সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৩ কার্তিক ১৪৩২ ।। ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
ওমরায় গেলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ইসলামী আন্দোলন ক্ষমতায় গেলে এক টাকাও লুটপাট হবে না: শায়খে চরমোনাই কোরআন অবমাননার দায় স্বীকার সেই অপূর্ব পালের জামায়াত-ইসলামী আন্দোলনসহ সমমনা দলগুলোর কর্মসূচি ঘোষণা তুরস্কে স্কলারশিপ পেলেন ৫ শিক্ষার্থী, এমবিএম ফাউন্ডেশনের সংবর্ধনা পাকিস্তানের শীর্ষ আলেম মাওলানা ফজলুর রহমান সিলেটে আসছেন ১৭ নভেম্বর জামায়াতের নির্বাচনি সভা ভণ্ডুল করে দিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা মিথ্যা মামলায় দুই মাদরাসা শিক্ষককে হয়রানি, মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন চাঁদা না পেয়ে মসজিদের ইমামকে মারধর, স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি ৫ দফা দাবিতে আন্দোলনরত দলসমূহের যৌথ সংবাদ সম্মেলন

রমজানে কেমন আছে রোহিঙ্গারা?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাওলাদার জহিরুল ইসলাম: গেল বছর প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে ভয়াবহ নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়ে হাজার হজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নেন বাংলাদেশের চট্টগ্রামের টেকনাফ উখিয়াসহ কয়েকটি উপজেলায়। এক সময় আশ্রয় প্রার্থীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১০ লাখে। রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের সেবায় বাংলাদেশ সরকারসহ আলেম উলামা আমজনতা ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন অনন্য নজির স্থাপন করেন।

রোহিঙ্গা শিবিরে শুরু থেকেই কাজ করেছেন মাওলানা গাজী ইয়াকুব। তার মাধ্যমে টেকনাফের নাফ নদী হয়ে বহু রোহিঙ্গা পরিবার আশ্রয় খুঁজে পায়। রমজানের একদিন আগেও তিনি ঘুরে এসেছেন রোহিঙ্গা শিবিরগুলো। তার সঙ্গে কথা হয় রোহিঙ্গা শিবিরের নানা দিক নিয়ে।

আপনার দেখা মতে রোহিঙ্গারা এখন কেমন আছেন?

রোহিঙ্গারা টেকনাফ উখিয়ার শিবিরগুলোতে ভালোই আছেন। আগস্ট সেপ্টেম্বরে যে দুরাবস্থা ছিলো সে চিত্র এখন নেই। সব পরিবারই অন্তত মাথা গোজার একটি জায়গা তৈরি করে  নিয়েছে।

আরাকান রাজ্য এখন পুরোপুরি মুসলিমশূন্য। এখনো প্রতিদিন কয়েকটি পরিবার বা থেকে যাওয়া সদস্যরা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এ দৃশ্য আগের মতোই এখনো কমবেশি চোখে পড়ছে।

রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে খাদ্য সংকট আছে?

শিবিরগুলোতে মৌলিক খাবারের আগের মতো তেমন ঘাটতি নেই। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা খাবার বিতরণ করছে। তবে পানি সংকট চরমে। বিশুদ্ধ পানির খুব অভাব। একটি সেবামূলক সংস্থা প্রতিদিন ক্যাম্পে পানি বিতরণ করে থাকে তবে তা যথেষ্ট নয়।

পানি সংকটের একটি কারণ হলো এতোগুলো মানুষের জন্য পর্যাপ্ত টিউবওয়েল নেই। অনেক সংস্থা ও ব্যক্তি শুরুতে টিউবওয়েল স্থাপন করেছেন ঠিকই কিন্তু তার অধিকাংশই অগভীর।আবার দেখা শোনার অভাবে অনেক টিউবওয়েল নষ্ট হয়ে আছে।

অপরদিকে ক্যাম্পগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবারের স্বল্পতা রয়েছে। বড় প্রতিষ্ঠানগুলো চাল ডালের মতো খাদ্য বিতরণ করলেও তরি তরকারি কিন্তু কেউ  বিতরণ করে না। সব পরিবারের পক্ষে বাজার থেকে এগুলো ক্রয় করাও সম্ভব নয়।

আবার এতো পরিবারের জন্য কাঁচা বাজারেরও সংকট আছে। তাই যারা খাদ্য বিতরণ করছেন তারা যদি নিজেদের মতো না দিয়ে সমন্বয় করে খাবার তালিকা তৈরি ও বিতরণ করেন তাহলে রোহিঙ্গারা বেশি উপকৃত হবে।

মসজিদ মাদরাসাগুলো কেমন চলছে?

আলহামদু লিল্লাহ প্রায় সব মাদরাসা মসজিদই ভালোভাবে চলছে। নিয়মিত নামাজ, কুরআন শিক্ষা ও দরস তাদরিস চলছে। তবে আমাদের হাতে ১০২টা মসজিদের তালিকা রয়েছে যেগুলোর ইমামদের কোনো বেতন ভাতার ব্যবস্থা হচ্ছে না।

শুরুতে অনেকেই ইমাম নিয়োগ দিয়ে বেতন দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এক দু মাস হয়েছেও। কিন্তু এখন যেন তাদের খবর নেয়ার কেউ নেই। তাই অনেক ইমাম ইমামতি ছেড়ে অন্য কাজে যোগ দিয়েছেন। তাদেরও তো পরিবারে দেখভাল করতে হয়। এ জায়গাটাতে সবার নজর দেয়া দরকার।

আপনার প্রয়োজনীয় লুঙ্গি শাড়ি রুদ্র এন্টারপ্রাইজ থেকে কিনুন

আগের মতোই কি প্রশাসনিক কঠোরতা রয়েছে?

নিরাপত্তার স্বার্থে আগের মতোই প্রশাসনিক তদারকি রয়েছে। ক্যাম্পে প্রবেশ করতে হলে তাদের অনুমতি নিয়ে যেতে হয়। খাবার বা অন্য কিছু বিতরণ করতে হলেও তাদের সহযোগিতা নিতে হয়। এটা এক দিক থেকে ভালোই। অনেক সময় প্রশাসনের দায়িত্বশীলগণ বিতরণ কাজে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে থাকেন ।

আপনি তো শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের পাশে ছিলেন। তাদের ব্যাপারে আপনার জানা শোনাটাও বেশি। তো রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের জন্য কি বোঝা মনে হয়?

না, আমি মনে করি রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য সাময়িক অসুবিধার কারণ হলেও তারা এ দেশের জন্য আর্শিবাদও বটে। কেননা, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা পরিবারগুলো থেকে প্রায় ৪ লাখ মানুষ বিদেশে কর্মরত আছে।

এখন তাদের পাঠানো টাকাগুলো মিয়ানমারে না গিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতে জমা হচ্ছে। এখানে বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে বড় ধরনের রেমিটেন্স জমা হচ্ছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রায় ৬০ শতাংশ পরিবারই আর্থিকভাবে স্বচ্ছল। বাকি তাদের সীমাদ্ধতার কারণে হয়তো তারা আর্থিক সুবিধা ভোগ করতে পারছে না।

সৌদি অারব, মালয়েশিয়া, ওমানসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে রোহিঙ্গরা কর্মরত আছে। তবে কিছু পরিবার বেশ সংকটের মধ্যেই দিনাতিপাত করছে। সাহায্য দানকারীদের উচিত ক্যাম্পগুলোতে প্রকৃত হকদার খুঁজে সাহায্য পৌঁছানো।

‘মাঝে মধ্যে পা ব্যথা হলেও জেদ করে দাঁড়িয়েই নামাজ পড়ি’

-আরআর


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ