মুফতি কামরুজ্জামান।।
সুরা নাযিয়াত ত্রিশ নাম্বার পারার দ্বিতীয় সুরা। এ সুরায় মহান আল্লাহ তা’য়ালা কয়েকটি বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। প্রথমে কিয়ামতের ভয়াবহতার বর্ণনা ও কাফের মুশরিক কর্তৃক কিয়ামত ও পুনরুত্থান অস্বীকারের বর্ণনা দিয়েছেন। অতপর মুছা আ. ও খোদাদ্রোহী ফিরআউনের বর্ণনা দিয়ে মহান আল্লাহ তা’য়ালার কালেমার দাওয়াত ও ইসলাম প্রচারের পরিপ্রেক্ষিতে মক্কার মুশরিকদের পক্ষ থেকে বাধা ও জুলুমের ব্যাপারে নবী করীম সা. কে সান্তনা প্রদান করেছেন। সুরার শুরুতেই মহান আল্লাহ তা’য়ালা ফেরেস্তাদের পাঁচটি শ্রেণীর কসম করেছেন। এ কসমের পরে বিভিষিকাময় কিয়ামতের বর্ণনা দিয়েছেন। মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন “কসম তাদের যারা খুব নির্মমভাবে (খোদাদ্রোহী কাফের মুশরিক ও পাপিদের ) রুহ বের করে আনে” সুরা নাযিয়াত -১
“কসম তাদের যারা খুব কোমলভাবে (নেককার মুমিনদের) রুহ বের করে আনে। সুরা নাযিয়াত-২
ইবনে আব্বাস রা. বলেন, মুমিনদের রুহ কবজের সাদৃশ্য প্রদান করা হয়েছে উটের পায়ের থেকে রশি খোলার মত। উটের পায়ের রশি খোলা হলে সে যেমন আনন্দপায় ঠিক তেমনি নেককারের রুহ কবজের পূর্বে জান্নাতকে তার সামনে পেশ করা হয় এবং সে যখন জন্নাতের নেয়ামত সমূহ দেখতে থাকে এবং ভিতর থেকে তাকে তার দিকে আহ্বান করতে থাকে এবং সেদিকে যাওয়ার জন্য সে উদগ্রীব হয়ে উঠে আর এদিকে রুহ কবজ হয়ে যায়।
“কসম তাদের যারা সাতার কাটার ন্যায় রুহ নিয়ে বাধা ছাড়া উর্ধ্বআকাশে ছুটে” সুরা নাযিয়াত-৩
“কসম তাদের যারা রুহ সম্পর্কে আল্লাহর হুকুম পালনার্থে দ্রতগতিতে ছুটে” সুরা নাযিয়াত-৪
অর্থাৎ মৃত্যুর ফেরেশতাদের সর্বশেষ কাজ এই যে, যে আত্মাকে আরাম দেওয়ার আদেশ হয় তারা তার জন্য আরামের ব্যবস্থা করে এবং যাকে আযাব ও কষ্টে রাখার আদেশ হয় তারা তার জন্য আযাব ও কষ্টের ব্যবস্থা করে।
এ বিষয়গুলোতে কসম করে মহান আল্লাহ তা’য়ালা কিয়ামতের ভয়াবহতা চিত্রিত করেছেন। মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন “সেদিন প্রচন্ড কম্পনে গোটা জগত প্রকম্পিত হবে”। “তারপরেই হবে প্রচন্ড ফুৎকার”। সেদিন কিয়ামতের ভয়াবহতায় ( মানুষের ) অন্তর সমুহ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে যাবে। “চক্ষুসমুহ হবে অবনত”। সুরা নাযিয়াত-৬,৭,৮
মহান আল্লাহ তা’য়ালা কাফের মুশরিক কর্তৃক কিয়ামত ও পুনরুত্থানকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপের কথা উল্লেখ করেছেন। মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন “তারা বলে আমাদের সবকিছু পচে গলে নষ্ট হয়ে যাবে, হাড্ডিগুলো চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে তখন কি আমরা আবার পূর্বের অবস্থায় পূনরুত্থিত হবো ? “তারা বলে তাহলে এটা তো হবে সর্বনাশা প্রত্যাবর্তন। অর্থাৎ তাহলে আমরা বোধহয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবো। সুরা নাযিয়াত-১০,১২
তারা এ কথাগুলো ঠাট্টা-বিদ্রপ করে বলে। মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন “পরক্ষণই সেটা হবে প্রচন্ড বিকট আওয়াজ”যা হযরত ইসরাফিল আ. আল্লাহর হুকুমে পুনরুত্থানের জন্য শিঙ্গায় ফুক দিবেন। সুরা নাযিয়াত-১৩
“তারপর তারা উপনিত হবে সমতল এক ময়দানে” সুরা নাযিয়াত-১৪
কিয়ামতের মহা প্রলয়ের পরে পৃথিবীতে উচু নিচু কোন পাহাড় বা টিলা থাকবে না। গোটা জমিন সমতল ময়দানে পরিনত হবে। এরপর মহান আল্লাহ তা’য়ালা মুছা ও হারুন আ. এবং তাদের সাথে ফিরআউনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কথা স্বরণ করিয়ে দিয়ে নবীজীকে শান্তনা প্রদান করেছেন। মক্কার মুশরিকরা নবীজীকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে কষ্ট দিয়েছে। এমনকি নবীজীর ব্যক্তিগত ইবাদত নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে তারা বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একবার রাসুল সা. কাবার চত্বরে নামাজ আদায় করছিলেন। অদূরে মুশরিক নেতা আবু জাহল, উতবা, শাইবা ও উকবা বিন আবি মুয়াইত প্রমুখ মজলিসে বসা ছিলো। আবু জাহল বলল, অমুক গোত্রে একটি উট যবেহ হয়েছে, কে পারবে উটের সেই ভুড়িটি নিয়ে আসতে ? হতভাগা উকবা বিন আবু মুয়াইত বললো আমি পারবো। তারাপর ভুড়িটি এনে রাসুল সা. যখন সিজদায় গেলেন তখন তার পিঠ মুবারকে উকবা ভুড়িটি চাপিয়ে দিলো। এতে করে নবীজী মাথা উত্তোলন করতে পারছিলেন না। অপর দিকে পাপিষ্টরা এ দৃশ্য দেখে হাসছিলো। হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. ছিলেন হুজাইল গোত্রের। তিনি এ দৃশ্য দেখে কষ্ট পাচ্ছিলেন কিন্তু কিছুই করতে পারছিলেন না। কারণ কুরাইশরা ছিলো প্রভাবশালী গোত্র। অত:পর জান্নাতের সর্দারণী হযরত ফাতেমা রা. যখন এই ঘটনার কথা জানতে পারলেন তিনি দৌড়ে এসে নবীজীর পিঠ থেকে ভুড়ি সরিয়ে দিলেন এবং পাপিষ্ট মুশরিকদের খুব ভৎসনা করলেন।
রহমাতুল্লিল আলামিন হওয়া সত্বেও এ আচরণে নবীজী এতটা কষ্ট পেলেন যে, তাদের সবগুলোর নাম ধরে ধরে বদদোয়া করলেন। কারণ, নবীজী তার মহান রবের সাথে সিজদারত অবস্থায় একান্ত মুনাজাতে নিমগ্ন ছিলেন। অথচ নবীজী কখনও ব্যক্তিগত স্বার্থে কারো থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেন নি।
তায়েফে, উহুদে মুশরিকরা নবীজীকে কত কষ্ট দিয়েছে, কিন্তু তিনি কখনও বদদোয়া করেননি। মহান আল্লাহ তা’য়ালা নবী মুছা আ. এর ঘটনা স্বরণ করিয়ে দিয়ে বুঝাচ্ছেন, হে রাসুল! আপনার এই তাওহিদের দাওয়াতে ফিরআউনী ও নমরুদী বাধা আসবে। সমস্ত বাধার পাহাড় ডিঙ্গিয়ে আপনাকে আপনার মিশন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যেতে হবে। মহান আল্লাহ তা’য়ালা মুছা আ: এর সাথে ফিরআউন ও তার সম্প্রদায়ের লোকেরা যে আচরণ করেছে তার বর্ণনা প্রদান করেছেন।
মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন “হে নবী আপনার কাছে নবী মুছা আ: এর বর্ণনা এসেছে ? যখন তাকে তার রব পবিত্র তোয়া উপত্যকায় ডাক দিয়ে ছিলেন। পবিত্র কুরআনে সুরা ত্বহার মধ্যে সবিস্তারে বর্ণিত হয়েছে। মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন “অতপর যখন মুছা আ: পবিত্র উপত্যকায় আসলেন তাকে ডাক দেয়া হল হে মুসা নিশ্চই আমি তোমার রব সুতরাং তুমি তোমার পাদুকাদ্বয় খুলে রাখো। নিশ্চই তুমি পবিত্র তুয়া উপত্যকায় অবস্থান করছো। আর আমি তোমাকে মনোনীত করেছি। ফলে তোমার কাছে যে প্রত্যাদেশ আসে তা মনযোগসহকারে শোনো। নিশ্চই আমি আল্লাহ, আমি ছাড়া কোন উপাস্য নাই। তাই আমার ইবাদত কর এবং আমার স্বরণার্থে নামায আদায় কর। এর একটু পরে মহান আল্লাহ তা’য়ালা মুছা আ: এর সাথে হৃদ্যতাপূর্ণ কথোপকথোন করেছেন। মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন হে মুছা তোমার ডান হতে কি ? মুছা আ: বললেন এটা আমার লাঠি, আমি এর উপর ভর করে চলি এবং তা দ্বারা আমার বকরীকে পাতা পেড়ে দেই এবং এটা আমার অন্যান্য কজে আসে। এখানে লক্ষণীয় বিষয় হল-মহান আল্লাহ তা’য়ালা বললেন, হে মুছা তোমার ডান হতে ওটা কি ? মুছা আ: এক কথায় শুধু লাঠি না বলে বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া শুরু করলেন। কারণ, মুহাব্বতের দাবি হচ্ছে প্রিয় জনের সাথে আলোচনা দীর্ঘায়িত করা।
হযরত মাওলানা রুমী রহ. বলেন, রাসুল সা. যদিও সবুজ গম্বুজের নীচে শুয়ে আছেন কিন্তু তার জীবন্ত মুজিযা কুরআন দুনিয়াতে বিদ্যমান রয়েছে। মহান আল্লাহ তা’য়ালা মুছা আ. কে অনেক মুজিযা দিয়েছিলেন। তার মধ্যে একটি হল লাঠি, আরেকটি হল তার ডান হাত। এটিকে যখন তিনি বগল দাবা করে বের করতেন তখন অতি শুভ্র ও উজ্জল হয়ে যেত। ইমাম কুরতুবী রহ. বর্ণনা করেন হযরত মুছা আ: যখন তার হাতকে বগল দাবা করে বের করতেন, তখন তা সূর্যের আলোর ন্যয় উজ্জল হয়ে যেত। আমাদের রাসুল সা. এর মুজিযাও জীবন্ত। যেমনি ভাবে মুছা আ: এর লাঠি জীবন্ত ছিলো।
হযরত মাওলানা জালালুদ্দীন রুমী রহ. তার মসনবী শরীফের মধ্যে লাঠি সংক্রান্ত একটি ঘটনা বর্ণনা করেন। হযরত মুছা আ: এর যুগে এক জাদুকর ছিলো, তার দুটি ছেলে ছিলো। সে মারা যাওয়ার পরে তার দুই ছেলের মাঝে যাদু সত্য নাকি মুছা আ. এর মুজিযা লাঠি সত্য ? তা নিয়ে মতানৈক্য দেখা দিলো। এক ছেলে বলল যাদু সত্য অপর জন বলল মুছা আ: এর লাঠি সত্য। এক পর্যায়ে তারা উভয় মিলে তার কবরের পাশে গিয়ে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করল কিন্তু কবর থেকে কোন প্রতিউত্তর আসলো না। রাতে তারা উভয় স্বপ্ন দেখলো তাদের পিতা বলল তোমরা পারলে মুছা আ: এর হাতের লাঠি চুরির চেষ্টা কর, তখন তোমরা উত্তর পেয়ে যাবে। স্বপ্ন মুতাবেক তারা উভয়ে চুরির জন্য প্রস্তুত হল।
একবার তারা দেখলো মুছা. আ: লাঠি রেখে ঘুমাচ্ছেন, তখন তারা লাঠিটি চুরি করার জন্য দৃঢ় সংকল্প করল। কিন্তু আশ্চার্যের বিষয় হল, যখনই তারা লাঠি নিতে উদ্যত হল তখনই লাঠিটি সাপে পরিনত হয়ে তাদেরকে তাড়া করল। তখন তারা বুঝতে পারলো যে, এটা কখনই যাদু হতে পারে না এবং এজন্য তারা মনে মনে তাওবা করল। তখন সাপ লাঠিতে পরিণত হল। এরপর তারা হাপাতে হাপাতে বাড়ি পৌছালো। রাতের বেলা তাদের জ্বর উঠল। এঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা লোক পাঠিয়ে মুছা আ: এর কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিলো। মুছা আ: ক্ষমা করে দিলেন। তখনই তারা সুস্থ হল। লাঠি ছিলো মুছা আ: এর একটি জীবন্ত মুজিযা।এরকমই কুরআন কারীম হল আমাদের নবীজীর জীবন্ত মুজিযা।
মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, হে মুছা তুমি তা নিক্ষেপ কর। অতপর তিনি নিক্ষেপ করলেন আর অমনি তা বিশাল সাপ হয়ে দৌঁড়াতে লাগলো। তখন আবার বললেন ওটাকে ধর এবং কোন রকম ভয় পেও না। আমি তাকে তার পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দিবো। মুফাসসিরিনে কিরাম বলেন এখানে লাঠি নিক্ষেপ করা এবং সাপে পরিনত হওয়ার পরে তা হতে নেয়ার নির্দেশ প্রদান করার পিছনে হিকমত হল, প্রথমত মুছা আ: কে বুঝানো যে আসলে এটা লাঠিই। ভিন্ন কিছু নয়। তাই কখনও সাপে পরিণত হলে ভয় পাওয়ার কারণ নেই।
দ্বিতীয়ত এটা বুঝানো যে, এটা লাঠি হলেও সমস্ত জাদুর মুকাবেলায় ভয়ংকর সাপের কাজ দিবে। মহান আল্লাহ তা’য়ালা হযরত মুছা আ: কে এসমস্ত মুজিযা দান করার পরে নির্দেশ দিলেন “হে মুছা তুমি ফিরআউনের নিকট যাও কেননা সে সীমা অতিক্রম করেছে। তারপর তাকে বল তোমার কি পবিত্র হওয়ার ইচ্ছা আছে ? আর আমি তোমাকে তোমার রবের দিকে প্রত্যাবর্তনের রাস্তা দেখিয়ে দিবো ? ফলে তুমি আল্লাহর ভয় দ্বারা নিজে কে সংশোধন করে নিবে ? কিন্তু সে বিষয়টি কে মিথ্যারোপ করল এবং অবাধ্যতায় লিপ্ত হল। অতপর সে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে চলে গেল। পরক্ষণে সে তার সেনা ও জাদুকরদের একত্রিত করল। তারপর জোর আওয়াজে চিৎকার দিয়ে বলল আমি তোমাদের সবচেয়ে বড় রব। ই
মাম কুরতুবী রহ. একটি রেওয়ায়েত বর্ণনা করেছেন যে, ইবলিশ একবার মানুষের রূপ ধরে মিশরে হাম্মাম খানায় ফিরাউনের সাথে সাক্ষাত করল। তখন ফিরাউন তাকে দেখে চমকে গেল। তখন ইবলিশ বলল যে, আপনি আমাকে চিনতে পারেন নাই। আপনি তো আমার সৃষ্টিকর্তা এবং আপনি তো বলেছেন যে, আমিতো বড় খোদা। ফিরআউন এ কথাটি এক দিনে বলেনি। সুরা কসাসের ৩৮ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, সর্ব প্রধম ফিরআউন বলেছে আমি ছাড়া তোমাদের অন্য কোন উপাস্য আছে বলে আমার জানা নেই। একথাটি ৪০ বছর আগে বলেছিলো।
তারপর ৪০ বছর পর বলেছে আমি তোমাদের সবচেয়ে বড় রব। ফলে আল্লাহ তাকে দুনিয়া ও আখেরাতের শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করলেন। দুনিয়র শাস্তি হল, লোহিত সাগরে নিমজ্জিত হওয়া। আর আখেরাতের শাস্তি হল চিরস্থায়ী জাহান্নাম। নিশ্চয় এতে শিক্ষার উপকরণ রয়েছে তাদের জন্য যারা ( খোদা ) ভীতি অর্জন করতে চায়। এরপর মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন যারা পুনরুত্থানকে অস্বীকার করে তাদেরকে মহাকাশ সৃষ্টির বিস্ময়কর রহস্যের কথা উল্লেখ করে তাদের পুনরুজ্জীবনের প্রতি প্রমান পেশ করেছেন। এই মর্মে মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন তোমাদেরকে সৃষ্টি করা কঠিন নাকি আসমান ? যা তিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি আসমানের ছাদকে সুউচ্চ করেছেন তারপর সেটাকে সুবিন্যাস্ত করেছেন। আর তিনি তার রাতকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করেছেন এবং প্রভাতের আলোকে বের করেছেন। আর জমিনকে তারপরে বিস্তৃত করেছেন। তার থেকে তার পানি ও ঘাসকে নির্গত করেছেন। আর তিনি পাহাড়কে দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছেন।
এগুলোকে তোমাদের ও তোমাদের গবাদি পশুর উপভোগের সামগ্রি রুপে (তৈরী করেছেন) অতপর যখন মহা প্রলয় এসে যাবে সেদিন মানুষ যা আমল করেছে তা স্বরণ করবে। সেদিন জাহান্নামকে দর্শনার্থীদের জন্য প্রকাশ করা হবে। সুতরাং যে ব্যক্তি সীমালঙ্ঘন করেছে ও পার্থিব জীবনকে আখেরাতের উপর প্রাধান্য দিয়েছে তার জন্য প্রজ্জলিত জাহান্নামই হবে আশ্রয় স্থল। আর যে ব্যক্তি তার রবের সামনে দাড়ানোকে ভয় করে এবং নিজেকে প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে বিরত রাখে, জান্নাত হল তার আশ্রয় স্থল।
হে নবী আপনাকে তারা কিয়ামত সম্পের্কে প্রশ্ন করে কখন তা সংঘটিত হবে ? এটা বর্ণনার সাথে আপনার কি সম্পর্ক ? অর্থাৎ কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে তার ইলম তো একমাত্র আল্লাহর কাছেই আছে। তাহলে তারা কেন এ ব্যাপারে আপনাকে প্রশ্ন করে ? এ বিষয়ে ইলমের চরমজ্ঞান তো আল্লাহর কাছে। আপনি কেবল তাদের জন্যই ভীতি প্রদর্শন কারী যারা (কেয়ামতকে) ভয় করে। যেদিন তারা একে (কেয়ামতকে) দেখবে সেদিন তাদের মনে হবে ( যেন তারা দুনিয়াতে ) এক বিকাল অথবা এক সকাল অবস্থান করেছে।
লেখক: প্রিন্সিপাল, জামিয়া আরাবিয়া শামসুল উলুম ফরিদপুর ও খতীব- চকবাজার শাহী মসজিদ
 
                              
                           
                              
                           
                         
                              
                           
                        
                                                 
                      
                                                  
                                               
                                                  
                                               
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                        