জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেছেন, ‘গৌরবগাঁথা ইতিহাস ধারণ করে আমরা রাজনীতিতে এসেছি। ইনসাফভিত্তিক রাজনীতির মাধ্যমে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করতে জমিয়তের সুদীর্ঘ পথচলা। সেই পথচলাকে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নিয়ে যেতে যুগে যুগে জমিয়ত ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করে আসছে। তিনি নেতাকর্মীদের আরো সতর্ক ও সোচ্চার হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আলেমদের জাতীয় সংসদে প্রেরণ করতে হবে।’
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সুনামগঞ্জ-৪ আসনে জমিয়ত মনোনীত প্রার্থী মাওলানা মুখলিছুর রহমান চৌধুরীর সমর্থনে আয়োজিত ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে মাওলানা আফেন্দী সুনামগঞ্জ জেলা জমিয়তের সহসভাপতি শহীদ মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজিনগরীর কবর জিয়ারত করে তাঁর পরিবারের খোঁজ খবর নেন। এবং মামলার বর্তমান অবস্থা অবগত হয়ে তিনি বলেন আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে পুলিশের ধীরগতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। সেখানে কোনো ধরনের গাফলতি বা শৈথিল্য প্রদর্শন ইনসাফের দৃষ্টিতে অপরাধ। আমি আশাকরি দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আরো যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
সম্মলনে তিনি আরো বলেন, ‘ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে আলেমদের নেতৃত্ব আরো শক্তিশালী করতে হবে।’ এ সময় তিনি সুনামগঞ্জ-৪ আসনে জমিয়ত মনোনীত প্রার্থী মাওলানা হাফিজ মুখলিছুর রহমান চৌধুরীর হাতে খেজুর গাছ প্রতীক তুলে দিয়ে তাঁকে বিজয়ী করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জমিয়তের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনে জমিয়ত মনোনীত প্রার্থী ও ইউরোপ জমিয়তের প্রচার সম্পাদক প্রিন্সিপাল মাওলানা হাফিজ মুখলিছুর রহমান চৌধুরী।
সুনামগঞ্জ সদর পৌরসভা ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা জমিয়তের যৌথ উদ্দ্যোগে আয়োজিত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন পৌরসভার সভাপতি মাওলানা রুকন উদ্দীন ও মাওলানা আবুল কাসেম সাইদ।
সদর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রমজান হোসাইন, পৌরসভার সাধারণ সম্পাদক মুফতি মুবাশ্বির আলী ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আমির হোসাইনের যৌথ পরিচালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী, জেলা জমিয়তের সহসভাপতি মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম, সহসভাপতি মাওলানা নুরুজ্জামান কাসেমী, জেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা তৈয়্যিবুর রহমান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা রফিক আহমদ উলাশনগরী, ইমাম মুয়াজ্জিন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওঃ আব্দুর রকিব, জমিয়তনেতা মাওলানা নুর হোসাইন, জেলা জমিয়তের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুখতার হোসাইন চৌধুরী, শান্তিগঞ্জ উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল হাই, জেলা জমিয়তের অর্থ সম্পাদক মাওলানা নাজমুল ইসলাম জাহিদ, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আরশাদ নোমান, জগন্নাথপুর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুতিউর রহমান, যুবনেতা মাওলানা হাফিজ ত্বোহা হোসাইন, ছাত্রনেতা সোহাইল আহমদ ইয়াহইয়া প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া বলেন, ইসলামের নামে রাজনীতি করে যারা বলে পর্দা মেন্ডেটরি নয়, ফ্যাসিস্ট বলতে বিব্রতবোধ করি, যারা নিজেদের সুবিধামতো ইসলামকে ব্যবহার করে নতুণ ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তাঁদেরকে দেশবাসী কখনো গ্রহণ করবেনা। তিনি উলামায়ে দেওবন্দের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন রাজনীতির ময়দানে জমিয়ত কখনো ভুল সিদ্ধান্ত নেয়নি। আগামিতেও দেশ জাতি ও ইসলামি স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে জমিয়তের পলিসি গ্রহণ করবে।
যোগ্য প্রার্থী বাছাই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা ভোটে নির্বাচিত হয়ে জনগণকে ছেড়ে বিদেশে বেগমপাড়া বানিয়েছে, তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। আগামী নির্বাচনে খেজুর গাছে ভোট দিয়ে মাওলানা মুখলিছ চৌধুরীকে বিজয়ী করার জন্য মাঠে পরিকল্পিতভাবে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান।
প্রধান বক্তা সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা মুখলিছুর রহমান চৌধুরী বলেন, ফ্যাসিস্টের পতনে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আমি বিলেত থেকে এসেছি একজন সেবক হিসেবে জনগণের পাশে দাঁড়াতে। নির্বাচিত হলে ঘোষিত দশ দফা বাস্তবায়ন করে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত এলাকা গড়ে তুলব।
আরএইচ/