বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫ ।। ১০ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ২৯ জিলহজ ১৪৪৬

শিরোনাম :
খাট সরাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে স্কুলছাত্রের মৃত্যু   বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগর উত্তর-এর মাসিক নির্বাহী বৈঠক অনুষ্ঠিত জামায়াতের আমিরের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক হাতপাখায় ভোট দিলে দেশের বিজয় হবে: শায়খে চরমোনাই নির্বাচনের আগে সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে : নূরুল ইসলাম বুলবুল এবার লবণ ছাড়াই সংরক্ষণ করা যাবে পশুর চামড়া  যুদ্ধবিরতিকে ‘বিজয়’ হিসেবে দেখছে ইরান, চলছে উদযাপন ২৮ জুন সংস্কার ও পিআর পদ্ধতির দাবিতে গণজোয়ার সৃষ্টি হবে: ইসলামী আন্দোলন প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পেল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইসরায়েলি হামলায় ইরানে নিহত ৬১০, আহত প্রায় ৫০০০

নির্বাচনের আগে সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে : নূরুল ইসলাম বুলবুল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, শহীদ ও আহতদের পরিবারের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হলে নির্বাচনের আগেই রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় নতুন বাংলাদেশের প্রত্যাশা পূরণ হবে না, বরং নতুন করে দেশে ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাজধানীর গেন্ডারিয়া সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্রে ঢাকা-৬ আসনের জামায়াতের ভোটকেন্দ্রভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্বশীল সমাবেশ ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামের প্রথম দাবি ছিল শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা। যদিও সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, কিন্তু শহীদদের নিয়ে প্রকাশিত গেজেটে অনেক শহীদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি জানান, জুলাই শহীদদের স্মরণে জামায়াতে ইসলামি নিজস্ব উদ্যোগে শহীদ পরিবারকে নগদ ২ লাখ টাকা করে উপহার দিয়েছে এবং শহীদদের আত্মত্যাগের ইতিহাস সংরক্ষণে ১০ খণ্ডের ১৫০০ পৃষ্ঠার বই প্রকাশ করেছে। এসব উদ্যোগ দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পরিচালিত হয়েছে।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জনগণ এবার আর শুধু প্রতীক দেখে ভোট দেবে না। জনগণ বুঝে শুনে ভোট দেবে— কে হত্যা করেছে, কে ধর্ষণ করেছে, কে লুটপাট-চাঁদাবাজি করেছে, তা এখন দিবালোকের মতো পরিষ্কার। তরুণ সমাজ এখন বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারের অন্যতম দায়িত্ব হলো অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা জনগণের হাতে তুলে দেওয়া। জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। তবে কেউ কেউ শুধু নির্বাচনের কথা বলছে, অথচ রাষ্ট্র সংস্কার কিংবা গণহত্যার বিচার চায় না। এরা আওয়ামী লীগের মতোই ফ্যাসিবাদের পথেই হাঁটছে।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে মানুষের নিরাপত্তা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এনে মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করা হবে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও দেশের মানুষ নিরাপদ নয়। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর সবাই অনিরাপত্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে এই অবস্থা পাল্টাবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বিগত ৫৩ বছর দেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালিত হয়েছে মানুষের তৈরি মতবাদে, যার কারণে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলাম কখনও দখলবাজিতে যায়নি, বরং মানুষের হৃদয় দখলের রাজনীতি করেছে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা-৬ আসন রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র। এখানকার জনগণকে উন্নত, কল্যাণমুখী রাজনীতি উপহার দিতে চায় জামায়াত। তিনি শহীদদের স্মরণ করে বলেন, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে শহীদরা জীবন দিয়েছেন, আমরা তাঁদের পথেই আগাবো। কেউ আর জনগণকে ভয় দেখিয়ে ভোট ডাকাতি করতে পারবে না।

ঢাকা-৬ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ড. আব্দুল মান্নান বলেন, জনগণের রায়ে নির্বাচিত হলে পুরান ঢাকা তার ঐতিহ্য ফিরে পাবে, বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার করা হবে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, ব্যবসায়ীদের কোনো চাঁদা দিতে হবে না, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ-মাদক কারবারিদের ঠাঁই হবে না। অমুসলিমদের অধিকার নিশ্চিত করা হবে, নারীদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “আমরা শাসক হতে চাই না, হতে চাই জনগণের সেবক। জামায়াত যা বলে, তা বাস্তবে প্রমাণ দেয়।”

অনুষ্ঠানে ইসলামি ছাত্র শিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মো. আসাদসহ আরও অনেক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের ১১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তাঁরা সকলের কাছে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ