শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫ ।। ২২ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
ভিয়েতনামে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল বাংলাদেশি যুবকের জামায়াতে ইসলামী ঈমানের বড় ডাকাত: হেফাজত আমির ফের বাংলাদেশ সফরে পাকিস্তানের বিখ্যাত আলেম মাওলানা ইলিয়াস গুম্মান ১০-২০ কোটি টাকা না থাকলে সংসদ নির্বাচন করা সম্ভব নয়: আসিফ মাহমুদ সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে: মাওঃ ইউনুছ আহমদ ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী পুরুরা মাদ্রাসায় বার্ষিক মাহফিল ২৬ নভেম্বর প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডের জন্য সুপারিশ জাতির প্রকৃত শক্তি শুধু সম্পদের মধ্যেই নয়: প্রধান উপদেষ্টা সরকারি ক্যালেন্ডারে যুক্ত হচ্ছে নতুন ছুটি পটুয়াখালীতে বিএনপি-গণঅধিকার পরিষদের সংঘর্ষে আহত ১৬

ধর্ম অবমাননার শাস্তি: কারাদণ্ড নয়, কোরআনের সূরা মুখস্থের আইন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বিশ্বে যখন ধর্মীয় সহনশীলতার ঘাটতি ও মতভেদ বাড়ছে, তখন ২০১৮ সালে লেবানন আদালতের একটি ব্যতিক্রমী রায় বিশ্বজুড়ে নজির স্থাপন করেছিল। ধর্ম অবমাননার অভিযোগে তিন মুসলিম তরুণকে কারাবন্দি বা জরিমানার বদলে শাস্তি হিসেবে পবিত্র কোরআনের একটি সূরা মুখস্থ করার নির্দেশ দেন এক বিচারক।

ঘটনাটি ঘটেছিল লেবাননের উত্তরাঞ্চলীয় শহর ত্রিপোলিতে। অভিযোগ ছিল, ওই তিন তরুণ খ্রিস্টান ধর্মের এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব—হজরত ঈসা (আ.)-এর মা হজরত মরিয়ম (আ.)-এর বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন। বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিগোচর হলে, বিচারক জোসেলিন মাত্তা এক অভিনব রায় দেন।

তিনি ঐ তরুণদের শাস্তি হিসেবে কোরআনের সূরা আলে ইমরান মুখস্থ করার নির্দেশ দেন—যেখানে হজরত মরিয়ম (আ.) এবং হজরত ঈসা (আ.)-এর সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে।

বিচারক মাত্তা তাঁর রায়ের ব্যাখ্যায় বলেন: “আইন মানে কেবল কারাগার নয়, এটি একটি শিক্ষারও মাধ্যম। এই রায়ের মাধ্যমে আমি চেয়েছি তরুণদের ইসলামের সহনশীলতা ও আন্তধর্মীয় শ্রদ্ধাবোধের শিক্ষা দিতে।”

এই মানবিক ও শিক্ষামূলক রায় তখন প্রশংসা কুড়িয়েছিল বিভিন্ন মহলে। লেবাননের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি এক টুইট বার্তায় মন্তব্য করেছিলেন: “এই রায় ন্যায়বিচারের এক অনন্য দৃষ্টান্ত, যা ইসলাম ও খ্রিস্টধর্মের মধ্যে বিদ্যমান পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির শিক্ষা দেয়।”

দেশটির দুর্নীতিবিরোধী প্রতিমন্ত্রী নিকোলাস তুয়েনি-ও রায়টির প্রশংসা করে বলেন, এটি ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা রোধে ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুসরণযোগ্য মডেল।

ইসলাম ধর্মেও অন্যান্য ধর্মের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নির্দেশ রয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে: “আল্লাহকে ছেড়ে তারা যাকে ডাকে, তাদের তোমরা গালি দিয়ো না, কেননা তারা সীমা লঙ্ঘন করে অজ্ঞানতাবশত আল্লাহকেও গালি দেবে।” (সূরা আন’আম: ১০৮)

এই আয়াত আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ধর্মীয় সহনশীলতা কেবল সামাজিক শান্তির জন্যই নয়, বরং ঈমানদারেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

২০১৮ সালের লেবাননের এই ঘটনা আমাদের শেখায়—শাস্তি শুধু শাস্তি নয়, এটি হতে পারে শিক্ষা, সহানুভূতি এবং সচেতনতা তৈরির একটি মাধ্যম।

এলএইস/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ