বিশ্বের অন্যতম উন্নত মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকার পরও ইরানের একের পর এক হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে ইসরায়েল। হাজার কিলোমিটার দূর থেকে উৎক্ষেপিত ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের সুরক্ষিত অঞ্চলে বারবার আঘাত হানছে। ইসরায়েলের গর্বিত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি যেন এখন ব্যর্থতার প্রতীক। প্রশ্ন উঠছে—ইরানের কোন প্রযুক্তির কাছে এই অসহায়ত্ব?
ইসরায়েলের রয়েছে তিনস্তরের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা: আয়রন ডোম – স্বল্পপাল্লার রকেট প্রতিরোধে কার্যকর ২ ডেভিডস স্লিং – মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে ব্যবহৃত ৩ এরো সিস্টেম (Arrow 2 ও 3) – দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে সক্ষম
এতদিন ধরে এই ব্যবস্থাকে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক এবং কার্যকর প্রতিরক্ষা বলেই বিবেচনা করা হতো। কিন্তু ইরানের হাইপারসনিক মিসাইল সেই আত্মবিশ্বাসে ভয়াবহ ধাক্কা দিয়েছে।
হাইপারসনিক মিসাইল এমন এক প্রযুক্তি, যা শব্দের গতির পাঁচ গুণ বা তার বেশি বেগে ছুটতে পারে। শব্দের গতি: ঘণ্টায় প্রায় ১,২৩৫ কিমি। হাইপারসনিক গতি: ঘণ্টায় ৬,১৭৪ কিমি বা তারও বেশি । ১,০০০ কিমি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছায় মাত্র ৮–১০ মিনিটে
এই মিসাইল শুধু দ্রুতগামী নয়, বরং রাডার ফাঁকি দিয়ে দিক পরিবর্তন করতে পারে এবং নিখুঁতভাবে টার্গেট ভেদ করে।
উৎক্ষেপণের পর ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রথমে দ্রুত বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে। এরপর গতি বাড়াতে বাড়াতে এটি শব্দের চেয়েও বেশি গতিতে ছুটে চলে। রাডার শনাক্ত করার আগেই দিক বদলে ফেলে । সবশেষে নির্ভুলভাবে আঘাত হানে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ।এই ক্ষমতার জন্যই একে বলা হয়—“অদৃশ্য ঘাতক”।
প্রচলিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এটির গতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারে না । এটি নিখুঁত লক্ষ্যবস্তুর ওপর আঘাত হানতে সক্ষম। রাডার সিস্টেমকে ফাঁকি দিতে পারে খুব সহজেই। এটি পারমাণবিক বোমাও বহন করতে পারে।
ইরানের হাইপারসনিক প্রযুক্তির সামনে ইসরায়েলের সুনাম ও নিরাপত্তা আজ প্রশ্নের মুখে। আধুনিক প্রযুক্তি দিয়েও যদি আকাশ নিরাপদ না থাকে, তবে সামরিক ভারসাম্য নতুন করে ভাবতে হবে বিশ্বশক্তিগুলোকে। আর ইরান এই প্রযুক্তির মাধ্যমে শুধু ইসরায়েল নয়, গোটা বিশ্বের কূটনৈতিক ও সামরিক মঞ্চে নিজের অবস্থান জোরালোভাবে জানান দিচ্ছে।
এনএইচ/