বুধবার, ১৫ মে ২০২৪ ।। ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ।। ৭ জিলকদ ১৪৪৫


ফারেগ মানে শিক্ষাসমাপ্তি নয়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।।কাজী একরাম।।

নেসাবে তালিম বা শিক্ষা সিলেবাস প্রণয়নের ক্ষেত্রে নানামাত্রিক বিবেচনা ও সীমাবদ্ধতা থেকে থাকে, যা যৌক্তিক এবং বাস্তবিক। একাডেমিক পড়াশোনাটা তাই যেমন হয় সীমিত, তেমনি থাকে একটা নির্ধারিত বৃত্তের ভেতর আবদ্ধ। এই সীমাবদ্ধ সিলেবাসের বৃত্তবদ্ধ পড়াশোনাকে সমাপ্ত কিংবা পর্যাপ্ত কোনটাই বলা যায় না। বরং বাস্তবতা হচ্ছে, ‘একাডেমিক পড়াশোনার পর থেকেই একজন শিক্ষার্থীর জ্ঞান আহরণ এবং অধ্যয়নের অগ্রযাত্রা শুরু হয় মাত্র।’

সন্দেহ নেই, শিক্ষা সিলেবাসের একটা প্রথাগত সমাপ্তি রয়েছে। কিন্তু এর মানে আদৌ জ্ঞান আহরণের সমাপ্তি নয়। যারা এটাকে শিক্ষা-সমাপ্তি হিসেবে ধরে নেয়, আলি নদভি মনে করেন, ‘তারা আদতে কোনো শিক্ষাই লাভ করে নি।’ ১৯৬৫ সনে নদওয়াতুল উলামার শিক্ষাসমাপনকারী শিক্ষার্থীদের বিদায়ী অনুষ্ঠানে ‘ইখলাস, আত্মত্যাগ ও আত্মযোগ্যতা’ শীর্ষক একটি বক্তৃতায় তিনি বলেন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই একটি শিক্ষাকাল নির্ধারণ করতে হবে এবং শিক্ষার্থীকেও তা সমাপ্ত করতে হবে, কিন্তু এখানে আমরা যে মহাগুরুত্বপূর্ণ কথাটি আপনাকে বলতে চাই, তা এই যে, শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন কখনো সমাপ্ত হতে পারে না এবং তালিবে ইলম কখনো তলবে ইলম ও জ্ঞান অন্বেষণ থেকে ফারিগ হতে পারে না।’ [জীবন পথের পাথেয়, পৃষ্ঠা ৩২-৩৩]

সাধারণত আমাদের সমাজে ‘ফারেগ হওয়া’কে শিক্ষাসমাপন হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। এই গণ্য করার মধ্য দিয়ে জীবন থেকে পঠন আর অধ্যয়নকে বিদায় জানিয়ে রীতিমতো অবসর নিয়ে নিই আমরা। আলি নদভি ‘ফারেগ হওয়া’কে সেরকম কোনো অর্থে সংজ্ঞায়িত করেন না। তাঁর মতে, ‘ফারেগ হওয়ার অর্থ হল, আমরা শিক্ষা লাভের এমন এক স্তরে উপনীত হয়েছি, এখন যেকোন বিষয়ে কিতাব হাতে নিতে পারবো এবং সাহস করে জ্ঞানসমুদ্রে ডুব দিয়ে প্রয়োজনীয় মনি-মুক্তা তুলে আনতে পারবো। জ্ঞান-ভাণ্ডারের চাবিগুচ্ছ আমাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এখন আমরা যে কোন তালা খুলতে পারি এবং যত ইচ্ছে জ্ঞান-সম্পদ আহরণ করতে পারি। বাস্তবতা হচ্ছে, এই চাবিগুচ্ছ যত বেশি ব্যবহার করবো, তত বেশি লাভবান হবো। তত বেশি বিদ্বান ও বিত্তবান হবো।’ এ হলো আলি নদভির চোখে ফারেগ হওয়ার মতলব ও মর্মার্থ৷

আলি নদভির যে ভাবনা ও বিশ্লেষণ, শিক্ষা সিলেবাসের উদ্দেশ্যগত তাৎপর্য যদি আমরা তালাশ করে দেখি, তবে এমনটাই দেখতে পাবো। নিজের ভেতর জ্ঞানতৃষ্ণা তৈরি করে দেওয়া এবং নিরন্তর উচ্চ থেকে উচ্চতর জ্ঞান অর্জন ও অন্বেষণের প্রেরণা জাগিয়ে দেওয়াই শিক্ষা সিলেবাসের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। প্রকৃতপক্ষে ‘আমি জানি না’-র বোধ ও উপলব্ধি যে শিক্ষার্থী তার মন-মগজে গেঁথে নিতে সক্ষম হবে, সত্যিকার অর্থে সিলেবাসের উদ্দেশ্য উদ্ধার করতে সেই পেরেছে।

আধুনিক সময়ে ‘জ্ঞানমনস্কতা’ বহুপরিশ্রুত একটি শব্দ। জ্ঞানমনস্কতার এ গুণ যার মধ্যে রয়েছে, তাকে জ্ঞানীসমাজে বড় কদর দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এটা সেই ‘আমি জানি না’ কথাটিরই অন্যরূপ। এই ‘আমি জানি না’, যাকে আজকের সুশীল ভাষায় ‘জ্ঞানমনস্কতা’ শব্দের সুন্দর মোড়কে পরিবেশন করা হচ্ছে। বলাই বাহুল্য, সত্যিকারের যে কোনো ‘তালিবে ইলমের’ পক্ষে এর জরুরত অনিবার্য।

কিন্তু আফসোস, আমাদের কওমি অঙ্গনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই অপরিহার্য গুণটির বড়ই অভাব, এতটাই অভাব, যার কোন হিসেব নেই। এই বে-হিসাব অভাবের কারণেই নিত্য অগ্রসরমান জ্ঞান-বিজ্ঞানের ময়দানে আমরা এতোটা পিছিয়ে। অবস্থাটা আমাদের এমন যে, কোনরকম প্রাতিষ্ঠানিক সিলেবাসটা শেষ করতে পারলেই হল, আমাদের যাবতীয় জ্ঞানচর্চা ও জ্ঞানান্বেষণ মুখ থুবড়ে পড়ে। জ্ঞানের সীমানা থেকে আমরা হারিয়ে যাই। বইপত্রের সঙ্গে আমাদের আর কোন যোগাযোগ থাকে না। বাহ্যিক ও বিচিত্র বিষয় নিয়ে পড়াশোনা, চর্চা ও অনুশীলনের অসীম জগতে আমরা আর প্রবেশ করি না। উফ, কী দীনতা আমাদের! কী দূর্ভাগা আমরা!

অবাক না হয়ে পারা যায় না, যখন দেখি জেনারেল ধারার এক একটা শিক্ষার্থী এক্ষেত্রে আমাদের চেয়ে কতবেশি অগ্রসর এবং সচেতন। পাঠ্য-সিলেবাসের বাইরে তাদের পাঠ-প্রয়াস ও পাঠ-পরিধি বেহুশ করে দেয়ার মতো! এ মুহূর্তে আমার সম্মুখে 'শালুক' নামীয় বৃহৎ কলেবরের একটি সাহিত্য-পত্রিকা রয়েছে। 'ভিন্ন ভাষার সাহিত্যপাঠ' নিয়ে একটি অনবদ্য সাহিত্যিক সংকলন এটি। এতে স্থান পাওয়া সংকলিত রচনা এবং লেখাগুলি পড়ে বিচিত্র সব তথ্য জেনে আমি যারপরনাই হয়রান হয়েছি! মনে মনে বলেছি, হায়! এরা এত বেশি পড়ে এবং পড়তে জানে! সে তুলনায় কওমী ছাত্ররা, তাদের ভেতর যথেষ্ট সামর্থ্য ও প্রতিভা থাকা সত্তেও, অসম্ভব পর্যায়ের দীনহীন এবং পশ্চাৎপদ!

কওমি পড়ুয়াদের এই পাঠদীনতা এবং পিছিয়ে পড়া কেন? কেন আমরা নিজেদের পর্যাপ্ত যোগ্যতা ও সামর্থ্য থাকতেও এতোটা উদাসীন? জ্ঞানের গতি ও অগ্রগতির এ কালে কেন আমরা অগ্রসর হচ্ছি না? কেন আমরা নিজেদেরকে যোগ্যরূপে প্রস্তুত করছি না? সময়ের বাস্তবতা ও যুগের ভাষাকে কেন আমরা ঠিকমতো উপলব্ধি করছি না? এসব সংকট ও বাস্তবতাকে উপলব্ধি করেছেন আলি নদভি। এক বক্তৃতায় দীনি মাদ্রাসায় পড়ুয়াদের এই দৈন্যদশাকে তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের দীনি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য এটা খুবই আফসোসের বিষয় হবে যে, আজকের এই গতির যুগে আমরা আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের সাধারণ পরিচয় থেকেও অজ্ঞ থেকে যাবো, যা সময়ের অপরিহার্য প্রয়োজন। সুতরাং আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের আসরেও আমাদের অংশ গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও তথ্য আহরণ করা উচিৎ।’

পাঠ্যবইয়ের নেসাবি পড়াশোনার পর বাইরের বিচিত্র জ্ঞানের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং দীনি উলুম ও ধর্মীয় জ্ঞানের পাশাপাশি আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান, চিন্তা-মতাদর্শের সঙ্গেও যোগাযোগ ও বোঝাপড়ার অবস্থা তৈরি করতে হবে কওমি পড়ুয়াদের। এছাড়া কোন উপায় নেই। অবশ্য এর জন্য প্রয়োজন হচ্ছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বিষয়ের বই-পুস্তকের অধ্যয়ন এবং বিদেশি ও ভিনভাষী সাহিত্যের পাঠ। দীনিইলমের পাশাপাশি সমকালের বহিরাগত সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান, চিন্তা, দর্শন এবং বিদেশি সাহিত্যের সঙ্গে সংযোগ রাখা এবং রাখাটা কতটা ফলপ্রসূ এবং প্রাসঙ্গিক, তার একটি কার্যকারণ উল্লেখ রয়েছে উপরোক্ত পত্রিকার ভূমিকায়। সংক্ষিপ্ত করে সংশ্লিষ্ট উদ্ধৃতিটি টানছি: ‘‘...এভাবে বিশ্বসংস্কৃতি ও বিশ্বপ্রেক্ষাপটে নিজেকে না পৌঁছাতে পারলে নিজেকে এবং নিজের সৃষ্টিকে খণ্ডিত ও অসম্পূর্ণ মনে হতে পারে। হতে পারে একপাক্ষিক ও অর্বাচীন জ্ঞানানুশীলনের অংশমাত্র। অপরকে চেনার জন্য যেমন সবার আগে নিজেকে চিনতে হয়, তেমনি নিজেকে চেনার জন্যও অপরকে জানা জরুরি। সে কারণে নিজের সাহিত্যভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করতেই অপর ভাষা বা অন্য ভাষার সাহিত্যপাঠ একটি অনিবার্য অনুষঙ্গ।’’[শালুক, ভূমিকা, পৃ. ১৭]

এ ছোট্ট উদ্ধৃতি থেকে আলোচ্য বিষয়টির মূল্য ও প্রাসঙ্গিকতা কিছুটা হলেও অনুধাবন করতে পারি আমরা। কওমি শিক্ষার্থীদের জন্য এক্ষেত্রে যে সুবিধেটা আছে, যা তাদের সাধ্য ও সামর্থের অধীন, তা হচ্ছে তাদের একাধিক ভাষাজ্ঞান। কওমি পডুয়ারা সাধারণত একাধিক ভাষায় পারদর্শী হয়। ভাষাগত এই পারদর্শিতা গড়ে উঠে তাদের শিক্ষা-সিলেবাসকে কেন্দ্র করে। একাধারে বাংলা, আরবী, উর্দু এবং ফার্সী ইত্যাদি ভাষাগুলি শিখার মধ্য দিয়ে তারা দীনের ইলম হাসিল করে। আদতে এসব ভাষা না শেখে উপায়ও নেই। তো অর্জিত এসব ভাষাজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ভাষার বইপুস্তক ও বিদেশি সাহিত্যের সাথে নিজেদেরকে অনায়াসেই জুড়াতে পারে কওমি পড়ুয়ারা। কোন সন্দেহ নেই, এর মাধ্যমে তারা অনেক, অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারে। অনেক কিছু করতে পারে, করে দেখাতে পারে।

এক ইংরেজি ভাষাজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যদি জ্ঞান-বিজ্ঞান, চিন্তা ও সাহিত্যচর্চায় এতটা অগ্রসরমান হতে পারে, এত এত বিষয় অধ্যয়ন করতে সক্ষম হয়, তবে কওমি শিক্ষার্থীরা আরবি, উর্দু এবং ফার্সীর মত এমন আন্তর্জাতিক, শক্তিশালী এবং দুনিয়ার অসংখ্য মানুষের ব্যবহৃত ভাষাজ্ঞানকে কোন কারণে কাজে লাগানো হচ্ছে না?

অবশ্য এতে কোন সন্দেহ নেই, বর্তমানে ইংরেজি ভাষা এক পাওয়ারফুল লেংগুয়েজ, আন্তর্জাতিক ভাষা, আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির বাগডোরও অনেকটা ইংরেজি ভাষার দখলে। তাই যার সাধ্য আছে, তাকে অবশ্যই এ ভাষা শিখে নেওয়া জরুরি। সময়ের অগ্রসরতায় এর প্রয়োজন কমবে না বৈ বাড়বে। তাই অতিঅবশ্যই ইংরেজি ভাষা আমাদের শিখে নিতে হবে। কিন্তু, এখন আমাদের ভাণ্ডারে উপস্থিত যা আছে, তা দিয়েই আমাদের বহুমুখী এবং বহির্মুখী পাঠ-অভিযান শুরু করে দিতে হবে। আমাদের বহুদূর এগিয়ে যেতে হবে এবং নিজের জাতি ও সমাজকে বহুদূর এগিয়ে নিতে হবে। উদাসীনতা প্রদর্শন এবং অনুচিত কালক্ষেপণ মোটেই উচিৎ হবে না!

বলতেই হয়, হালে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মাঝে কিছুটা হলেও পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। জ্ঞানগত সচেতনতা তৈরি হচ্ছে। পঠন, অধ্যয়ন, চিন্তা ও গবেষণার প্রতি আগ্রহ ও অভিনিবেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা অবশ্যই প্রসংশনীয় এবং আশাব্যঞ্জক। কিন্তু, কাজের মধ্যে একধরনের অনুকরণবাদিতা ও গতানুগতিকতার ছাপ রয়ে গেছে এখনও। আলি নদভি যাকে ব্যক্ত করেছেন ‘গভীরতা ও চিন্তামনস্কতার ছাপ নেই এবং লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের নির্দেশনা নেই' বলে। নদভি তাই মনে করেন, এক্ষেত্রে আমাদের আধুনিক চিন্তা-গবেষণা ও অধ্যয়নের পথ ও পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। তিনি নিজেও এর উদার প্রবক্তা ছিলেন।

তবে সঙ্গেসঙ্গে নদভি এব্যাপারটায় দারুণ উদ্বিগ্নও ছিলেন। কারণ, তিনি মনে করেন এধরণের আধুনিক পাঠ ও অধ্যয়ন, গবেষণা ও চিন্তা চর্চার কাজ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এজন্য তিনি বরাবরই ‘সঠিক নির্বাচন, পর্যায়ক্রম নির্ধারণ এবং যোগ্য মুরুব্বি ও পথপ্রদর্শকের সার্বক্ষনিক সঙ্গকে অপরিহার্য মনে করেন।’ তারও আগে তিনি জরুরি মনে করেন, ‘চিন্তা চেতনা এবং বোধ ও বুদ্ধির এই পরিমাণ পরিপক্বতা অর্জন করা যাতে গবেষণা ও অধ্যয়ন থেকে পূর্ণ ফায়দা গ্রহণ এবং প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের সঠিক বিন্যাস ও নির্ভুল ব্যবহার সম্ভব হয়। আসাতিযায়ে কেরামের সঠিক শিক্ষা ও নিবিড় সান্নিধ্য দ্বারা চিন্তা-চেতনা এবং বোধ-বুদ্ধি পরিপক্ব হলেই শুধু অধ্যয়নকৃত বিষয় থেকে সঠিক কাজ নেওয়া এবং তথ্য উপাত্তের কাঁচামাল থেকে কার্যকর সামগ্রী উৎপন্ন করা এবং ইতিহাস, সাহিত্য ও সাধারণ জ্ঞান দ্বারা উপকৃত হওয়া সম্ভব হবে। এমনকি ধর্ম-সম্পর্কহীন বিষয়ও দীনি ও দাওয়াতি ক্ষেত্রে অনেক সময় এমন তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে যা নির্ভেজাল দীনি বিষয়েও কল্পনা করা যায় না।’ [প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা ১১০]

বলাই বাহুল্য, আলি নদভি তাঁর যাপিত জীবনের অর্জিত অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণ থেকেই এমন বাস্তবতাকে অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি দেখেছেন, যারা নিয়মতান্ত্রিক পথ ও পদ্ধতি অবলম্বন না করে বরং একান্তই আপন মেধা ও বুদ্ধিবিবেচনায় এ পথে অগ্রসর হতে চেয়েছে, তারা অধিকাংশই পথহারা হয়ে গন্তব্য-বিমুখ হয়েছে! আলি নদভি কেন, খোদ আমরা প্রত্যেকেই তো এহেন বাস্তবতার অগুনতি উদাহরণ প্রত্যক্ষ করছি প্রতিনিয়ত। নদভি তাই আমাদেরকে সতর্ক করে দেন এই বলে যে, পাঠ ও অধ্যয়ন, চিন্তা ও গবেষণা করার ক্ষেত্রে উদ্দিষ্ট গভীরতা ও পরিপক্বতার বিষয়টি যদি বিবেচনায় রাখা না হয়, চিন্তা চেতনায় এবং মন মস্তিষ্কে দীন ও ঈমানের শিকড় যদি সুদৃঢ় না হয়, বরং চিন্তা যদি হয় বক্র এবং রুচি যদি হয় অসুস্থ, তাহলে ‘যা কিছু গ্রহণ করা হবে রোগ নিরাময়ের জন্য, তাই হয়ে উঠবে নতুন রোগের কারণ!’

লেখক: শিক্ষার্থী, মাহাদুল ফিকরি ওয়াদদিরাসাতিল ইসলামিয়্যা, ঢাকা।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ