শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


নিউজরুমের ডায়েরি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হুমায়ুন আইয়ুব ।।

বৃহস্পতিবার। দুপুর গড়িয়ে বিকেল। রোদ নরম হয়ে আসছে। অনেকটা অলস মনে আছি। মুঠোফোনে কথা হচ্ছে মুফতি হিফজুর রহমানের সঙ্গে। কুশল বিনিময় কিংবা সৌজন্যই এই আলাপ-ফোন। বহুমাত্রিক প্রতিভা মুফতি হিফজুর রহমান মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়ার প্রধান মুফতি ও সিনিয়ির মুহাদ্দিস। প্রজ্ঞাশাসিত এই আলেম ফিকহে হানাফির বরেণ্য গবেষক। শতাব্দীর বরিত মনীষাও বলা যায়। ফোনে আওয়ার ইসলামের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বললেন, আমি অনলাইন খুব একটা বুঝি না। পত্রিকাও পড়ি কম! তবে একজন ছাত্রের মাধ্যমে আমার কম্পিউটারে আওয়ার ইসলাম সেইভ করে রেখেছি। দিনের শুরু কিংবা শেষে নিয়ম করে আওয়ার ইসলাম পড়ি। আমাদের সংবাদ, পরামর্শ বা মুসলিম বিশ্বের খবরাখবর আমাকে বেশ মুগ্ধ করে।

ফোনের ওপার থেকে কথাগুলো বলছিলেন মুফতি হিফজুর রহমান। আমি জি জি বলে যাচ্ছি।

আবারও শক্তকণ্ঠে বললেন- মাওলানা! ও মাওলানা! আপনার জন্য দোয়া করি। খুব দোয়া করি আওয়ার ইসলামে কর্তব্যরতদের জন্যও! আপনারা মিডিয়ার লাইনে-ফরজে কেফায়ার কাজটি করে যাচ্ছেন।

আমি মানুষটির কথায় বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে গেলাম। ফিরে গেলাম অতীতে। দূর অতীতে। বললাম-হুজুর আমার রাহমানিয়ার জীবনে মাওলানা নোমান সাহেব (জামিয়া রাহমানিয়ার সাবেক সিনিয়র মুহাদ্দিস) ও আপনার উৎসাহ উদ্দীপনায় বেশ শক্তি পাই। চরম প্রতিকূল মুহূর্তেও আপনাদের দেওয়া সাহস পুঁজি করে বিশাল গাঙ সাঁতরে যাই।

দুই
শায়েখ আব্দুর রাযযাক আল হুসাইনী! আমার উস্তাদ ও শেখ জনুরুদ্দিন রহ. দারুল কুরআন চৌধুরীপাড়া মাদরাসার সাবেক প্রধান মুফতি ও সিনিয়র মুহাদ্দিস। হালে মিরপুরের ১৩ নম্বর জামিয়া আরাবিয়া খাদেমুল ইসলামের শায়খুল হাদিস। গতকাল শুক্রবার তাঁর গোড়ানের বাসায় যাই একটি অডিও রেকর্ডের জন্য। শায়খুল কুরআন আল্লামা কারী বেলায়েত হুসাইন রহ.-এর স্মারকে যাবে শায়খের স্মৃতিটি। বরাবরের মতো স্মৃতিকাতর এই মানুষটি মাথা নাড়িয়ে, হাত উঁচিয়ে হেলেদুলে কথা বলা শুরু করলেন। আবেগঘন মনে রেকর্ড দিলেন। শায়খের গ্রামের বাড়ি রংপুর থেকে আনা মাছ, মুরগি, লাউ আর নিজের ক্ষেতের চাল দিয়ে রাতের খাবার খেলাম। শায়খের শিশুসুলভ হাসি, পুরোনো গল্প ও ছেলে মাহমুদের তেলাওয়াত, গজল বেশ উপভোগ করলাম! বিদায় বেলায় টুপি খুলে মাথা পেতে দিয়েছি শায়খের খাস দোয়ার জন্য।

তিন
গোড়ান থেকে ফিরছি। রাত দশটা। প্রিয় যানবাহন রিকশায়। সঙ্গে স্নেহের সাংবাদিক কাউসার লাবীব। ফোনে কথা হচ্ছে মাওলানা হেমায়েত উদ্দিনের সঙ্গে। মাওলানা হেমায়েত উদ্দিন-আহকামে জিন্দেগীর লেখক নামে খ্যাত। বাজারে আছে আহকামুন নিসা, বয়ান ও খুতবাসহ বেশ কিছু মুসলিম উম্মাহর প্রয়োজনীয় গ্রন্থ। সাম্প্রতিক ‘আল-কুরআনুল কারিম’ বাজারে এনে আগামী প্রজন্মের হাতে কুরআনের সেরা মাসহাফ তুলে দিয়েছেন। যাত্রাবাড়ী বড় মাদরাসায় ছাত্রদের প্রাণ ভোমরা তিনি। আলাপে হঠাৎ বললেন-মাওলানা আপনাকে একটি ধন্যবাদ দিতে ভুলে গেছি। আমি কিছুটা মন্থর; স্থির । বললাম- কোনটা?

তিনি বললেন, গত কয়েক দিন আওয়ার ইসলামে শিক্ষার্থীদের নিয়ে নানা মতামত বিশ্লেষণ পরামর্শ প্রকাশ পাচ্ছে। মতামত বিশ্লেষণ পরামর্শ গুরুত্বপূর্ণ তো বটেই। তবে আমার চোখে ভিন্ন একটি বিষয় ভালো লেগেছে। সেটি হচ্ছে- যাদের মতামত সাক্ষাৎকার ও পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে-তারা। এমন সব ব্যক্তিকে উপস্থাপন করছেন যারা স্রোতের বাইরেও গুরুত্বপূর্ণ। তারা বড়। মান্যবর ও বরেণ্য। শুকরিয়া জানিয়ে ফোন শেষ করলাম।

পুনশ্চ: সম্প্রতি আওয়ার ইসলামে ধারাবাহিক প্রকাশিত হচ্ছে শিক্ষা পরামর্শ। নতুন শিক্ষাবছর উপলক্ষে নানা মতামত। সেখানে জায়গা পাচ্ছেন দেশের কিছু নীরব সাধক। ফরিদাবাদ মাদরাসার মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস, জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়ার মুহতামিম মাওলানা মাহমুদুল হাসান, সিনিয়র মুহাদ্দিস ও লেখক মাওলানা আ ব ম সাইফুল ইসলাম, মুফতি মনসুরুল হক, মাওলানা হেমায়েত উদ্দিন, মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ, মালিবাগের মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম প্রমুখের মতামত।

লেখক: সম্পাদক, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম
সময়: শনিবার, ২২ জৈষ্ঠ ১৪২৮

-এটি

আরো পড়ুন- নিউজরুমের ডায়েরি: ২


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ