তেহরান, ১০ আগস্ট – যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় আজারবাইজান-আর্মেনিয়া শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে প্রস্তাবিত ককেশাস করিডর বাস্তবায়ন ঠেকানোর হুমকি দিয়েছে ইরান। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেইয়ের শীর্ষ উপদেষ্টা আলি আকবর ভেলায়াতি সতর্ক করে বলেছেন, “এই করিডর ট্রাম্পের করিডর হবে না, বরং তার ভাড়াটে সৈন্যদের জন্য কবরস্থানে পরিণত হবে।”
প্রস্তাবিত ‘ট্রাম্প রুট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস অ্যান্ড প্রসপারিটি’ (ট্রিপ) আর্মেনিয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে যাবে, যা আজারবাইজানকে তার নাখিচেভান এক্সক্লেভ হয়ে তুরস্কের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করবে। করিডরের উন্নয়নাধিকার যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকবে, যা জ্বালানি ও অন্যান্য সম্পদ রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ দেবে।
যদিও ইরান এই চুক্তিকে আঞ্চলিক শান্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে, তবুও সীমান্তবর্তী এলাকায় যে কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে বলে সতর্ক করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং সাম্প্রতিক ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের পর ইরানের সামরিক সক্ষমতা করিডর ঠেকানোর জন্য যথেষ্ট নাও হতে পারে।
এ বিষয়ে রাশিয়া জানিয়েছে, সমাধান আঞ্চলিক দেশগুলো মিলে বাস্তবায়ন করা উচিত, যাতে মধ্যপ্রাচ্যের মতো পশ্চিমাদের ব্যর্থ প্রচেষ্টার পুনরাবৃত্তি না হয়। অন্যদিকে আজারবাইজানের ঘনিষ্ঠ মিত্র তুরস্ক এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে।
আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার দীর্ঘ তিন দশকের সংঘাত ২০২৩ সালে নাগোর্নো-কারাবাখ পুরোপুরি আজারবাইজানের নিয়ন্ত্রণে এলে নতুন অধ্যায় শুরু হয়। শান্তিচুক্তি সইয়ের পথে একমাত্র বাধা হিসেবে আজারবাইজান উল্লেখ করেছে আর্মেনিয়ার সংবিধান থেকে নাগোর্নো-কারাবাখের ভূখণ্ড দাবির অপসারণ। এ নিয়ে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান গণভোটের ডাক দিয়েছেন, যদিও তারিখ এখনও নির্ধারণ হয়নি।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, করিডর বাস্তবায়নে এখনো বেশ কিছু অনিষ্পন্ন প্রশ্ন রয়েছে—যেমন কাস্টমস চেক, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পারস্পরিক প্রবেশাধিকারের শর্তাবলি। এসব স্পষ্ট না হলে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে।
সূত্র: রয়টার্স, জিও নিউজ
এসএকে/