বৃহস্পতিবার, ০১ জানুয়ারি ২০২৬ ।। ১৬ পৌষ ১৪৩২ ।। ১২ রজব ১৪৪৭


দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির অনন্য স্থান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এ মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের মধ্যে ধর্মীয় সম্প্রীতির অনন্য একটি স্থান। বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম-কর্ম অবাধে সম্পাদন করছেন এবং বাংলাদেশের সংবিধান সে অধিকার নিশ্চিত করেছে।

গত বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্যোগে ওয়াশিংটন ডিসিতে তিন দিন দিনবাপী ‘ধর্মীয় স্বাধীনতায় অগ্রগতি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী দিবসে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেছেন, সারাবিশ্বে টেকসই শান্তি ও স্থিতির স্বার্থেই সকলকে সংকল্পবদ্ধ হতে হবে সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ সর্বক্ষেত্রে জাগ্রত রাখতে। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নয় মানবতাকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং তাহলেই সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন-পরিক্রমা ত্বরান্বিত হবে।

এ ধরনের আন্তর্জাতিক সমাবেশ শুধু ওয়াশিংটন ডিসিতে নয় আঞ্চলিক পর্যায়েও করার পরামর্শ দিয়ে ড. মোমেন বলেছেন, শীঘ্রই বাংলাদেশ সেই সম্মেলনের হোস্ট করতে আগ্রহী।

এসময় তার বক্তব্যে ড. মোমেন বলেন, সকল ধর্ম এবং জাতি-বিশ্বাসের মানুষ কোন ধরনের ভয়-ভীতি ছাড়া নিরাপদে মর্যাদার সাথে জীবন-যাপন করতে সক্ষম হয়। এমন একটি পরিবেশ তৈরীর জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তরিক এ উদ্যোগের অংশিদার হতে পেরে বাংলাদেশও গৌরববোধ করছে।

বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানও সব সময় সকল ধর্মবিশ্বাসী মানুষের সমঅধিকার নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা সে পথেই হাঁটছেন অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশে নতুন একটি আইন চালু করা হয়েছে। সে অনুযায়ী কোন ধর্মবিশ্বাসী মানুষ বা সম্প্রদায়কে হেয়-প্রতিপন্ন করা অথবা ঐ সম্প্রদায়ের ওপর হামলা বা বর্বরতা চালালে সেজন্যে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা হয়েছে। এটি করা হয়েছে সামাজিক-ধর্মীয় সম্প্রীতি সমুন্নত রাখার স্বার্থে। শুধু তাই নয়, মাদরাসা শিক্ষাকেও আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে। এজন্যে চলতি বছরের বাজেটে বরাদ্দ করা হয়েছে ৯০০ মিলিয়ন ডলার তথা সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ হচ্ছে মানবিকতার উর্বর ভূমি। মিয়ানমার জান্তার বর্বরতার ভিকটিমরা প্রাণের ভয়ে মাতৃভূমি ছেড়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়লে তাদেরকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। নানা প্রতিবন্ধকতা সত্বেও বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় প্রদানের ঘটনাটি আজ কারো অজানা নেই। এভাবেই মানবিকতাকে প্রাধান্য দেয় বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট তার মূল বক্তব্যে দেশে দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতায় ক্রমান্বয়ে অগ্রগতির সংবাদে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র বলিষ্ঠ ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে বলে পুনরায় উল্লেখ করে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেন, এহেন বর্বরতায় দায়ীদেরকেও কাঠগড়ায় সোপর্দ করতে সোচ্চার থাকবো আমরা।

উল্লেখ্য, ৪০ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ১০৬ দেশের নীতি-নির্ধারক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ, মসজিদ-মন্দির-গীর্জার কর্ণধার, লেখক-মানবাধিকার কর্মীরা এই সম্মেলনে অংশ নেন। এটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর আহ্বানে ধর্মীয় সম্প্রীতি জাগ্রত রাখতে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক এ্যাম্বাসেডর এ্যাট লার্জ ব্রাউনব্যাকসহ পদস্থ কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন।

-এএ


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ