বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫ ।। ১১ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ২৯ জিলহজ ১৪৪৬

শিরোনাম :
ইরান সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেছে : ট্রাম্প আদর্শ সমাজ গড়তে মাদরাসা অধ্যক্ষদের নেতৃত্ব জরুরি : ইআবি ভিসি নির্বাচনের আগে শাপলা ও জুলাই গণহত্যার বিচার করতে হবে: ইসলামাবাদী ফরিদপুর ভাঙ্গা থানায় ব্রীজ থেকে পড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু  টেলিগ্রামে প্রেম,মাদরাসা ছাত্রীকে যৌনপল্লিতে বিক্রি, গ্রেপ্তার-১   ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের ৬ গবেষণাগার ধ্বংস, অপূরণীয় ক্ষতি সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা’ ও ‘বিসমিল্লাহ’ সংযোজনের দাবি জামায়াতের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে: তেহরান প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছর করার পক্ষে বিএনপি, তবে... বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাচনে সভাপতি রিফাত, সম্পাদক ইনামুল

সারা বিশ্বে একই দিনে রোজা-ঈদ নিয়ে বাহাসে হক্কানি আলেমদের বিজয়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় ‘সারা বিশ্বে একই দিনে রোজা ও ঈদ পালন’ বিষয়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় বাহাস (তর্কবিতর্ক) অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বাহাসে স্থানীয় হক্কানি উলামায়ে কেরাম সুন্নাহভিত্তিক মতাদর্শ তুলে ধরে শক্তিশালী যুক্তি উপস্থাপন করেন এবং বিপরীত পক্ষের দাবিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেন।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) মেহেন্দিহঞ্জ উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ে এই বাহাস (বিতর্ক আলোচনা) উপজেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়।

সকালে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা মিলনায়তনে এই বাহাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে সারা বিশ্বে একদিনে ঈদ পালনপন্থী দল উপস্থিত না হওয়ায় আলোচনা কিছুটা বিলম্ব হয়। পরে বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে উপজেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বাহাস অনুষ্ঠিত হয়।
মেহেন্দিগঞ্জের বদরপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা রুহুল আমিন সৌদি আরবের সাথে মিলিয়ে রোজা ও ঈদ পালনের পক্ষে অবস্থান নেন এবং ঘোষণা দেন—তার দাবির বিপক্ষে কেউ প্রমাণ দিতে পারলে তিনি ইমামতির পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন। হক্কানি উলামায়ে কেরাম এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন এবং উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বাহাসের তারিখ নির্ধারণ করেন।

ঢাকা থেকে আগত হক্কানি উলামায়ে কেরামের দলে ছিলেন— মুফতি লুৎফুর রহমান ফরায়েজী, মুফতি সাইফুল্লাহ হাবিবি, মুফতি জুবায়ের বিন আব্দুল কুদ্দুস প্রমুখ।

অন্যদিকে একই দিনে রোজা-ঈদ পালনপন্থীদের পক্ষে ছিলেন—মাওলানা রফিকুল ইসলাম (চান্দ্র মাস বাস্তবায়ন কমিটির মহাসচিব), ড. মুফতি একে এম মাহবুবুর রহমান এবং অন্যান্য বক্তারা।

বাহাসে মুফতি লুৎফুর রহমান ফরায়েজী সৌদি আরব ও হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের সময় ব্যবধানসংক্রান্ত একটি জটিল প্রশ্ন উত্থাপন করেন। তিনি জানতে চান, ‘সৌদি আরবে যদি চাঁদ দেখা যায় এবং সেই সংবাদ হাওয়াই দ্বীপে পৌঁছায়, যেখানে তখনও রাত ৪টা চলছে, তখন তারা কীভাবে রোজা রাখবে? তাদের জন্য কোন দিন রোজা ধরবে এবং কোন দিন ঈদ হবে?’

এই প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর দিতে সমর্থ হননি সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ পালনপন্থীরা। কোরআন-সুন্নাহ ও ফিকহের আলোকে তারা সঠিক দলিল পেশ করতে ব্যর্থ হন।

বাহাস শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মর্তার পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ধর্মীয় বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করে থাকে। আমরা সেটাই অনুসরণ করব। মেহেন্দিগঞ্জে যেভাবে এতদিন রোজা ও ঈদ পালন হয়ে আসছে, সেভাবেই চলবে। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি ইমাম রুহুল আমিনকে সতর্ক করে দেন যেন ভবিষ্যতে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রদান না করেন।

উপস্থিত বিশিষ্ট উলামায়ে কেরাম ও স্থানীয় আলেমদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন— মাওলানা আব্দুল হালিম, (মুহতামিম, বরিশাল বাজার রোড মাদ্রাসা) মুফতি আবুল কালাম আজাদ, মুফতি মুনিরুল ইসলাম, মুফতি আনোয়ার হোসাইন, মুফতি আব্দুল কাদের প্রমুখ।

এই বহুল আলোচিত বাহাসে হক্কানী ওলামায়ে কেরাম দলিল-প্রমাণের ভিত্তিতে স্পষ্টভাবে বিজয়ী হন এবং জনসাধারণের মাঝে সুন্নাহভিত্তিক মত প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ