বয়ান : মাওলানা আবদুল মতিন
শ্রুতিলিখন : মিযানুর রহমান জামীল
মোহতারাম দোস্ত বুযুর্গ!
আল্লাহ রব্বুল ইজ্জতের দরবারে শুকরিয়া আদায় করি আলহামদুলিল্লাহ। দীনের কাজে তৈরি হতে পারা আল্লাহ তাআলার বড় মেহেরবানী। তিনি যাকে তাঁর দীনের কাজে ব্যবহার করতে চান, তাকেই মেহেরবানী করে দীনের যে কোনো কাজে কবুল করে নেন।
এ জন্য আমরা যারা আগেই ময়দানে চলে এসেছি, তাদের উচিত যারা পরবর্তীতে এসেছে তাদের এহতেমামের সাথে সুযোগ করে দেব। তাদের সাথে ভালো আচরণ করবো। তারা ময়দানে এসে জায়গা না ফেলে তাদের জায়গা করে দেবো। এক কথায় জিন্দেগীর জন্য তাবলীগওয়ালা বনে যাবো।
তিন দিনের ইজতেমায় কোনো ভাই যাতে জায়গা থেকে মাহরুম না হয় সব ভাইকে জায়গা দেব ইনশাআল্লাহ। তারা সামান নিয়ে আমাদের কাছে আসার সাথে সাথে তাদের আন্তুরিকতার সাথে গ্রহণ করবো। প্রয়োজনে গায়ে হাত বুলিয়ে তাদেরকে তাদের নিজস্ব খিত্তার পথ বাতলে দেবো। আর তাতে রহমত এবং বরকতের দরজা খুলে যাবে ইনশাআল্লাহ।
মোহতারাম দোস্ত বুযুর্গ!
আমরা আমাদের দিলকে প্রশস্ত করে তুলি। দিল প্রশস্ত হলে ময়দানে জায়গা হবে যাবে। এ জন্যই আল্লাহ তাআলা মদীনার আনসারদের প্রশংসা করেন।
হেকায়াতে সাহাবার মধ্যে ঘটনা বর্ণিত হয়েছে- সাহাবায়ে কেরাম তো দীনের জন্য নিজেরা ক্ষুধার্ত থেকেছেন এবং নিজেদের বিবি বাচ্চাদের ক্ষুধার্ত রেখেছেন, এ জন্য আল্লাহ তাআলা তাদের উপর রাযি হয়ে পবিত্র কুরআনুল কারীমের মধ্যে আয়াত নাযিল করে দিয়েছেন।
মোহতারাম দোস্ত বুযুর্গ!
আমরা কেউ মজমার মধ্যে অহেতুক কথাবার্তায় লিপ্ত থাকবো না। সব সময় চার কাজ এবং তিনটি গুরুত্বপূর্ণ আমলের মধ্যে মশগুল থাকবো। তাওহীদ রেসালাত ও আখেরাতের উপর ময়দানে দাওয়াত হবে। সর্ব প্রথম দিলের মধ্যে তাওহীদ একত্ববাদের একীন বসাতে হবে।
রেসালাত আখেরাতের আলোচনা করতে হবে। এ জন্য আল্লাহর তাআলা ইরশাদ ‘ঐ লোকের কথার চেয়ে কার কথা উত্তম হতে পারে যে মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকে।’ ভাই আমরা তো ময়দানে তিন দিন থাকার এরাদা করেছি, এজন্য এ তিন দিন খালেক ছাড়া কোনো মাখলুকের আলোচনা করবো না।
কোনো মাখলুকের ব্যাপারে দোষ-গুণ মুখের মধ্যে আনবো না। ভাই মানুষের দিল আল্লাহর হাতে। দিলের মালিক আল্লাহ, আর আল্লাহ চাইলে পরিবর্তন করে দিতে পারেন।
মোহতারাম দোস্ত বুযুর্গ!
জিম্মাদারগণ ছয় নাম্বারের উপর বয়ান করে তাশকীল করবেন। সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তালীম হবে, এরপর তাশকীল হবে। জিম্মাদারগণ তাশকীলের কামরা থেকে কাগজ নিয়ে নিজেদের দায়িত্ব পুরা করবে। ১২টা যোহর পর্যন্ত অন্যান্য আমল। তারপর যোহরের নামায ও বয়ান।
এভাবে আমরা চেষ্টা করতে থাকবো এবং নিজেদের পুরা তিন দিন আমলের সাথে জুড়িয়ে রাখবো। ভাই বান্দা যখন ফিকির করে এবং দায়িত্ব পুরা করে, অর্থাৎ দিনে মেহনত রাত্রে নামায ও দোয়া মুনাজাতে আল্লাহ তাআলার কাছে কান্নাকাটি করে তখন আল্লাহ তাআলা তার মধ্যে মেহনতের রং ঢেলে দেন, কাজের ফিকির ঢেলে দেন।
মোহতারাম দোস্ত বুযুর্গ!
এই মেহনতকে কেন্দ্র করেই তো সারা দুনিয়া থেকে মেহমানরা আসছেন। আমরা সবাই ফিকির করি, যেন পরিপূর্ণভাবে আমাদের আখেরাত বনে যায়, সবাই যাতে জান্নাত পেয়ে যাই।
এ জন্য বেশি বেশি ছয় নাম্বারের আলোচনা করবো- যাতে দিলের মধ্যে আল্লাহ তাআলার একীন পুরাপুরি বসে যায়। দাওয়াত আল্লাহর, কোনো মাখলুকের আলোচনা করা দাওয়াত নয়। খালেকের আলোচনায় দিল জিন্দা হয়, মাখলুকের আলোচনায় দিল জিন্দা হয় না। তাই আমরা বেশি বেশি খালেকের আলোচনা করবো, মাখলুকের আলোচনা থেকে নিজেদের জবান ও সময়কে ফারেগ রাখবো।
ইনশাআল্লাহ দীনের ফিকির করতে করতে দিল বনে গেলে ঈমানের মেহনত কাজে আসবে। আমরা সবাই ঈমানের মেহনতে জমে থাকি। আল্লাহ চাহেন তো আমরা ঈমানওয়ালা বনে যাবো।
আরআর
 
                              
                           
                              
                           
                         
                              
                           
                        
                                                 
                      
                                                  
                                               
                                                  
                                               
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                        