আওয়ার ইসলাম: প্রিয় ভাই ও বােনেরা! আল্লাহ তায়ালা মানব জাতিকে অযথা সৃষ্টি করেননি। উদ্দেশ্যহীনভাবে পয়দা করেননি।
সূরা মু'মিনূন, আয়াত ১১৫ আল্লাহ বলেন, তােমাদের কি ধারণা! আমি কি তােমাদেরকে অযথাই সৃষ্টি করেছি? তোমরা কি আমার নিকট ফিরে আসবে না? আল্লাহ তা'য়ালা সকল ব্যবস্থাপনা আমাকে আপনাকে কেন্দ্র করেই সাজিয়েছেন। মুখের বলা, চোখের দেখা ও মনের অনুভূতি সবই আল্লাহর তত্ত্বাবধানের অধিন ।
সুরা ইনফিত্বার, আয়াত ১০-১১ আল্লাহ তায়ালা বলেন, জাগ্রত থাকি বা নিদ্রিত থাকি, কর্মে ব্যস্ত থাকি বা নির্জন-নিরালায় থাকি, সর্বদাই ডানে ও বামে দু'জন পাহারাদার বসে আছে। যাদের খাওয়ার প্রয়ােজন। হয় না, যাদের ঘুমের প্রয়ােজন হয় না, যাদের বিশ্রামের প্রয়ােজন হয় না, যারা সর্বক্ষণ আমাদের প্রত্যেক কাজের উপর কড়া পাহারাদারী করছে।
সূরা কাফ, আয়াত ১৮ আল্লাহ বলেন, মানুষ যা বলে তাই লিখে নেয় ফেরেশ্তারা। সূরা বণি ইস্রায়েল, আয়াত ৩৬
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ঘােষণা আমার নিকট আসবে তাে সােজা হয়ে এসাে। তােমাদের চক্ষুদ্বয়কে জিজ্ঞাসা করলাে কি কি দেখেছে?
তােমাদের কর্ণকে জিজ্ঞাসা করলাে কি কি শুনেছে? তােমাদের অন্তরকে জিজ্ঞাসা করলাে কি কি ভেবেছে? সে দিন তােমাদের নিজের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আমার নির্দেশে কথা বলবে, এক এক করে মানুষের প্রত্যেক অঙ্গই কথা বলবে। যার বিরুদ্ধে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্বাক্ষী দিবে, সে ব্যক্তি বলবে।
তােমাদের সকলের কি হল যে তােমরা সকলেই আমার বিরুদ্ধে স্বাক্ষী দিচ্ছ? অঙ্গ-প্রতঙ্গগুলাে উত্তরে বলবে,
أنطقنا الله الذي انطق كل شتی
সূরা সাজদাহ্, আয়াত  ২১
আমরা কি করবাে, আমাদেরকে তাে তিনিই বলাচ্ছেন, যিনি সকলকে | কথা বলার শক্তিদান করেছেন। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সে ব্যক্তি আরাে বলবে, তােমাদের ধ্বংস হােক, তােমাদের কারণেই তাে আমি আল্লাহর নাফরমানী করতাম অথচ তােমরা আজ আমার বিরুদ্ধে বলছাে! اليوم نختم على أفواههم (সূরা ইয়া-সীন, আয়াত ৬৫)
আজ তােমাদের যবান বন্ধ করে দিব, আজ তােমাদের হাত-পা | তােমাদের কৃতকর্মের স্পষ্ট প্রমাণ বলে দিবে। বর্তমানে বিশ্ব ব্যাপী প্রায় সকল নারী-পুরুষ এমনভাবে জীবন যাপন করছে যেন নাকি তাদের পাহারা দেয়ার মত কোন পাহারাদার নেই, যে তাদেরকে সর্বক্ষণ দেখছে, যে রাত-দিন চব্বিশ ঘন্টা তার চলা-ফেরা, কাজ-কর্মের উপর তীক্ষ দৃষ্টি রাখছে।
যে জীবনের সকল কৃতকর্মকে পেশ করে দিবে। এ ধারণার সাথে আমাদের জীবন গুজরান হচ্ছে না। আমরা ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার ঝামেলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। আর আখেরাতের ব্যাপারে একেবারেই গাফেল, অনাগত ঘাটিগুলের ব্যাপারে একেবারে। উদাসিন। অনাগত আযাবের ব্যাপারে চরম বেপরওয়া। ভবিষ্যতের রহমতের ব্যাপারে চরম উদাসিন।
সমগ্র জগতের লালন-পালন কর্তা আল্লাহু চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র, নবমণ্ডল -ভূমণ্ডল, সব কিছুই সৃষ্টি করেছেন মানব জাতির জন্য, আর মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন স্বয়ং আল্লাহ তা'য়ালার ইবাদাতেব জনা
হে আমার বান্দা! সব কিছু তােমার জন্যই সৃষ্টি করেছি, আর তােমাকে আমার জন্য সৃষ্টি করেছি। তােমার জন্য যা কিছু সৃষ্টি করা হয়েছে, তা নিয়ে | ব্যস্ত হয়ে, তােমাকে যে উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করা হয়েছে তা ভুলে যেওনা।
তাহলে বুঝা গেল দুনিয়া আমাদের জন্য, আমরা আল্লাহর জন্য।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, দুনিয়া তােমার খেদমত করছে বিধায় তুমি। আমাকে ভুলে যেওনা, আমার নাফরমানী শুরু করে দিওনা। সবতাে তােমরই খেদমতগার, আর তুমি নাফরমানী করলেও তােমার খেদমতেই সকলে ব্যস্ত থাকবে। সূর্য উঠবে, কিরণ ছড়াবে, ভাল লােকও আলাে পাবে, মন্দ লােকও পাবে। ন্যায় পরায়ণও উপকৃত হবে, অত্যাচারিও উপকৃত হবে।
দুনিয়াতে নেককার গুণাহগার সকলেই সমভাবে চাঁদের কিরণ পাৰে। এ দুনিয়ার সকল ব্যবস্থাপনাই সবার জন্য সমানভাবে চলছে, চলবে। তবে এমন হওয়াটা আল্লাহর নম্রতা, দুর্বলতা নয়। স্বীয় বান্দার প্রতি মমতা, উদাসিনতা নয়। আল্লাহ তা'য়ালা বিন্দু থেকে সিন্ধু সব খবরই জানেন।
-এটি
 
                              
                           
                              
                           
                         
                              
                           
                        
                                                 
                      
                                                  
                                               
                                                  
                                               
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                        