মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ১ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
নারী নীতিমালা নিয়ে জাতীয় সেমিনারে শীর্ষ আলেম-রাজনীতিকরা ‘মানবিক করিডোর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায় বিএনপি : মির্জা ফখরুল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ শান্তি বয়ে আনতে পারে না: আমীরে জামায়াত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শাসন সংকট, মনোভাবের বিপর্যয় এবং সতর্কতার আহ্বান নিবরাস ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনে শিক্ষক নিয়োগ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান অধ্যাপক আখতার ফারুক রহ.-এর জীবন-কর্ম আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হেফাজতের মহাসমাবেশ সফলে সাভারে উলামা সম্মেলন অনুষ্ঠিত 

গাজায় পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল  

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ইসরায়েল পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের পরিকল্পনা করছে। হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসরায়েলের একজন মুখপাত্র। 

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে। তবে এই সময়ের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাত না ঘটলেও যেকোনো মুহূর্তে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে। এর মধ্যেই গাজায় পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মুখপাত্র ওমর দোস্ত্রি।  

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ইসরায়েলি রেডিও ৯৪এফএম-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দোস্ত্রি বলেন, 'হামাস যত বেশি সময় ধরে আপস করতে অস্বীকৃতি জানাবে, ইসরায়েল তত বেশি সুবিধা পাবে। হামাসকে চাপে ফেলতে আমাদের কাছে একাধিক কৌশল রয়েছে। আমরা যুদ্ধের জন্য সামরিক প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং গাজার পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে।'  

ওমর দোস্ত্রি আরও জানান, ইসরায়েল এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় বজায় রাখছে। তিনি বলেন, 'আমরা চাই, যত বেশি সম্ভব জীবিত বন্দিদের ফিরিয়ে আনার সুযোগ তৈরি হোক। এজন্য কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'   

এদিকে, নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের দ্বিতীয় ধাপে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি চান, চুক্তির প্রথম ধাপকেই দীর্ঘায়িত করা হোক। এরই অংশ হিসেবে গত রোববার ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশ বন্ধ করে দেয়।   

হামাস ইসরায়েলের শর্ত মেনে নিতে রাজি নয়। তাদের দাবি, যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী মেনে চলতে হবে এবং অবিলম্বে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু করতে হবে। এই পর্বে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।  

ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম 'কান' নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ইসরায়েল এক সপ্তাহের মধ্যে গাজার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং উত্তর গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণে সরিয়ে দেওয়ার মতো নীতিও থাকতে পারে।  

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের টানা আক্রমণে গাজায় প্রায় ৪৮ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।  

এছাড়া, গাজার ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অবরুদ্ধ অঞ্চলের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগের মুখে পড়েছে।   

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আহ্বান থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছিল। তিন পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দি বিনিময়, টেকসই শান্তি ও ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের লক্ষ্য নির্ধারিত রয়েছে। তবে নেতানিয়াহুর বর্তমান অবস্থান যুদ্ধবিরতি দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না, সে বিষয়ে নতুন শঙ্কা তৈরি করেছে।

এনআরএন/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ