মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৫ কার্তিক ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
জামায়াতের রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার প্রশ্নই আসে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ময়মনসিংহে ইসলামি বইমেলা শুরু ১৩ নভেম্বর ভারতের পুনে দুর্গে নামাজ আদায় করা নিয়ে দেশভর তোলপাড় ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের আরও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে: শায়খে চরমোনাই কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত 'বাংলাদেশ' নামের পত্রিকা : স্বাধীনতার ৩৩ বছর আগের এক ঐতিহাসিক দলিল ভারতের সঙ্গে ১০ চুক্তি বাতিল হওয়ার খবরটি ভুল : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নাতির কাছে কায়দা শিখছেন অভিনেতা মিশা সওদাগর জামায়াত সেক্রেটারি পরওয়ারের বক্তব্য ঔদ্ধত্যপূর্ণ: এনসিপি ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস এ৩৩০ সম্পন্ন হলো আবু ত্বহা ও সাবিকুন নাহারের তালাক

তুর্কির কাসেম নানুতবি মাহমুদ আফেন্দির শিষ্য এরদোগান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি খালেদ হাসান জুবায়ের কাসেমি

১৮৫৭ সালের বৃটিশ বিরোধী যুদ্ধের পর যখন দেওবন্দ শহরে ছাত্তা মসজিদে একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়, সেই মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন হজরত কাসেম নানুতবি রহ. ও তার সঙ্গী উলামায়ে কেরাম।

আর প্রথম উস্তাদ ছিলেন মোল্লা মাহমুদ রহ., প্রথম ছাত্র ছিলেন মাহমুদ হাসান দেওবন্দি রহ.। যাকে ‘শায়খুল-হিন্দ’ বলা হয়।

ইতিহাস সাক্ষী, ডালিম গাছের নিচে এক শিক্ষক এক ছাত্রকে উলুমে নববির জ্ঞান চর্চার যে ধারা চালু করেছিলেন আজ তা সারা পৃথিবীব্যাপী বিস্তৃত ও সমাদৃত।

মাহমুদ আফেন্দিই তুর্কির কাসেম নানুতবি

তুর্কিতে যখন মোস্তাফা কামাল আতার্তুকের মাধ্যমে উসমানি খেলাফত ধ্বংস করা হল, ধর্মীয় সব কাজে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হল, ধর্মীয় শিক্ষা ও আরবি ভাষা শিক্ষা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল তখন কিছু আলেম গোপনে গোপনে গ্রামে গঞ্জে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গাছের নিচে বাচ্চাদের কুরআন শেখাতেন।

যখন তারা সৈন্যদের আসতে দেখতেন তখন তারা সাথে সাথে কৃষিকাজে লেগে যেতেন এবং সৈন্যরা ভাবত এরা কৃষি কাজ করছে। এই ছাত্রদের মধ্যে মাহমুদ আফেন্দি একজন (জন্ম: ১৯২৯) ছিলেন।

তিনি এ রকম কষ্ট করে দীনি ইলম অর্জন করেন। পরে তিনি নিজেও গ্রামেগঞ্জে এভাবে ছাত্রদের দীন শেখাতেন। তার শিষ্যরা ও এভাবে দীন শেখানোর কাজে লেগেছেন।

তার দুইজন শিষ্য এভাবে দীন শেখানোর সময় সৈন্যদের হাতে ধরা পড়ে যাওয়ায় তাদের শহিদ করে দেওয়া হয়। পরে তিনি এ মিশন নিয়ে শহরমুখী হন।

সেখানে একটি পুরাতন মসজিদ ছিলো। তিনি সেখানে অবস্থান করা শুরু করলেন এবং দীনি ইলম শিক্ষা দেওয়া শুরু করেন। চল্লিশ বছর ধারাবাহিক এভাবে মানুষদের দীন শেখালেন।

কিন্তু প্রথম আঠারো বছর পর্যন্ত কেউ তার পেছনে সৈন্যদের ভয়ে প্রকাশ্যে নামাজ পড়ার সাহস করতে পারেনি। তবে সময়ের সাথে সাথে কিছু কিছু মানুষ সাহস করে তার পেছনে জামাতে নামাজ পড়া শুরু করে।

Related image

এ বুজুর্গদের মেহনতের ফলে একটা সময় সব মসজিদে আজানের সাথে সাথে লক্ষ লক্ষ মানুষ সমবেত হয়ে একসাথে নামাজ আদায় করেন।

নিষেধাজ্ঞার সময় শায়খ মাহমুদ আফেন্দি ছাত্রদের আঙুলের ইশারায় সরফ-নাহু শেখাতেন এবং হাতের ইশারায় মাসআলা মাসায়িল শেখাতেন। এখনও তুরস্কে কিছু জায়গায় এ পদ্ধতিতে শিক্ষা দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে বিস্তারিত দেখুন- মাওলানা আবু লুবাবা কর্তৃক লিখিত বই "ترک نادان سے ترک دانا تک"।

শায়খ মাহমুদ আফেন্দির আকিদাই হাফেজ রজব তাইয়্যেব এরদোগানের আকিদা। আর শায়খ মাহমুদ আফেন্দির আকিদা তা যা হুজ্জাতুল ইসলাম কাসেম নানুতবির আকিদা ছিল।

শায়খ মাহমুদ আফেন্দি হজরত কাসেম নানুতবি রহ.কে চৌদ্দশ শতাব্দীর ‘মুজাদ্দিদ’ বলেছেন।

তিনি তুর্কি ভাষায় আঠারো খণ্ডের বিশাল এক কুরআনে কারিমের তাফসির লেখেন। যার নাম ‘রুহুল ফোরকান’।

এ কিতাবের চতুর্থ খণ্ডের ৭২৪ পৃষ্ঠাতে তিনি মাওলানা আশরাফ আলি থানভি রহ. কে ‘শায়খুল মাশায়েখ’ ও শায়খুল হাদিস যাকারিয়া কান্দলভীকে ‘ইমাম’ ‘মুহাদ্দিস’ও ‘আল্লামা’ উপাদিতে ভূষিত করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে শায়খুল ইসলাম শায়খ মাহমুদ আফেন্দিকে তুর্কিতে দীনি শিক্ষা প্রচার প্রসারে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘ইমাম কাসেম নানুতবি এওয়ার্ড’ দ্বারা পুরষ্কৃত করা হয়।

তুরস্কে অনুষ্ঠিত উলামাদের এক সম্মেলনে সায়্যিদ আরশাদ মাদানি বলেন, শায়খ মাহমুদ আফেন্দি হলেন তুর্কির কাসেম নানুতবির।

এরদোগানের বিজয়ে বাংলাদেশের ইসলামপন্থীদের শিক্ষণীয় কী?

-আরআর


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ