আওয়ার ইসলাম: বনানীতে এফ আর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে উদ্ধারকাজের সময় গুরুতর আহত হয়ে মারা যাওয়া ফায়ারম্যান সোহেল রানার পরিবারের উপযুক্ত কেউ থাকলে তাকে চাকরি দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামাম খান কামাল।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদর দফতরে সোহেল রানার প্রথম জানাজা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামাম খান কামাল বলেন, সোহেল পরিবারের একজন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল। ফায়ার সার্ভিসসহ আমরা সবাই তার পরিবারের প্রতি লক্ষ্য রাখব। তার পরিবারে যদি উপযুক্ত কেউ থাকে তাকে একটি চাকরি দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সোহেল রানা জনগণকে ভালোবাসতো, দেশকে ভালোবাসতো, তারই প্রমাণ তিনি রেখে গেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এফ আর টাওয়ারে উদ্ধার করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন। তার মৃত্যুর জন্য আমরা গভীরভাবে দুঃখিত।
তিনি আরও বলেন, শুধু সোহেল নয়, আমি স্মরণ করতে চাই সিলেটের জঙ্গি হামলার সময় নিহত ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তাকে। আমাদের যেখানে প্রয়োজন অগ্নি সেনারা সেখানে গিয়ে কাজ করছে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে জানমাল রক্ষা করছে।
সোহেল রানার চিকিৎসার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করেছি। প্রথমে তাকে সিএমএইচে নেয়া হয়েছে, এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়েছে।
সোহেল রানার পরিবার কোনো ক্ষতিপূরণ পাবে কি-না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ক্ষতিপূরণ নয়, আমরা তাকে সহযোগিতা করবো। ইতোমধ্যে ফায়ার সার্ভিস তাকে সহযোগিতা করেছে, প্রধানমন্ত্রীও সহযোগিতা করবেন। ভবিষ্যতে আপনারা তা দেখতে পারবেন।
এর আগে সোমবার (৮ এপ্রিল) স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ১৭ মিনিট) সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ফায়ার ফাইটার সোহেল রানা।
ওইদিন রাত ১০টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে সোহেল রানার মরদেহবাহী সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও তার পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে তাকে গার্ড অব অনার জানানো হয়। পরে মরদেহ নেয়া হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।
সোহেল রানার বাড়ি কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলায়। বাবা নূরুল ইসলাম ও মা হালিমা খাতুন। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে রানা দ্বিতীয়। ২০১৫ সালে ফায়ার সার্ভিসে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ বনানী অগ্নিকাণ্ডে কুর্মিটোলা ফায়ার স্টেশনের ফায়ারম্যান সোহেল রানা ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের উঁচু ল্যাডারে (মই) উঠে আগুন নেভানো ও আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধার কাজ করছিলেন। এক পর্যায়ে সোহেলের শরীরে লাগানো নিরাপত্তা হুকটি মইয়ের সঙ্গে আটকে যায়।
তিনি মই থেকে পিছলে পড়ে বিপজ্জনকভাবে ঝুলছিলেন। এ সময় তার একটি পা ভেঙে যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোহেল রানাকে ৫ এপ্রিল সিঙ্গাপুর নেয়া হয়।
এমএম/