আবদুল্লাহ তামিম।। হাসি হচ্ছে মানুষের আবেগের বহিঃপ্রকাশ। ভালো লাগা, খুশি, আনন্দ আর কোনো অর্জনের পর আমাদের মনে যে আবেগের সঞ্চার হয়, সেটা ফুটে ওঠে হাসির মধ্য দিয়ে।
আবেগের কারণে মস্তিষ্কের ভেন্ট্রোমিডিয়াল প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স উদ্দীপ্ত হয়, এর ফলে ‘এন্ডোরফিন’ নামক রাসায়নিক বস্তুর নিঃসরণ ঘটে, তাই আমরা হাসি। আবার অন্যভাবে ব্যাখ্যা দিলে আবেগের কারণে আমাদের মাংসপেশির সঞ্চালনায় হাসির উদ্রেক ঘটে, তখন মস্তিষ্কে এন্ডোরফিন নিঃসরণ হয়।
কিন্তু হাসিটা কেমন হবে? রাসুল সা. কেমন করে হাসতেন। আমরা জানি তিনি সবসময় মুচকি হাসতেন। অট্টহাসি তিনি পছন্দ করতেন না। চলুন এ বিষয়ে দেওবন্দের একটি ফতোয়া জেনে নেই।
ঐতিহাসিক বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম দেওবন্দের অনলাইন ফতোয়া বিভাগে এক ভাই প্রশ্ন করেছেন, অট্ট হাসি বা বেশি হাসলে কী হয়?
এ প্রশ্নের জবাবে দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে বলা হয়, বেশি হাসা মাকরুহ, বা অট্ট হাসি দেওয়াও মাকরুহ। এর দ্বারা অন্তর মরে যায়।
দলিল হিসেবে দারুল উলুম দেওবন্দ বুখারি শরীফের টিকার একটি বাক্য উপস্থাপন করে,
وأما المکروہ من الضحک فہو الإکثار من الضحک فإنہ یمیت القلب وذلک ہو مذموم (حاشیة بخاری: ۹۰۰/۲، اتحاد دیوبند)۔
তিরমিজির হাদিসে আছে প্রিয়নবী সা. বলেন, ‘তোমার ভাইয়ের মুখে (সাক্ষাতে) মুচকি হাসি নিয়ে আসাও একটি সদকা। (তিরমিজি, হাদিস নং: ১৯৫৬)
মানুষের মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে হাসি গুরুত্বপূর্ণ এক ভূমিকা রাখে। হাসিই মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ককে সহজ করে দেয়। আন্তরিক হাসির অধিকারী একজন মানুষ বিপুল কিছু জয় করে নিতে পারে।
রাসূল (সা.) সর্বদা হাসিমুখে থাকতেন। তাকে কখনোই কেউ অকারণে মুখ গোমড়া করে থাকতে দেখেননি। হাসি সম্পর্কে রাসূল সা. এর পাঁচটি হাদীস এখানে উল্লেখ করা হলো।
১. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে হারিস রা. থেকে বর্ণিত, “আমি এমন কাউকেই দেখিনি যিনি রাসূল (সা.) এর থেকে অধিক হাসিমুখে থাকতেন।” (তিরমিযি)
২. হযরত জরীর ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, “আমার ইসলাম গ্রহণের পর আল্লাহর রাসূল (সা.) তার সাথে সাক্ষাতের জন্য আমার অনুমতিকে কখনোই প্রত্যাখ্যান করেননি এবং কখনোই হাসি ছাড়া আমার সাথে দেখা করেননি।” (মুসলিম)
৩. হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন, “তোমার সম্পদ দিয়ে কখনোই তুমি লোকদের সন্তুষ্ট করতে পারবেনা বরং তোমার প্রফুল্ল চেহারা ও উত্তম চরিত্রের মাধ্যমেই তুমি তাদের সন্তুষ্ট করতে পারবে।” (আল-হাকীম)
৪. হযরত আবু জর রা. বলেন, রাসূল সা. বলেছেন, “কোনো উত্তম কাজকেই অবহেলা করোনা (যত ছোটই হোক না কেন) যদি তা তোমার ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাতও হয়।” (মুসলিম)
৫. হযজর আবু জর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন, “তোমার ভাইয়ের প্রতি তোমার হাসিও তোমার জন্য সাদকা।” (তিরমিজি)
-এটি
 
                              
                           
                              
                           
                         
                              
                           
                        
                                                 
                     
 
                                                  
                                               
                                                  
                                               
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                        