligncenter" width="474"] সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া প্রতিষ্ঠানটির হিজাব নিষিদ্ধের নোটিশ।[/caption]

ফাহিম আলম প্রান্ত নামে প্রতিষ্ঠানটির একজন প্রাক্তন ছাত্র তার ফেসবুক একাউন্টে লিখেন, One day I'll say to my next generation,‘আমাদের সময় একটা স্কুল ছিলো St. Gregory's High School.তারপরে ২০১২ থেকে একটা বস্তি থেকে লোক আসে। যে কিনা সিনিয়র ধর্ম স্যার এর ক্লাসে ঢুকে গালিগালাস করে।যারে কেউ দেখতে পারে না।যার জন্য কয়েকজন লেজেন্ডারি স্যারও স্কুল থেকে চলে যায়।এরপর তার পা চাটার জন্য কয়েকজন আসে।শেষ গ্রেগরীর লেগেসী।শেষ সব।’..... আর যাই-ই হোক কেউ এই স্কুলে এই শকুণ থাকাকালীন সময়ে কাউকে ভর্তি করাইয়েন না।

তাছলিম আহমেদ নামে এক সাবেক শিক্ষার্থী নোটিশটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘নোটিশটা সত্যি হলে দুর্ভাগ্যজনক - এমন গ্রেগরী হয়তো আমরা চাইনি।’

সাইমুর রহমান নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, আমাদের স্কুল আমাদের সম্প্রীতি শিখিয়েছে যা আমরা এখনও বুকে ধারণ করি। আমাদের স্কুল আমাদের সহাবস্থান শিখিয়েছে যা আমরা এখনও মেনে চলি। মানের অবক্ষয় মনের সান্ত্বনার প্রলেপে ঢেকে রাখার চেষ্টা করা যায় তবে মানসিকতার অবক্ষয় এত সহজে মেনে নেওয়া যায় কি?

মোসাদ্দেক সম্রাট মাওলা নামে একজন লিখেছেন, আমাদের পবিত্র স্কুল কোন ধর্ম বিদ্বেষী মানুষের পৈত্রিক সম্পত্তি নয় বরং এই স্কুল আমাদের প্রতিটি গ্রেগোরিয়ানদের। তাই এই স্কুলের সুনাম রক্ষা করা আমাদের প্রতিটি গ্রেগোরিয়ানদের পবিত্র দায়িত্ব।

এ বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটির অফিসিয়াল মুঠোফোন নাম্বারে একাধিকবার যোগ হয়। বারবার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া গেলেও একবার খোলা পাওয়া যায় এবং অপর প্রান্ত থেকে রিসিভ হয়। কিন্তু সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর কল কেটে দিয়ে আবারো মুঠোফোনটি বন্ধ করে দেয়া হয়।

পরবর্তী সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল এন্ড কলেজের অফিসিয়াল টেলিফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে একাধিক প্রচেষ্টার পর অধ্যক্ষ ব্রাদার প্রদীপ প্লাসিড গোমেজের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। বিষয়টি সম্পর্কে তার কাছ থেকে জানতে চাইলে সুনির্দিষ্ট কোনো মতামত পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল এন্ড কলেজ বাংলাদেশের ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে ১৮৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি ক্যাথলিক উচ্চ বিদ্যালয়। ১৮৮২ সালে আমেরিকান মিশনারিদের দ্বারা এই বিদ্যালয় এর জন্ম। ঢাকার নটরডেম কলেজ-এর জন্ম এই স্থানেই।

তবে ১৯৫৩ সালে এখানকার ক্যাম্পাস থেকে নটরডেমকে সরিয়ে মতিঝিলে স্থানান্তরিত করা হয় এবং একে সেন্ট গ্রেগরী উচ্চ বিদ্যালয় হতে আলাদা করে দেয়া হয়। ১৯১২ সালে সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত এখানে ছেলে ও মেয়ে এক সাথে পড়াশুনা করত। পরবর্তীতে এটি বয়েজ স্কুল এ পরিণত হয়। বাংলাদেশ স্কাউটের সূচনা হয় এখানেই ১৯১৪ সালে।

অপরদিকে ১৯২৩ সালে এই স্কুল এর মাধ্যমেই বাংলাদেশে বাস্কেটবল খেলার প্রচলন হয়। দেশ বিভাগের আগে সেন্ট গ্রেগরি উচ্চ বিদ্যালয়ে শুধু ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা হতো। পরে ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর এখানে বাংলা মিডিয়ামের পড়াশোনা শুরু করা হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এখানে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়া হয়। শুধু বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা চলতে থাকে। তবে ২০০৮ সালের দিকে আবার ইংরেজি ভার্সন চালু করা হয়। ২০১৬ সালে স্কুলটিকে কলেজে উন্নীত করা হয়।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ