শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ।। ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাজী নজরুলকে ‘জাতীয় কবি’ ঘোষণার গেজেট প্রকাশের প্রস্তাব অনুমোদন ৯ ডিসেম্বর ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ২৭ দেশের রাষ্ট্রদূত হেফাজতের পল্টন জোনের সভাপতি সালাহ উদ্দিন, সম্পাদক সিরাজী ও সাংগঠনিক সাখী ভারতের হিন্দুদের চেয়ে বাংলাদেশের হিন্দুরা আরামে আছে: মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব হাব নির্বাচন ২২ ফেব্রুয়ারি, প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিন প্যানেল! মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিএনপির বিশাল কর্মী সমাবেশ বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আছে, নেই ভারতে: হেফাজত মহাসচিব ভোলায় হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত কুখ্যাত ডাকাত গ্রেফতার কাল সোহরাওয়ার্দী মুক্তমঞ্চে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্মেলন ভারত পায়ে পাড়া দিয়ে যুদ্ধ করতে চায়: ফয়জুল করীম

চট্রগ্রামে নওমুসলিম দম্পতির অপমানের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি হেফাজতের


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| হাসান আল মাহমুদ ||

চট্রগ্রামে নওমুসলিম দম্পতির অপমানের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।  

সে সঙ্গে নওমুসলিম দম্পতিকে সকল ধরনের আইনি জটিলতা থেকে মুক্ত করে তাদের স্বাধীন, স্বাভাবিক এবং নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত করার পাশাপাশি  ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে সরকারের কাছে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায় সংগঠনটি।

আজ সোমবার  (১৯ ফেব্রুয়ারী) হেফাজতের প্রচার সম্পাদক মুফতী কিফায়াতুল্লাহ আজহারী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ নিন্দা-প্রতিবাদ ও দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমীর আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এবং মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান বলেন, ‘ইসলামের ছায়াতলে সদ্য প্রবেশকারী নওমুসলিম ভাই ইব্রাহীম ওমর এবং নওমুসলিমা বোন জান্নাতুল ইসলামকে হিন্দুত্ববাদী লোকজন কর্তৃক কোর্ট প্রাঙ্গনে টেনেহিঁচড়ে লাঞ্ছিত করে জয় শ্রীরাম স্লোগান তোলার ঘটনায় আমরা যারপরনাই বিস্মিত ও হতবাক হয়েছি। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তারা আরো বলেন, কয়েক বছর আগেই আদালতের মাধ্যমে নওমুসলিম ভাই ইব্রাহিম ওমর এবং নওমুসলিমা বোন জান্নাতুল ইসলাম (স্নেহা) মুসলিম হয়েছেন। তারা দেশের প্রচলিত আইন মেনে ও শরীয়ত সম্মতভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। তাদের সাংসারিক জীবন প্রায় দুই বছরের বেশি। কিন্তু গত কয়েকদিন পূর্বে নওমুসলিমা বোনের (হিন্দু) মায়ের করা একটি অপহরণ মামলায় নওমুসলিম ভাইকে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে এবং বোনকে উদ্ধার দেখিয়ে চট্টগ্রাম আদালতে সোপর্দ করে। আদালত নওমুসলিমা বোনের জবানবন্দীর ভিত্তিতে তাকে নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেওয়ার আদেশ দেয়।

পরবর্তীতে আদালতের সকল কার্যক্রম শেষে যখন নওমুসলিমা বোনকে কোর্ট কাস্টডি থেকে ছেড়ে দেয়া হয় তখন হিন্দুত্ববাদীরা তাঁকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু নওমুসলিমা বোন কোনভাবেই তাদের সাথে যেতে চাচ্ছিলেন না। তখন আদালত প্রাঙ্গণে থাকা মুসলিম ভাইদের প্রতিবাদের মুখে তাঁরা পিছু হটলেও বোনকে নিরাপদে বের করার কোন উপায় তাদের ছিলো না।  এ অবস্থায় নওমুসলিমদের পক্ষের এডভোকেট নওমুসলিমা বোনটিকে তাদের হাত থেকে রক্ষার জন্য আবারো কোর্ট কাস্টডিতে ঢুকিয়ে ফেলেন।

নেতৃদ্বয় আরো বলেন, সে সময় হিন্দুত্ববাদীরা জয় শ্রীরাম সহ বিভিন্ন উগ্র স্লোগান দিতে থাকলে মুসলিম ভাইয়েরাও আল্লাহু আকবর ধ্বনি উচ্চারণের মাধ্যমে তাদের জবাব দেয়। পরবর্তীতে প্রশাসনকে বারবার পুলিশ প্রটোকল দিয়ে নওমুসলিমা বোন যেখানে যেতে চায় সেখানে পৌঁছিয়ে দিতে বললেও হিন্দুত্ববাদীদের চাপের মুখে কোর্ট কতৃপক্ষ বোনটিকে সেভ কাস্টডিতে রাখতে বাধ্য হয়।

হেফজাত আমীর ও মহাসচিব বলেন, ধর্মান্তরিত হওয়া প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা। বাংলাদেশের সংবিধান কোন নাগরিককে ধর্মান্তরিত হতে বাধা দেয় না। যে দুজন মানুষ ধর্মান্তরিত হয়েছেন, তারা প্রাপ্তবয়স্ক পরিণত জ্ঞানের অধিকারী। তারা স্বজ্ঞানে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তাদেরকে জোরপূর্বক অন্য কোন ধর্মে ফিরিয়ে নেয়া সুস্পষ্ট আইনের লঙ্ঘন। একটি স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার এভাবে হরণ করার অধিকার কারও নেই।

হেফাজত নেতৃদ্বয় আরো বলেন, আমরা মনে করি, সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করে আদালতকে প্রভাবিত করার জন্য আদালত প্রাঙ্গনে যে উশৃংখল স্লোগান দেওয়া হয়েছে, তা সুস্পষ্ট আদালত অবমাননার শামিল। নব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে মুসলমানদের কটাক্ষ করে যে উগ্রবাদী ভঙ্গিতে স্লোগান দেওয়া হয়েছে, সেটি কোন অবস্থাতেই বরদাশত করে নেওয়ার মতো নয়। উগ্রবাদী কোন গোষ্ঠী যদি সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়ার মাধ্যমে আদালতকে প্রভাবিত করে নওমুসলিম এ দম্পতিকে হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য কোন অপচেষ্টা চালায়, তাহলে অবশ্যই হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কঠোর হস্তে তার মোকাবেলা করবে।

অনতিবিলম্বে নওমুসলিম এ দম্পতিকে সকল ধরনের আইনি জটিলতা থেকে মুক্ত করে তাদের স্বাধীন, স্বাভাবিক এবং নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত করার পাশাপাশি অনাকাঙ্খিত এই জঘন্য ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

হাআমা/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ