ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ আজ ২৩ জুন এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় সবচেয়ে সাচ্ছন্দ ও নিরাপদ জীবন-যাপন করেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। বাংলাদেশের যত উন্নতি তার জন্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবদান অবশ্য স্বীকার্য। একই সাথে বাংলাদেশের জনপ্রশাসন নিয়ে মানুষের অভিযোগেরও সীমা নাই। জুলাই অভ্যুত্থানের পরে সামগ্রিক সংস্কারের অংশ হিসেবে রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় ও সরকারি চাকরিবিধিতে সংস্কার আনা হয়েছে। যেকোনো পরিবর্তন এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি করে। সেই অস্থিরতা দূর করার জন্য আলোচনা উত্তমপন্থা। বিশেষ করে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য আলোচনাই একমাত্র পন্থা। কিন্তু রাজস্বখাতের সংস্কার ও চাকুরীবিধির পরে রাজস্বখাত ও সচিবালয়সহ সরকারী অফিসে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে তা নজীরবিহীন। একটি আধুনিক ও কার্যকর রাষ্ট্রে জনপ্রশাসনে এমন অচলাবস্থা রাষ্ট্রের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
মাওলানা ইউনুস আহমেদ বলেন, সরকারি চাকরি নৈর্ব্যক্তিক। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলে জনপ্রশাসনের নৈর্ব্যক্তিক হওয়াই বাঞ্চনীয়। রাষ্ট্রের স্বার্থে সরকারী চাকুরীজীবিদের এমন অনেক ক্ষেত্রেই সীমিত মাত্রায় অবস্থান করতে হয় যা একজন সাধারণ নাগরিকের জন্য মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। একজন সরকারী চাকুরীজীবি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না, দলীয় রাজনীতি করতে পারেন না। একইভাবে তারা কোন দাবী আদায়ে বিক্ষোভ বা অচলাবস্থা তৈরি করতে পারেন না।
তিনি বলেন, আধুনিক ব্যবস্থাপনা দক্ষতা ও ফলাফল নির্ভর। এই মৌলিক নীতিকে সামনে রেখে চাকুরীবিধি সংস্কার করা হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে জিডিপি-কর অনুপাত খুবই খারাপ অবস্থায়। সেটা উন্নত করার জন্য রাজস্বখাতের সংস্কার অপরিহার্য ছিলো। সংস্কারে কারো কারো দ্বিমত থাকতে পারে কিন্তু কর্মবিরতি দিয়ে জনগণকে জিম্মি করা কোনভাবে সমর্থনযোগ্য না। নৈতিকভাবেও তা বৈধ না। কারণ কর্মবিরতির সময়ের বেতন কি তারা প্রত্যাখ্যান করবেন? যদি না করেন তাহলে জনগণের টাকা বেতন নিয়ে জনগণকে জিম্মি করা কিভাবে নৈতিক হয়। বৈতনিক বিক্ষোভের নজীর কোথায় আছে?
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব বলেন, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন দক্ষিণের মেয়র পদ নিয়ে নগরভবনে যা হচ্ছে তা মূল্যায়ন অযোগ্য। কোটি মানুষের সেবাদাতা নগরভবন দিনের পর দিন তালাবদ্ধ করা ও থাকতে দেয়ার নিন্দা করার ভাষা আমাদের নাই। রাজনীতি ও পদবীর জন্য প্রতিষ্ঠান ও জনতাকে এভাবে জিম্মি করার একটি নিন্দনীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এই ঘটনা।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, যারা আন্দোলন করছে তাদের সাথে আলোচনা করুন। যৌক্তিক কোন বিষয় থাকলে তা আমলে নিন। অযৌক্তিক কোন কিছুকে কেউ গো ধরলে তাকে আইনের আওতায় আনুন। কিন্তু জনগণের টাকায় বেতন নেবে কিন্তু তাদের সেবা না দিয়ে অযৌক্তিক দাবিতে কর্মবিরতি পালন করবে তা মেনে নেয়া যায় না। রাষ্ট্রকে কার্যকর ও সক্রিয় রাখতে দ্রুততার সাথে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এমএইচ/