আওয়ার ইসলাম: চট্টগ্রামে প্রায় তিন মাস আগে জোর করে গাড়িতে তুলে মাদরাসাছাত্রীকে ‘গণধর্ষণে’র ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই ঘটনায় অভিযুক্ত দুই ‘ধর্ষকে’র একজন পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছিল। আরেকজন গ্রেফতারের পর কারাগারে আছে।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাতে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার জলদি গ্রাম থেকে অভিযুক্ত দুই ‘ধর্ষকে’র সহযোগী মো. শাহাবুদ্দিনকে (২৪) গ্রেফতার করেছে নগরীর কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘গ্রেফতার শাহাবুদ্দিন ধর্ষক নয়। তবে ধর্ষিতা মেয়েটিকে ফাঁদে ফেলে পুনরায় ধর্ষণের চেষ্টার সঙ্গে সে-ও যুক্ত ছিল। আমরা আগে থেকে অবহিত হওয়ায় তাদের চেষ্টা ভেস্তে দিই। এসময় শাহাবুদ্দিন পালিয়ে যেতে পারলেও তিনমাসের মধ্যে আমরা তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি।’
গত ২৭ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর জামালখানে পিডিবি আবাসিক কোয়ার্টারের সামনে থেকে নবম শ্রেণির এক মাদরাসাছাত্রীকে জোর করে প্রাইভেট কারে তুলে নেয় চালকসহ দুই যুবক। এরপর গাড়িটি নির্জন সার্সন রোডে নিয়ে গিয়ে উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে দু’জন গাড়ির ভেতরে ওই ছাত্রীকে ‘ধর্ষণ’ করে।
এসময় ‘ধর্ষণে’র ভিডিওচিত্র ধারণের অভিনয় করে তারা। পরে আবার সেই ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করে। পরদিন (২৮ জানুয়ারি) তারা আবারও মেয়েটিকে দেখা করার কথা বলে। এরপর মেয়েটি ও তার ভাই বিষয়টি কোতোয়ালী থানায় জানান। পরে পুলিশ ‘ধর্ষক’দের ধরার জন্য ফাঁদ পাতে।
ওইদিন সন্ধ্যায় ফের মেয়েটিকে নগরীর দিদার মার্কেট এলাকায় আরেকটি প্রাইভেট কারে তুলে নেওয়া হয়। গাড়িটি লালদিঘীর পাড় এলাকায় যাবার পর পুলিশ সেটির গতিরোধ করলে গাড়ি ফেলে তারা পালিয়ে যায়। পরে দুই ‘ধর্ষকে’র একজন শ্যামল দে-কে (৩০) নগরীর দেওয়ান বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আরেক ‘ধর্ষক’ মো. শাহাবুদ্দিনকে (২৩) রাতে নগরীর ফিরিঙ্গিবাজারের মেরিনার্স রোড থেকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যায় শাহাবুদ্দিন।
কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.কামরুজ্জামান বলেন, ‘প্রথমবার মেয়েটিকে ধর্ষণের জন্য তুলে নেওয়ার সময় গাড়িতে ছিল শাহাবুদ্দিন (পরে বন্দুকযুদ্ধে মৃত) এবং শ্যামল। তারাই মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। পরদিন মেয়েটিকে আবারও ধর্ষণের উদ্দেশে অপহরণের সময় গাড়িতে ছিল বন্দুকযুদ্ধে মারা যাওয়া শাহাবুদ্দিন এবং বর্তমানে গ্রেফতার হওয়া শাহাবুদ্দিন। তখন গাড়ি ফেলে দু’জনই পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল।’
পুলিশ পরিদর্শক কামরুজ্জামান জানান, তদন্তে তারা তথ্য পেয়েছেন- ধর্ষণের সময় ব্যবহৃত গাড়িটি ছিল একজন চিকিৎসকের, যেটি চালাত শাহাবুদ্দিন (মৃত)। দ্বিতীয়দিন মেয়েটিকে তুলে নেওয়ার সময় ব্যবহৃত প্রাইভট কারটি ছিল একজন ব্যাংক কর্মকর্তার। এই প্রাইভেট কারটি গ্রেফতার শাহাবুদ্দিন চালাত বলে তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে কামরুজ্জামান।