মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ১ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
নারী নীতিমালা নিয়ে জাতীয় সেমিনারে শীর্ষ আলেম-রাজনীতিকরা ‘মানবিক করিডোর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায় বিএনপি : মির্জা ফখরুল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ শান্তি বয়ে আনতে পারে না: আমীরে জামায়াত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শাসন সংকট, মনোভাবের বিপর্যয় এবং সতর্কতার আহ্বান নিবরাস ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনে শিক্ষক নিয়োগ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান অধ্যাপক আখতার ফারুক রহ.-এর জীবন-কর্ম আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হেফাজতের মহাসমাবেশ সফলে সাভারে উলামা সম্মেলন অনুষ্ঠিত 

৩৩ বছর ধরে ছেলের অপেক্ষায় মা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ইসরাইলের কারাগারে বন্দি ৭৫ বছর বয়সি নাজাত এল আঘার ছেলে দিয়া। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরও হতাশাই জুটলো মায়ের কপালে। ছেলে ফিরে আসবে, সেই আনন্দে গাজার বিধ্বস্ত রাস্তাঘাট হাতড়ে বেড়াচ্ছিলেন নাজাত। যদি কিছু পাওয়া যায়, যা দিয়ে ছেলেকে স্বাগত জানাতে পারেন তিনি।

নাজাত বলেন, আমি গাজার ওমার আল মুখতার স্ট্রিটে হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিলাম, কীই বা দিতে পারি আমার ছেলেকে? জামা-কাপড়ে ভরে ফেলি ব্যাগ, টুথপিকও ভরেছিলাম ব্যাগে।
শনিবার ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, ইসরাইলি বন্দিদের বিনিময়ে যেসব ফিলিস্তিনি বন্দিকে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ছিল, সেই তালিকায় ছিল দিয়ার নামও।

১২ ঘণ্টা ধরে গাজার ইউরোপিয়ান হাসপাতালে বন্দি বিনিময়ের স্থানে অপেক্ষা করেন নাজাত। কিন্তু ৬২০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে ফেরত পাঠালেও নাজাতের ছেলে দিয়াকে পাঠায়নি ইসরাইল। দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাকি বন্দিদের মুক্ত করার আগে ইসরাইলি বন্দিদেরও মুক্ত করা হবে এমন নিশ্চয়তা চায় তারা।

এই খবর পাওয়ার মুহূর্ত থেকে নিজের আবেগ সামলাতে পারছেন না সদ্য ৫০ বছর পেরোনো দিয়ার মা নাজাত।

তিনি বলেন, আমি সব কিছু তার জন্য প্রস্তুত করেছি, তবুও সে মুক্তি পেল না। আমাকে তারা বাধ্য করে বাসায় ফিরে যেতে, কিন্তু আমি চাইছিলাম সেখানেই বসে থাকি, যত দিন না দিয়া মুক্তি পায়।
নাজাত এল আঘার জানান,১৯৯২ সালে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এক কর্মকর্তাকে মারার কারণে কারাবন্দি হন দিয়া এল আঘা। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরাইলি কারাবাসে থাকা ১৮ ফিলিস্তিনি বন্দির একজন তিনি।

এত দীর্ঘসময় বন্দি থাকতে থাকতেই তিনি হারান নিজের বাবা ও বোনকে। কারাগারে তাকে ডাকা হয় ‘বন্দিদের অধ্যক্ষ’ নামে। হামাস সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে ইসরাইলি বন্দিদের ফেরত পাঠিয়েছে, তাকে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী বলে আখ্যা দিয়েছে। ইসরাইলের মতে, এভাবে ফেরত পাঠানো বন্দিদের জন্য রীতিমতো অসম্মানজনক ছিল।

ভিড়ের মাঝে স্টেজের ওপর বন্দিদের তুলে তারপর তাদের ফেরত পাঠানো হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বন্দিদের দেহাবশেষ থাকা কফিনও ভিড়ের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন ধাপের যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, আরও ৬৩ জন বন্দি থাকার কথা গাজায়, যাদের মুক্তি দেওয়ার কথা আছে এই চুক্তিতে। তাদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন বন্দির জীবিত থাকার কথা জানা গেছে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় আশা ছাড়ছেন না নাজাত। ইসরাইলি হামলায় ভেঙে পড়া তার বাসার গায়ে এখনো ঝুলছে একটি সাইনবোর্ড, যার গায়ে লেখা ‘এটা বন্দি দিয়া জাকারিয়া এল আঘার বাসস্থান।’

এনআরএন/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ