শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫ ।। ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ১৭ মহর্‌রম ১৪৪৭

শিরোনাম :
চাঁদপুরে হামলার শিকার সেই ইমাম বেঁচে আছেন, শঙ্কামুক্ত চাঁদাবাজি নয়, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বেই খুন হন সোহাগ রাজসাক্ষী হওয়ার শর্তে চৌধুরী মামুনকে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমা ইসলামী আন্দোলনের গোলটেবিলে অন্য দলের যারা যোগ দিলেন  মিটফোর্ডে নৃশংস হত্যা, অন্তর্বর্তী সরকারের চরম ব্যর্থতা: যুব মজলিস জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন রক্ষায় পিআরই একমাত্র সমাধান: পীর সাহেব চরমোনাই মিটফোর্ডে পাথর মেরে বর্বরোচিত হত্যার প্রতিবাদে চান্দিনায় বিক্ষোভ  ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় নিহত ১৭ ফিলিস্তিনি খানকায়ে আহমদিয়ার ২৭তম আধ্যাত্মিক কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডে দুই এজাহারনামীয় আসামি গ্রেপ্তার: জানাল র‍্যাব

বর্তমানে ‘উলূমুল হাদিস’-এর প্রয়োজনীয়তা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| মুফতি ওমর ফারুক আনোয়ারী ||

উলূমুল হাদিসের প্রয়োজনীয়তা সব সময়ই বিদ্যমান ছিল। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে এর প্রয়োজনীয়তা আরও বহুগুণে বেড়ে গেছে। আজকের যুগে এমন কিছু ভয়াবহ ফিতনা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে, যেগুলোর মোকাবেলায় উলূমুল হাদিসের বিকল্প নেই।

এই ফিতনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ওরিয়েন্টালিস্ট এবং লা-মাযহাবী গোষ্ঠীর ফিতনা। ওরিয়েন্টালিস্টদের মূল উদ্দেশ্য হলো কোরআন ও সুন্নাহর অপব্যাখ্যা করা এবং ইসলামের ধারক ও বাহক সাহাবা, তাবেঈন ও আকাবির আসলাফদের সম্পর্কে মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে সাধারণ মুসলমানদের আস্থা নষ্ট করা।

অন্যদিকে, আমাদের বর্তমান সমাজে লা-মাযহাবী ফিতনা এমন ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা কল্পনারও বাইরে। শহর, বন্দর, গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চল— সর্বত্র এই ফিতনার বিস্তার ঘটেছে। এরা যুগ যুগ ধরে কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে গড়ে ওঠা মুসলমানদের কালিমা, নামাজ ও দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি আমলকেই প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।

হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় কুরাইশ মুশরিকরা ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ লিখতে আপত্তি করেছিল। অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হলো, বর্তমান তথাকথিত আহলে হাদীস গোষ্ঠী সহিহ বুখারী ও সহিহ হাদীসের অনুসরণ করার নামে কালিমার এই গুরুত্বপূর্ণ অংশটিকে অস্বীকার করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে।

আজ পর্যন্ত এমন কোনো দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়নি, যেখানে তারা কোনো নামাজবিমুখ ব্যক্তিকে নামাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। বরং উল্টো চিত্রই দেখা যায়— তারা মসজিদে গিয়ে নিয়মিত নামাজ আদায়কারী মুসল্লিদেরকেই বলে বসে, “আপনার নামাজ সহিহ হাদিস মোতাবেক হয়নি।”

হাদিসের সনদ ও মতনের যাচাই-বাছাইয়ে মুহাদ্দিসিনদের গঠনমূলক উসূল ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কায়দা-কানুন রয়েছে। যুগ যুগ ধরে সেসব নীতিমালার ভিত্তিতেই হাদিস গ্রহণ করা হয়ে আসছে। কিন্তু তথাকথিত আহলে হাদিস মুহাদ্দিসিনদের সর্বসম্মত নীতিমালা বাদ দিয়ে নিজস্ব মনগড়া মতবাদের ভিত্তিতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অসংখ্য হাদিস কে নিক্ষেপ করছে দুর্বল ও জাল হাদিসের তালিকায়। 

এই সকল ফিতনার মোকাবেলায় উলূমুল হাদিসের গুরুত্ব অপরিসীম। দুঃখজনকভাবে, বর্তমান তালেবে ইলমরা এসব ভ্রান্ত মতাদর্শের মুখোশ উন্মোচনে হিমশিম খাচ্ছে। এর প্রধান কারণ হলো— হাদিসের সনদ, মতন ও রাবী যাচাই-বাছাইয়ের পদ্ধতি সম্পর্কে তাদের অজ্ঞতা।

এই দক্ষতা অর্জনের জন্য এবং সঠিকভাবে হাদিস বিশ্লেষণ ও প্রতিরক্ষা করার লক্ষ্যে উলূমুল হাদিসের গভীর অধ্যয়ন ও চর্চা অত্যন্ত জরুরি।

লেখক: সিনিয়র মুহাদ্দিস, জামিয়া শায়খ যাকারিয়্যা, কাঁচকুড়া, উত্তরখান, ঢাকা 

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ