আওয়ার ইসলাম: কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা, তাদের বিভ্রান্তিকর সকল প্রকাশনা বন্ধসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরাম।
আজ বুধবার (২৭ মার্চ) আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের উদ্যোগে খিলগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলন এসব দাবি জানান আলেমগণ।
আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত-এর সেক্রেটারি মাওলানা নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে মহাসম্মেলনে বিশ্ব বিখ্যাত ইসলামী বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম আল্লামা আবুল কাসেম নোমানী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সকল উলামায়ে কেরাম ঐক্যমত পোষণের মাধ্যমে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করেছেন। তারা ইসলামের নাম করে মুসলিমদের ঈমানবিধ্বংসী কাজ করে যাচ্ছে। সুতরাং তাদেরকে দ্রুত অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের সকল প্রকাশনা নিষিদ্ধ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দিবেন দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার সহযোগী মহাপরিচালক আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী, মালিবাগ জামিয়ার মুহতামিম আল্লামা আশরাফ আলী, বারিধারা জামিয়ার মহাপরিচালক আল্লামা নুর হুসাইন কাসেমী, যাত্রাবাড়ী মাদরাসার মুহাতিমম ও মজলিসে দাওয়াতুল হকের আমির আল্লামা মাহমুদুল হাসান, জামিয়া নুরিয়ার কামরাঙ্গিচরের মুহতামিম মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, জামিয়া কিশোরগঞ্জের মুহতামিম মাওলানা আজহার আলী আনোয়ার শাহ, ফরিদাবাদ জামিয়ার মুহাতিমম ও বেফাকের মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, জামিয়া রাহমানিয়ার মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুল হক, আরজাবাদ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, জামিয়া রাহমানিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা মামুনুল হক, হেফাজতের ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, বিশিষ্ট ওয়ায়েজ মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী প্রমুখ।
সম্মেলনে সরকারকে ৪ টি দাবি জানানো হয় এবং তা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আহ্বান জানানো হয়। প্রস্তাগুলি হলো,
১. পৃথিবীর অধিকাংশ মুসলিম রাষ্ট্রসমূহের ন্যায় বাংলাদেশ সরকারকেও কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অবিলম্বে অমুসলিম সংখ্যালঘু ঘোষণা করতে হবে।
২. কাদিয়ানী সম্প্রদায় কোরআন হাদিসের ভিত্তিতে, সাড়া দুনিয়ার ওলামা-মাশায়েখ ও মুফতিগণের ঐক্যমতে তারা মুসলমান নয়, কাফের। তাই তাদের জন্য ইসলাম ও মুসলমানের পরিভাষা যথা- নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত, আযান, মুয়াজ্জিন, মসজিদ, ইমাম, ইজতেমা, ইত্যাদি ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
৩. কাদিয়ানীরা যেহেতু মুসলমান নয় সেহেতু তাদের কোন মসজিদ থাকতে পারে না। তাদের উপসনালয়কে মসজিদ নাম দেয়ার কারণে অনেক মুসলমানের নামাজ নষ্ট হচ্ছে। তাই তাদের সকল উপাসনালয়কে সরকারি উদ্যোগে উদ্ধার করে মুসলমানদের নিকট হস্তান্তর করতে হবে।
৪. কাদিয়ানীরা নিজেদের মুসলমান পরিচয় দিয়ে সাধারণ মুসলমানদের ধর্মান্তরিত করে কাদিয়ানীদের দলভুক্ত করছে। তাই তাদের যাবতীয় অপতৎপরতা, বই-পুস্তক, লিফলেট, লিটারেচার মুদ্রন, প্রচারণা, প্রকাশনা, সংরক্ষণ ও বিতরন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।

এছাড়াও অনুষ্ঠান থেকে তিনটি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এগুলো হলো-
১- ঢাকা মহানগরসহ পার্শ্ববর্তী ৮টি জোনে এক একটি করে খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলনের ব্যবস্থা করা।
২- প্রতি জেলায় কমিটি গঠন করে এক একটি করে খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলনের ব্যবস্থা করা।
৩- বাংলাদেশের প্রত্যেক মসজিদে জুমআর বয়ানে খতমে নবুওয়ত ও কাদিয়ানীয়াত বিষয়ে দলীল-প্রমাণ সহকারে সাধারণ মুসল্লিদের অবগত করা।
আরআর