বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৭ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
১৬ মাসে কোরআনের হাফেজ কক্সবাজারের ওবায়দুল করিম আমরা কোরআন কে জাতীয় সংসদে নিয়ে যেতে চাই: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে শনিবার বিক্ষোভ করবে জামায়াত  প্রশাসনকে দ্রুততার সাথে বস্তুনিষ্ঠ ব্যবস্থা নিতে হবে : ইসলামী আন্দোলন আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে মানিকগঞ্জ জেলায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  যারা আমাকে অপহরণ করেছে তাদের বাংলাদেশি মনে হয়নি জীবন দিলেও যদি চরিত্র না বদলায় তাহলে ভাগ্যও বদলাবে না: শায়খে চরমোনাই শ্রীমঙ্গলে বেওয়ারিশ কুকুরের আতঙ্ক: এক ঘণ্টায় তিন শিশু আহত ‘দুঃখজনক হলো ইসলামি অঙ্গন থেকে শক্তিশালী মিডিয়া গড়ার উদ্যোক্তা আমরা পাইনি’ ২৪ এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি: সারজিস

আব্বাকে শেষ বিদায় জানাতে পারলাম না!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

পলাশ রহমান, ইতালি থেকে

মার্চের ৫ তারিখ সকাল বেলা, নাইট শিপ্টের কাজ শেষ করে বাসায় ঢুকেছি। তখনো জামা বদল করা হয়নি। দেশ থেকে ফোন এলো। ফোন করেছেন আমার ভাই, বাবু। জড়ানো গলায় কোনো রকমে উচ্চারণ করলেন, আব্বা আর নেই। আমি খুব স্বাভাবিকভাবে জিজ্ঞেস করলাম, কখন? উত্তর দিলেন- এই মাত্র।

তখন স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টার মতো বাজে। আমি ফোন রেখে দিলাম। বেশ শান্তভাবে নাস্তার টেবিলে এসে বসলাম। আমার ভেতরে সে সময় কেমন অনুভূতি হচ্ছিলো তা এখন আর মনে নেই। কোনোভাবেই মনে করতে পারি না। সম্ভবত ছোট একটা ব্লাক আউট হয়েছিল। শুধু এটুকু মনে করতে পারি- আমার একটুও কান্না পেলো না।

লন্ডনে ডাবলু ভাইকে ফোন করলাম। তার ফোন বিজি। বুঝতে পারলাম খবর তার কাছেও পৌঁছে গেছে। টেবিলের উপরে রাখা গ্লাস থেকে কিছুটা পানি খেলাম। এর মধ্যে ভাবী ফোন করলেন। বললাম, শুনেছেন? তিনি কোনো উত্তর দিলেন না। ভিডিও কলে তার চেহারা দেখে বুঝতে পারলাম হয়তো আমার আগেই খবর পেয়েছেন।

জিজ্ঞেস করলাম ভাই কোথায়? তিনি ছোট করে উত্তর দিলেন, দেশে কথা বলছে।

আমি ফোন রেখে দিলাম। একটু পরে ভাই কল করলেন। হাউমাউ করে কাঁদছেন আর বলছেন, সব শেষ। আর কেউ কোনো দিন কিছু বলবে না। এখন থেকে যার যা ইচ্ছা করতে পারবি, কেউ কিচ্ছু জিজ্ঞেস করবে না। কাউকে জবাবদিহি করতে হবে না।

অনেক আগে থেকেই নিজেকে তৈরি করে রেখেছিলাম- আব্বা-মা মারা গেলে আমি কাঁদবো না। চোখের পানি ফেলবো না। শান্ত থাকবো। স্বাভাবিক আচারণ করবো। কাউকে সান্তনা দেয়ায় সুযোগ দিবো না।

আমার আত্মবিশ্বাস ছিল আমি পারবো। ভাই’র সাথে কথা বলার আগে পর্যন্ত পেরেছি। কিন্তু তার কান্না দেখে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। আমি হেরে গিয়েছি। আর তখনি বুঝতে পেরেছি সত্যিই আব্বা নেই। আর কোনো দিন তাকে দেখতে পাবো না। কথা হবে না।

দাফন করা পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি মুহূর্ত ভিডিও কলের মাধ্যমে আব্বাকে দেখেছি। বন্ধু রিপন এবং ভাইপো তুষার পুরোটা সময় আমার সাথে অনলাইনে ছিল। মার সাথে কথা বললাম। আত্মীয় স্বজনদের দেখলাম। আর বার বার দেখলাম আব্বার ঘুমন্ত মুখটা।

দেশে ৩ সপ্তাহ থাকার পর ফেব্রুয়ারির ১৩ তারিখে ইতালি ফিরে আসি। দেশ থেকে ফেরার মাত্র ২০ দিনের মাথায় আব্বা চলে গেলেন। দেশে যেতে পারলাম না। তাকে শেষ বিদায় জানাতে পারলাম না। যে টানে প্রতি বছর দেশে ছুটে যেতাম তার একটা বাঁধন ছিড়ে গেলো। মনের অজানতেই শুরু হলো আর একটা ফোন কলের অপেক্ষা।

বাবার মৃত্যুর পর কোনো বিরোধ লাগলে তা নিষ্পত্তির জন্য পারিবারিক কমিটি করে গেছেন


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ