বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫ ।। ২১ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় জামিন পেল লতিফ সিদ্দিকী মাধবপুর রাজনগরে ইসলামী মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত পুলিশের বাধার মুখে ইসলামি ৮ দলের গণমিছিল মিছিল নিয়ে যমুনার পথে যাচ্ছে ৮ ইসলামী দল বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রদল নেতা অস্ত্রসহ গ্রেফতার বরিশাল-৫ আসনে হাতপাখা প্রতীকের সেন্টার কমিটির প্রশিক্ষণ কর্মশালা ‘আমরা কিছু কাজের পর ঘুমিয়ে পড়ি, খতমে নবুওয়তবিরোধীরা তো ঘুমায় না’ পুঁজিবাজারে পাঁচ ইসলামি ব্যাংকের লেনদেন স্থগিত নবনিযুক্ত হাইকমিশনারের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন মালয়েশিয়া শাখার সৌজন্য সাক্ষাৎ ইসলামি শক্তিকে আরও সচেতন ও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে: ড. আহমদ আবদুল কাদের

কুরআনের জনপ্রিয় শিক্ষিকা এক হিন্দু তরুণী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

Quran teacher Hindu copyএম রবিউল্লাহ: প্রতিদিন সন্ধ্যায় ভারতের উত্তরপ্রদেশের আগ্রার সঞ্জয় নগর  মন্দিরের খোলা আকাশের মাঠে কুরআন শিক্ষার আসর বসে। এখানে  বিরলভাবে পূজা কুশয়াহা নামের এক হিন্দু তরুণী কোরআনের শিক্ষা দিচ্ছেন। ১৮ বছরের দ্বাদশ শ্রেণির এই হিন্দু তরুণী ৩৫ জন মুসলিম শিশুকে কুরআন শিক্ষা দেন। অমুসলিম হয়েও কঠিন অনবদ্য আরবি উচ্চারণ ও বিভিন্ন সিলেবাস অনুযায়ী পুঙ্খানুপঙ্খভাবে কুরআন শিক্ষা দিচ্ছেন। তিনি এখন এলাকার সবার জনপ্রিয়  কুরআনের শিক্ষিকা।

পূজার ৫ বছরের ছাত্রী আলিশার মা রেশমা বেগম বলেন, আমি পূজা কুশয়াহারের এতো কম বয়সে এতো সুন্দর অর্জন দেখে অবাক। আমার সন্তানের শিক্ষক হিসেবে তাকে পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। তার ধর্মের বিষয়টি আমার কাছে বিবেচ্য বিষয় নয়। এটিকে আমি সর্বশেষ ধাপ মনে করি। আমার মনে হয় আমার মতো অন্য কেউ তার বিষয়ে এমন মনোভাব রাখছে।

কিভাবে আরবি শিখলেন পূজা?

পূজা জানান, অনেক দিন আগে আমাদের এলাকায় মিশ্র বিশ্বাসী সঙ্গীতা বেগম নামের একজন শিশুদের কুরআন শিক্ষা দিতেন। সঙ্গীতা বেগমের বাবা মুসলিম ও মা ছিলেন হিন্দু ধর্মের অনুসারি। তখন থেকে কুরআন নিয়ে আমার আগ্রহ জন্মে। পবিত্র গ্রন্থ কোরআন সম্পর্কে আমার আগ্রহ থাকায় তার ক্লাসে অংশগ্রহণ করি। কিছু দিনের মধ্যেই অন্যদের থেকে আমি অনেক এগিয়ে যাই।

পূজা আরো বলেন, কিছু ব্যক্তিগত সমস্যা থাকায় সঙ্গীতা বেগম আর কুরআনের ক্লাস নিতে পারেননি। তিনি আমাকে ক্লাসকে জীবিত রাখার জন্য অনুরোধ করেন।  তিনি আমাকে খুব ভালোভাবে কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন। কুরআনের গুরত্ব সম্পর্কে আমাকে শিখিয়েছেন। একই সঙ্গে ভাগাভাগির মধ্যে দিয়ে জ্ঞান ও মেধা বৃদ্ধি পায় বলে জানিয়ে আমাকে আমার শিক্ষা কাজে লাগানোর কথা বলেন। সেই থেকে পূজা কুরআন শিখানো শুরু করেন।

পূজা বলেন, আমি মুক্তভাবে এই কাজটি করতে থাকি। অধিকাংশ শিশুই দরিদ্র পরিবারের। তারা আমাকে কোনো প্রকার অর্থ দেয়নি। আমিও তাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের অর্থ চাইনি বলে পূজা জানান।

ধীরে ধীরে পূজার বাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। তার বাসা ছোট হওয়ায় ঠিক মতো বসতে পারত না শিক্ষার্থীরা। শিশুদের শিক্ষা দিতে মন্দিরের মাঠে ক্লাস নিতে প্রস্তাব করেন। পূজার বড় বোন নন্দিনীও গ্রাজুয়েট। তিনিও শিশুদের হিন্দি ও বগবত গীতা শিক্ষা দেন। বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা এখানে শিক্ষা নিতে আসে।

সন্তানদের এমন কাজ দেখে গর্বিত তাদের মা রানী কুশয়াহা। মায়ের ভাষায়, আমি আমার মেয়েদের এমন মহান কাজের জন্য গর্বিত।

তবে তাদের প্রচেষ্টাকে কেমন ভাবছে এলাকার সাধারণ মুসলিমরা?

এলাকার মুসলিম ধর্মীয় নেতা ও একাধিক ইসলামি সংগঠনের নেতা হাজি জামিল উদ্দিন কোরেশি (৭০) বলেন, এটি খুবই হৃদয় স্পন্দিত ও বিরল উদাহরণ। আমাদের শহরে সাম্প্রদায়িক বন্ধন রয়েছে পূজার কুরআন শিখানোর মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে।

এ সময় এই ধর্মীয় নেতা বলেন, একজন শিক্ষককে শিক্ষক হিসেবে মূল্যায়ণ করা উচিৎ। তার ধর্ম এখানে বিবেচ্য বিষয় নয়। যে কেউ আরবি শিখতে পারবে। কুরআন পড়তে পারবে এখানে ইসলামের কোনো বাধা নেই।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ