বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫ ।। ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ ।। ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
যেসব আমলে নবীজি সা. এর স্বপ্ন দর্শনের আশা করা যায় দিঘলিয়ায় হাতপাখা প্রতীকের উঠান বৈঠক ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৫: বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ নামধারীদের বিরুদ্ধে উলামায়ে কেরামের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: জাতীয় উলামা কাউন্সিল গাজায় ইসরায়েলের হামলায় কাতারের নিন্দা চট্টগ্রামে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে গাড়ি ছিটকে পড়ে পথচারী নিহত, আহত ৪ দক্ষিণ বাসাবো বালুর মাঠে শুরু হলো জাতীয় তাফসীরুল কুরআন মাহফিল আগামী ৩-৪ কার্যদিবসের মধ্যে গণভোট আইন করা হবে আন্দোলনরত ৮ দলের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচিতে আংশিক পরিবর্তন বিশ্ব পাইলস দিবস : কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে জটিলতা—সমাধানে সচেতন ও পরিকল্পিত জীবনধারা

নামধারীদের বিরুদ্ধে উলামায়ে কেরামের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: জাতীয় উলামা কাউন্সিল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বদদ্বীনি, কুফরি ও ভ্রান্ততার বিরুদ্ধে উলামায়ে কেরামকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে যারা মুসলমান নাম নিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে— তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

তিনি আজ (২০ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে “জাতীয় উলামা কাউন্সিল বাংলাদেশ”-এর আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত “জাতীয় উলামা সম্মেলন–২০২৫”-এ প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। সম্মেলনে দেশের শীর্ষ আলেম–ওলামা, গবেষক, দাঈ এবং বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

জাতীয় উলামা কাউন্সিলের সভাপতি ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন— বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক, মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপুর), হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা সালাহুদ্দীন নানুপূরী, মাওলানা মুশতাক আহমদ (পীর সাহেব খুলনা) প্রমুখ।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক বলেন, আমরা যারা ইসলামের রাজনীতি করি— আমরা দলীয়ভাবে কর্মপন্থা ঘোষণা ও বাস্তবায়ন করি। তবে ইসলামী রাজনৈতিক দলের বাইরে যারা আছেন— তারাও যেন বিশেষ স্বার্থে একসাথে কাজ করতে পারেন। এর ব্যত্যয় যেন আমাদের পক্ষ থেকে না ঘটে। আমি এবং আমার দলের অনুসারীরা এ বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক থাকবো ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, ইসলামী রাজনীতিতে সবসময় প্রতিপক্ষের মুখোমুখি দাঁড়ানো যায় না; সঠিক সময়ের অপেক্ষা করে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভূমিকা রাখতে হয়। আজ ইসলামী রাজনীতির সোনালি সময় চলছে। আমরা যদি সুযোগ কাজে না লাগাই, তাহলে সামনে বড় ধরনের ভোগান্তি তৈরি হবে। ইনশাআল্লাহ আগামীতে কোনো জাতীয় বা রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত উলামায়ে কেরাম ছাড়া এই দেশে গ্রহণ করতে দেওয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় উলামা কাউন্সিল যেন একটি সর্বজনীন ঐক্যের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করতে পারে। শাইখুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক, খতিব ওবায়দুল হক, কাশিয়ানি হুজুর— উনাদের স্বপ্ন ছিল এদেশে উলামায়ে কেরামের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম থাকবে। জাতির আস্থাভাজন হিসেবে মাওলানা মাহফুজুল হক সেই দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করবেন, এ বিশ্বাস আমাদের আছে।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, আমরা গত পনের–ষোলো বছর ফ্যাসিবাদের নিষ্পেষণে নানা প্ল্যাটফর্মে ঐক্য বজায় রেখে কাজ করেছি। কিন্তু ৫ আগস্ট–পরবর্তী পরিস্থিতিতে পারস্পরিক মতভিন্নতা দৃশ্যমান হয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে চেষ্টা করবো— মতভিন্নতা থাকার পরও ঐক্য ও সংহতির ভিত্তিতে সামনে যে সুবর্ণ সুযোগ এসেছে তা কাজে লাগাতে।

তিনি আরও বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অনেক আলেম–ওলামা অংশগ্রহণ করবেন। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই— ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনে উলামায়ে কেরামের পরস্পরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কাম্য নয়।’ এ বিষয়টি কেন্দ্র করে জাতীয় উলামা কাউন্সিল একটি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে ইনশাআল্লাহ, যাতে উলামা সমাজ বিভক্ত না হয়ে বরং জাতীয় স্বার্থে ঐক্য বজায় রাখে।

খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ কমিটির আমীর মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপুর) বলেন, আমরা প্রয়োজনে বাতিলের বিরুদ্ধে একসাথে লড়তে লড়তে মরবো, কিন্তু বিভক্ত হবো না ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, ১৫ নভেম্বরের কাদিয়ানীবিরোধী আন্দোলন শেষ হয়নি; শুরু হয়েছে মাত্র। সরকারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে; পরেরবার আর সুযোগ দেওয়া হবে না।

হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান তরুণদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের ইলম ও যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। পূর্বসূরিরা যোগ্যতার মাধ্যমে বড় হয়েছেন। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো, যারা কাজ করতে চায় তাদের বাধা দেবো না। আমরা নিজেরা নিজেদের শত্রু হবো না, ইনশাআল্লাহ।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ বলেন, ইসলামী রাজনীতিতে কখনো কখনো দ্বিধা ও সংকট তৈরি হয়। তখন করণীয় বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি আশা রাখি— সংকটময় পরিস্থিতিতে জাতিকে সঠিক পথ দেখাতে উলামা কাউন্সিল অভিভাবকের ভূমিকা পালন করবে।

জাতীয় উলামা কাউন্সিলের মহাসচিব মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী বলেন, ইতিহাসে দেখা যায়— যখন আল্লাহর অবাধ্যতা সমাজে ছড়িয়েছে, তখন উলামায়ে কেরাম লাগাম টেনে ধরেছেন। সম্রাট আকবরের সময় মুজাদ্দিদে আলফে সানী রহ. তৌহিদবিরোধী দ্বীন–ই–ইলাহী বাতিল করে দেন। শাহ ওয়ালিউল্লাহ রহ. দারসুল হাদীসের মাধ্যমে জাতিকে জাগ্রত করেন। শায়খুল হিন্দ রহ. ইংরেজবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। সেই ধারায় জাতীয় উলামা কাউন্সিল কাজ করবে ইনশাআল্লাহ।

মুফতি কিফায়াতুল্লাহ আযহারী, মাওলানা আবুল কাসেম আশরাফী ও মাওলানা আবু মুহাম্মাদ রাহমানীর যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের অভিভাবক পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ইসমাঈল নুরপুরী, সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হুসাইন রাজী,

তাহাফ্ফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী, মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা আনাস (ভোলা), মাওলানা শাব্বির আহমাদ রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি বশির উল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে  আমীর মাওলানা মজিবুর রহমান হামেদী ,

বসুন্ধরা মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি এনামুল হক,  মিফতাহুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আহমাদ আলী (মোমেনশাহী), বিশিষ্ট লেখক মাওলানা যায়নুল আবেদীন, জাতীয় উলামা কাউন্সিলের সহ-সভাপতি মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা মোহাম্মাদ বিন হাফেজ্জী, ইসলামবাগ মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম কাসেমী, মাওলানা শাহ মমশাদ, মাওলানা লুৎফুর রহমান ফরায়েজী, মাওলানা ইলিয়াছ হামেদী, মাওলানা দ্বীন মুহাম্মাদ আশরাফ প্রমুখ।

এলএইস/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ