বুধবার, ১১ জুন ২০২৫ ।। ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ১৫ জিলহজ ১৪৪৬


কাউন্সেলিং, প্যারেন্টিং ও স্মার্ট প্রশিক্ষণ নিয়ে কিছু কথা


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ফাইল ছবি

|| মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম ||

আপনি সুস্থ ও নৈতিক সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখা বিষয়ে চিন্তিত? কীভাবে বা কোন অংশ থেকে কাজ শুরু করবেন ভাবছেন? তবে আজকের লেখা আপনার জন্য। 

তিনটি উপাদান একটি সুস্থ, নৈতিক ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য অপরিহার্য। আসুন বিস্তারিত আলোচনা করি। 

সন্তানদের কাউন্সেলিং করা, অভিভাবকদের প্যারেন্টিং করা এবং শিক্ষকদের স্মার্ট প্রশিক্ষণ দেওয়া কী ও কেন? এর রূপরেখা কেমন হতে হবে? এগুলো না হলে তার পরিণতিগুলো কী কী হতে পারে? 

সন্তানদের কাউন্সেলিং, অভিভাবকদের প্যারেন্টিং এবং শিক্ষকদের স্মার্ট প্রশিক্ষণ—এই তিনটি উপাদান একটি সুস্থ, নৈতিক ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য অপরিহার্য। ইসলাম এই প্রতিটি ক্ষেত্রেই দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে, যা ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের উন্নয়নে সহায়ক।

সন্তানদের কাউন্সেলিং: কী ও কেন?
সন্তানদের কাউন্সেলিং মানে তাদের মানসিক, নৈতিক ও সামাজিক বিকাশে সহায়তা করা। বর্তমান যুগে প্রযুক্তির প্রভাব, পারিবারিক অস্থিরতা ও সামাজিক চ্যালেঞ্জের কারণে শিশু-কিশোররা মানসিক চাপে ভোগে। কাউন্সেলিং তাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি, সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নৈতিক মূল্যবোধ গঠনে সহায়তা করে।
ইসলামের দৃষ্টিতে:  
-রাসুলুল্লাহ (সা.) শিশুদের প্রতি দয়া ও সহানুভূতির আচরণ করতেন। 
-শিশুদের সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করা পিতামাতার দায়িত্ব।

অভিভাবকদের প্যারেন্টিং: কী ও কেন?
প্যারেন্টিং হলো সন্তানদের সঠিকভাবে লালন-পালন ও দিকনির্দেশনা প্রদান।
- সন্তানের ব্যক্তিত্ব, নৈতিকতা ও আচরণ গঠনে পিতামাতার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।- সঠিক প্যারেন্টিং সন্তানের আত্মবিশ্বাস ও সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি করে।
ইসলামের দৃষ্টিতে:  
- পিতামাতার দায়িত্ব সন্তানদের সঠিকভাবে লালন-পালন করা।
- রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল, এবং তোমাদের প্রত্যেককে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।’
শিক্ষকদের স্মার্ট প্রশিক্ষণ: কী ও কেন?

শিক্ষকদের স্মার্ট প্রশিক্ষণ: কী ও কেন?
শিক্ষকদের স্মার্ট প্রশিক্ষণ মানে আধুনিক শিক্ষাদান পদ্ধতি, প্রযুক্তি ও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন।
- বর্তমান যুগে শিক্ষার্থীদের চাহিদা ও চ্যালেঞ্জ ভিন্ন।
- শিক্ষকদের আধুনিক প্রশিক্ষণ শিক্ষার্থীদের মানসিক ও নৈতিক বিকাশে সহায়তা করে।
ইসলামের দৃষ্টিতে:  
- শিক্ষকরা সমাজের গাইড।
- রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেই একজন শিক্ষক ছিলেন এবং শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন।

রূপরেখা: কীভাবে বাস্তবায়ন করবেন?

১. সন্তানদের জন্য:
   - নিয়মিত কাউন্সেলিং সেশন।
   - নৈতিক শিক্ষা ও সামাজিক দক্ষতা উন্নয়ন কর্মশালা।

২. অভিভাবকদের জন্য:
   - প্যারেন্টিং ওয়ার্কশপ।
   - সন্তানদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি।

৩. শিক্ষকদের জন্য:
   - আধুনিক শিক্ষাদান পদ্ধতি ও প্রযুক্তি ব্যবহারে প্রশিক্ষণ।
   - মানসিক স্বাস্থ্য ও নৈতিক শিক্ষা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন।

যদি এই উপাদানগুলো না থাকে, তাহলে কী হতে পারে?
- সন্তানদের মধ্যে মানসিক চাপ, আত্মবিশ্বাসের অভাব ও নৈতিক অবক্ষয় দেখা দিতে পারে।
- অভিভাবকরা সন্তানদের সঠিকভাবে গাইড করতে ব্যর্থ হতে পারেন।
- শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষা প্রদান করতে অক্ষম হতে পারেন।
ইসলামের দৃষ্টিতে সমাধান
- সন্তানদের লালন-পালন: সন্তানদের সঠিকভাবে লালন-পালন করা পিতামাতার দায়িত্ব।
- শিক্ষার গুরুত্ব: শিক্ষা গ্রহণ করা প্রত্যেক মুসলিম পুরুষ ও নারীর জন্য ফরজ।
- নৈতিকতা ও সহানুভূতি: রাসূলুল্লাহ (সা.) শিশুদের প্রতি দয়া ও সহানুভূতির আচরণ করতেন।

উপসংহার
সন্তানদের কাউন্সেলিং, অভিভাবকদের প্যারেন্টিং ও শিক্ষকদের স্মার্ট প্রশিক্ষণ—এই তিনটি উপাদান একটি সুস্থ, নৈতিক ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য অপরিহার্য। ইসলাম এই প্রতিটি ক্ষেত্রেই দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে, যা ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের উন্নয়নে সহায়ক। 

লেখক: প্রধান এডমিন ও কাউন্সিলর, SQSF কাউন্সেলিং সেন্টার ও স্মার্ট লাইব্রেরী; প্রধান প্রশিক্ষক, SQSF শিক্ষক-অভিভাবক  প্রশিক্ষণ কেন্দ্র; প্রধান এডমিন ও উদ্যোক্তা, ফ্যামিলি শপ লিমিটেড.কম, সিনিয়র ধর্মীয় শিক্ষক, মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, মিরপুর, ঢাকা।


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ