রবিবার, ০৪ মে ২০২৫ ।। ২০ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৬ জিলকদ ১৪৪৬


আল্লামা সুলতান যওক রাহ. এর ইন্তেকালে মজলিসের শোকবার্তা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আজ ( ৩মে) এক বিবৃতিতে  বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর শায়খুল হাদীস মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক এবং মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, "আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব, যুগের কিংবদন্তি ইসলামি চিন্তাবিদ, বিশ্ববরেণ্য আরবি সাহিত্যিক, উস্তাদুল আসাতিজা, আল্লামা মুহাম্মদ সুলতান যওক নওভী (রহ.)-এর ইন্তেকালে আমরা গভীরভাবে শোকাহত ও বিমর্ষ।"

তিনি গতকাল রাত ১২টায় চট্টগ্রামের এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন – ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৮৬ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি দুই পুত্র, পাঁচ কন্যার জনক।

তিনি ঐতিহ্যবাহী জামেয়া দারুল মা'আরিফ আল-ইসলামিয়া, চট্টগ্রাম-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও দীর্ঘদিন যাবৎ শায়খুল হাদীস হিসেবে দ্বীনের খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন। পাশাপাশি তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা, আনজুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশের সভাপতি এবং বিশ্ব ইসলামি সাহিত্য সংস্থার কার্যনির্বাহী সদস্য ও বাংলাদেশ শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলার্স-এর একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও ছিলেন।

নেতৃদ্বয় বলেন, আরবি, উর্দু ও ফারসি ভাষায় তাঁর দক্ষতা ছিল অসামান্য। এসব ভাষায় তিনি ছিলেন একাধারে প্রতিভাবান লেখক, কবি ও চিন্তাবিদ। তাঁর রচিত ২০টিরও অধিক সাহিত্যকর্ম রয়েছে, যেগুলোর অধিকাংশ অসংখ্য কওমি মাদরাসার পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত। তিনি বাংলা ও আরবিতে লিখিত “বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা সংস্কার” গ্রন্থের মাধ্যমে কওমি শিক্ষায় নবদিগন্ত উন্মোচন করেন।

তিনি ১৪০৪ হিজরিতে ভারতের প্রখ্যাত ইসলামি বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম নদওয়াতুল উলামা, লখনৌ থেকে আলিমিয়্যাত ডিগ্রি অর্জন করেন এবং “নদভী” উপাধিতে ভূষিত হন।  এছাড়াও তিনি লিবিয়ার ত্রিপলিতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক আরবি প্রবন্ধ রচনা প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও নিজের সাহিত্য-মেধার স্বাক্ষর রাখেন।

তিনি ছিলেন শায়খুল আরব ওয়াল আযম আল্লামা আবুল হাসান আলী নদভী (রহ.)-এর একান্ত শাগরিদ ও খেলাফতপ্রাপ্ত। তিনি বিশ্বের বহু খ্যাতনামা আলেমের সান্নিধ্য ও হাদীসের ইজাজত লাভ করেন।

বাংলাদেশে কওমি মাদরাসা শিক্ষার আধুনিকীকরণ ও মানোন্নয়নে তিনি ছিলেন অন্যতম পথপ্রদর্শক। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ও তৎপরতায় জামেয়া দারুল মা'আরিফ আল-ইসলামিয়ার আদলে দেশব্যাপী বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

নেতৃদ্বয় আরও বলেন, আল্লামা সুলতান যওক নওভী (রহ.)-এর ইন্তেকালে আমরা এক যুগশ্রেষ্ঠ মনীষী, ভাষা ও চিন্তার অতুলনীয় দিকপাল, দীনের এক সাচ্চা খাদেমকে হারালাম, যার শূন্যতা শত শত বছরের সাধনায়ও পূরণ হবার নয়।

নেতৃদ্বয় দোয়া করে বলেন, আল্লাহ তাআলা তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউসের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন, তাঁর দ্বীনি খেদমতকে কবুল করে তাঁকে নূরে ভরপুর কবরের শান্তি দান করুন। তাঁর পরিবার-পরিজন, ছাত্রসমাজ, ও শুভানুধ্যায়ীদেরকে সবর ও সান্ত্বনা দান করুন।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ