মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১৯ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭


চামড়া শিল্প নিয়ে দুটি কথা 


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| মুফতি জিয়াউর রহমান ||

চামড়া শিল্প অন্য সাধারণ শিল্পের মতো নয়। এটি একটি আদি শিল্প। মানবসভ্যতার সূচনার প্রায় কাছাকাছি সময় থেকে যার ব্যবহার শুরু। সুতরাং চাইলেই কেউ এই শিল্প ধ্বংস করতে পারবে না। তবে আমাদেরও হাতছাড়া করা যাবে না। 

হাদিস ও ফিকহের কিতাবাদিতে চামড়ার ব্যবহার, দাবাগাত (প্রক্রিয়াজাত) ও বিধিবিধান নিয়ে অধ্যায় রচিত হয়েছে৷ বোঝা গেলো উত্তরাধিকারসূত্রে এটি মুসলিমদের ঐতিহ্যগত শিল্প।  

ছোটবেলা দেখেছি, যতদূর মনে পড়ে আমাদের এলাকার প্রাচীনতম মাদরাসা ও আমার লেখাপড়ার হাতেখড়ি আওরঙ্গপুর মাদরাসায় চামড়া লবন দ্বারা প্রক্রিয়াজাত করে রাখা হতো। আলাদা বড় একটি ঘরই ছিল চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে রাখার জন্য। এই উদ্যোগ এখন আর নেই৷ 

শহরে না হয় জায়গা নেই, গ্রামে তো জায়গার অভাব হয় না। তাহলে কেন নিজের ঈদ কুরবানি দিয়ে তোলা চামড়া ১৫০/২০০ টাকা বিক্রি করবেন? লবনজাত করে রাখুন কয়েক মাস পরে অনেক টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। সরকার সম্ভবত এমনটাই চেয়েছিল।  

তাই আমার ভিন্ন ধাঁচের একটি পরামর্শ হচ্ছে, দীর্ঘ পরিকল্পনা না থাকলে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ এভাবে এলোপাতাড়ি চামড়া তোলা আপাতত বন্ধ রাখতে পারেন। যে টাকা চামড়া বাবদ আসে, আমাদের ছাত্ররা এরচে বেশি টাকা তারা স্বতস্ফূর্তভাবে এনে দিতে পারবে।  

আমাদের তালিবুল ইলমরা তাদের মাদরাসাকে নিজের পরিবারের মতো মনে করে। তারা বলে ও বিশ্বাস করে ‘মাদরাসা হ্যাঁ ওয়াতান আপনা’। তারা ঈদের আনন্দ কুরবানি দিয়ে সারাদিন কষ্ট করে শুধু মাদরাসার স্বার্থে। মাদরাসা লাভবান হলে তারা আনন্দ পায়। 

দিনশেষে যখন মাদরাসা নামমাত্র মূল্যে চামড়া বিক্রি হয়, তাদের কষ্ট অনেকাংশে বৃথা যায়। তারা কষ্ট পায়। যদিও সওয়াব পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত থাকে।

লেখক: দাঈ, মাদরাসা শিক্ষক ও খতিব।

এমএম/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ