বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, বিদ্যমান আইনের কারণে যখন প্রধানমন্ত্রী একক ক্ষমতার অধিকারী হন, তখন সরকার ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে রাষ্ট্রপতি কেবল মোনাজাত বা কবর জিয়ারত ছাড়া আর কোনো কাজ করতে পারেন না, এমনকি রাষ্ট্রপতি কোন বক্তব্যও রাখতে পারেন না—যেহেতু তিনি যা বলেন তা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অনুমোদিত হয়।
বুলবুল আরও বলেন, “জামায়াতে ইসলামী সবসময় প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা বলেছে। যখন দলীয় প্রধান সরকার প্রধান হয়ে যায়, তখন সরকার রাষ্ট্র শক্তি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে, বিরোধী দল ও মত দমন করার চেষ্টা করে। সরকারের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই রাষ্ট্রযন্ত্র প্রয়োগ করা হয়। এজন্য আমরা জামায়াতে ইসলামী দাবি জানাই—দলীয় প্রধানকে সরকার প্রধান না করার।”
রবিবার ঢাকা-৪ (শ্যামপুর-কদমতলী-যাত্রাবাড়ী আংশিক) সংসদীয় আসনে জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, জামায়াত শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি আদর্শিক সংগঠন এবং জনসেবামূলক আন্দোলন। প্রতিটি কর্মীকে সমাজকর্মীর ভূমিকায় কাজ করতে হবে। ইসলামী আন্দোলন মানে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রাম।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “নির্বাচনের আগে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারের পাশাপাশি রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার করতে হবে। আমাদের বন্ধুপ্রতিম কিছু রাজনৈতিক দল কোনো সংস্কার কিংবা গণহত্যার বিচার নিয়ে মাথা ব্যথা করে না। তাদের চিন্তা, কবে নির্বাচন হবে আর ক্ষমতায় বসবে। আমাদের আহ্বান—গণমানুষের কল্যাণে রাজনীতি করুন। জনগণের চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন হয়েছে। ৫ আগস্টের পর জনগণের প্রতিবাদের সাহস সৃষ্টি হয়েছে, তারা এখন নিজেদের অধিকার আদায় করতে শিখেছে।”
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা-৪ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক মো. আমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসেন। তিনি বলেন, “ইসলামী আন্দোলনে নির্বাচন একটি দায়িত্বশীল পথ। প্রতিটি দায়িত্বশীলকে সংগঠনের মূল নীতি অনুসরণ করে কাজ করতে হবে এবং সুশৃঙ্খল প্রচারণা ও জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।”
ঢাকা-৪ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন বলেন, “আমি রাজনীতি করি দায়িত্ববোধ থেকে, মানুষের কল্যাণে কিছু করতে পারার আকাঙ্ক্ষা থেকেই। আমার আশা, মানুষের ভালোবাসা পেতে। আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে, তবে আমি চাই প্রতিটি নাগরিক যেন আমাদের অভিযাত্রার সাথী হন। আপনি শুধু ভোটার নন, আপনি আমার সহযোদ্ধা। আমরা একসঙ্গে ঢাকা-৪ আসনকে সুখী ও সমৃদ্ধ এলাকাতে পরিণত করতে চাই।”
এছাড়া ঢাকা-৭ আসনের সমাবেশেও প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৭ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ব্যবসায়ী নেতা হাফেজ হাজী মোহাম্মদ এনায়েত উল্লাহ এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এ সমাবেশগুলোতে ঢাকা-৪ ও ঢাকা-৭ আসনের সাংগঠনিক নেতৃবৃন্দসহ জামায়াত ইসলামী মনোনীত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।