আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মাত্র ১৩ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেছে মার্কিন কিশোরী ইফ কায়েরা। এত অল্প বয়সে তার ইসলাম গ্রহণে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে বহু মানুষের মনে। কিশোর বয়সে সে কিভাবে ইসলামের পথে এলো—এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমি সব সময় মুসলিমদের ব্যাপারে আগ্রহী ছিলাম।
বিশেষত মুসলিম দেশ ভ্রমণের পর আমার ভেতর কৌতূহল জাগে যে মুসলিম নারীরা কেন হিজাব পরিধান করে? বিষয়টি নিয়ে আমি গবেষণা করি এবং অধ্যয়ন অব্যাহত রাখি। এভাবে আমি ইসলাম সম্পর্কে যা জানতে পারি তা আমার হৃদয়কে মোহিত করে। আমি বিভিন্ন বিশেষ দিনে হিজাব পরিধান করতাম। এরপর মুসলিম বন্ধুদের কাছ থেকে ইসলাম সম্পর্কে আরো জানতে থাকলাম। এভাবে আমি ধীরে ধীরে ইসলামের পথে আসি।’
ইসলাম গ্রহণের আগে থেকেই কায়েরা হিজাব পরিধান করে। পশ্চিমা সমাজে বসবাস করলেও হিজাব পরিধানের ব্যাপারে তার মনে কোনো দ্বিধা নেই। কায়েরা বলে, ‘হিজাব পরিধানের অনুভূতি অবশ্যই ভিন্ন। তবে এটা ঠিক, আমি স্বেচ্ছায় হিজাব পরিধান করেছি। কারো পক্ষ থেকে কোনো ধরনের চাপ ছিল না। প্রকাশ্য চাপ তো ছিলই না। পরোক্ষ চাপও ছিল না।
যেমন বর্তমান সমাজে নারীদের মেকআপ করা, চুলে স্টাইল করার বিষয়ে পরোক্ষ সামাজিক চাপ থাকে। আমার ক্ষেত্রে তেমন কিছুই নেই। মূলত আমি নিজেকে নিয়েই ভাবতে ভালোবাসি, নিজেকে নিয়ে থাকতে ভালোবাসি। মানুষ আমাকে নিয়ে কী ভাবল এবং কিভাবে দেখল তা নিয়ে আমি চিন্তিত নই।’
কায়েরার ইসলাম বিষয়ে কৌতূহল, অধ্যয়ন ও ইসলাম গ্রহণ কোনো কিছুতেই বাধা দেননি তার মা-বাবা; বরং মেয়েকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। কায়েরার মা সায়েরা এ বিষয়ে বলেন, ‘মেয়ের জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত তথা মুসলিম হওয়ার ব্যাপারে বলব, আমরা সব সময় গুরুত্ব দিয়েছি সে যেন নিজের জীবনের পথ নিজে ঠিক করে নেয়। সে যখন আমাকে জানাল যে সে ইসলাম বিষয়ে অধ্যয়ন ও গবেষণা করছে, আমরা তাকে সমর্থন দিলাম। সে কোরআন পাঠ করত।’
আর কেনই বা দেবেন, যখন তিনি দেখছেন ইসলাম অনুশীলনের সঙ্গে সঙ্গে মেয়ের ভেতর ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে? সায়েরার ভাষ্য হলো, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আমরা তার ভেতর অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন ও অগ্রগতি দেখি। সে যখন নিজের পথে (ইসলাম) যাত্রা শুরু করল, আমরা তখনো তাকে সমর্থন দিই। তাকে সহযোগিতা করতে পেরে আমি আনন্দিত।’ মেয়ের দেখাদেখি মা সায়েরাও এখন কোরআন পড়তে শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে কোরআন পড়তে পারে। কিন্তু আমি এখনো পারি না। তবে চেষ্টা করছি।’
শিশু, কিশোর ও যুবকদের প্রতি কায়েরার আহ্বান হলো, আপনারা নিজেদের নিয়ে ভাবুন আপনি ঠিক আছেন কি না, আপনি যদি অন্য ধর্মের হয়ে থাকেন তবে চিন্তা করে দেখুন তা যথার্থ কি না? ইসলামে নারীর অবস্থান নিয়ে নানাজনের প্রশ্ন থাকলেও কায়েরা এ বিষয়ে নিঃসংকোচ। তার বিশ্বাস, ‘যারা ইসলামে নারীর অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলে তাদের চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আসবে। কেননা ইসলাম নারীদের যথাযথ মর্যাদা দিয়েছে। তাদের প্রতি অবিচার করেনি; বরং আমরা জানি খ্রিস্টধর্মসহ অন্যান্য ধর্মে নারীর প্রতি বৈষম্য রয়েছে। আপনি এমন কোনো অধিকারের কথা বলতে পারেন, যা ইসলাম নারীদের দেয়নি? ইসলাম নারীদের আত্মমর্যাদা ও ব্যক্তিগত সব অধিকার দিয়েছে।
ইসলাম সপ্তম খ্রিস্টাব্দে নারীকে সম্পদের মালিক হওয়ার অধিকার দিয়েছে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে নারী সে অধিকার লাভ করেছে ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে। তাও শুধু বিবাহিত নারীদের। যখন বিশ্বের অনেক জায়গায় নারীর শিক্ষা লাভের অধিকার ছিল না তখন একজন মুসলিম নারী বিশ্বের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে।’
কায়েরার প্রত্যাশা, মা সায়েরাও তার সহযাত্রী হবে ইসলামের আলোকদীপ্ত পথে—‘মাকে বলব, আপনি ইসলাম বিষয়ে অধ্যয়ন অব্যাহত রাখুন। ইসলামে জানার ও শেখার মতো বহু কিছু আছে। যদিও তার অনেক কিছু আমি এখনো জানি না। তাঁর ব্যাপারে আমার প্রত্যাশা হলো, তিনি নিজের ব্যাপারে অবশ্যই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। তিনি একদিন ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হবেন।’ সূত্র: ফেসবুক পেইজ ‘দ্য ফাস্টেট গ্রয়িং রিলিজিয়নে’ প্রচারিত ‘গেইন পিস ডটকম’-এর ভিডিও সাক্ষাৎকার
-এটি
 
                              
                           
                              
                           
                         
                              
                           
                        
                                                 
                      
                                                  
                                               
                                                  
                                               
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                        