মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে এবার বড় ধরনের গোয়েন্দা সাফল্য দাবি করেছে তেহরান। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ–এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ৫৪ জন গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার করেছে ইরান। এদের বিরুদ্ধে ‘শত্রু রাষ্ট্রের হয়ে তথ্য সংগ্রহ ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে’ জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
শনিবার (২১ জুন) তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি এক প্রতিবেদনে জানায়, ইরানের খুজেস্তান প্রদেশে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিনষ্ট, গুজব ছড়িয়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি এবং বিদেশি সংস্থার হয়ে কাজ করার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে খুজেস্তানের প্রসিকিউটর অফিস।
প্রসিকিউশন অফিস জানায়“ধৃতদের মোসাদের সরাসরি নির্দেশনায় রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে অস্থিরতা ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর পরিকল্পনা ছিল। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস, যোগাযোগ মাধ্যম, এবং বিদেশি অর্থ লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।”
ইরান এই গ্রেপ্তারকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি বড় বিজয় হিসেবে উল্লেখ করছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনসহ ইরানি গণমাধ্যমগুলোও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করছে।
গত ১৩ জুন থেকে ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি সামরিক সংঘর্ষ শুরু হয়। ইসরায়েল একাধিকবার তেহরান, ইস্পাহান, নাতাঞ্জ ও ফোর্দোর মতো গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। এর জবাবে ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটি ও অবকাঠামোয় পাল্টা আঘাত হানে।
ইসরায়েলি সরকারি সূত্র জানায়, ইরানের হামলায় তাদের ২৫ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। অপরদিকে ইরানি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, ইসরায়েলের বিমান হামলায় ৬৩৯ জন নিহত ও ১,৩০০’র বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, গুপ্তচর ধরার বিষয়টি এখন শুধু নিরাপত্তার ইস্যু নয়, এটি মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান গোপন যুদ্ধের দিক নির্দেশ করছে। মোসাদ দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের ভেতরে নাশকতা, বিজ্ঞানীদের হত্যাকাণ্ড ও সাইবার হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত।
তেহরান এই গ্রেপ্তার অভিযানের মাধ্যমে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাইছে—তারা ইসরায়েলি প্রভাব ও গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সতর্ক ও প্রতিরোধে প্রস্তুত।
এনএইচ/