মিয়ানমারে বিমান হামলায় নিহত অন্তত ১৮
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৮:৪০ রাত
নিউজ ডেস্ক

মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় এক শহরে দেশটির সামরিক জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন এতে আহত হয়েছেন অন্তত আরও ২০ জন। গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে জান্তার বিমান থেকে ওই হামলা চালানো হয়েছে। আজ শনিবার স্থানীয় এক উদ্ধারকর্মী ও দুই বাসিন্দা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জান্তার বিমান হামলায় হতাহতের এই এথ্য জানিয়েছেন।

২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত বেসামরিক সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশটির সামরিক বাহিনী বিদ্রোহীদের দমনে ব্যাপক রক্তক্ষয়ী অভিযান পরিচালনা করছে। এসব অভিযানে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নৃশংসতা চালানোর অভিযোগ উঠলেও জান্তা বাহিনী তা অস্বীকার করেছে।

শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে দেশটির স্যাগাইং অঞ্চলের তাবাইন শহরে জান্তার বিমান থেকে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে দু’টি বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এর মধ্যে একটি বোমা ব্যস্ত সময়ে সেখানকার চায়ের দোকানে পড়ে বলে স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ১৮ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, হামলার সময় চায়ের দোকানে ব্যাপক ভিড় ছিল। যে কারণে প্রাণহানির সংখ্যা বেশি বলে জানিয়েছেন তিনি।

জান্তার নিপীড়নের ভয়ে এএফপিকে পরিচয় গোপন রাখার অনুরোধ জানিয়ে এসব তথ্য দিয়েছেন স্যাগাইংয়ের বাসিন্দা ও কর্মকর্তারা। সেখানকার এক উদ্ধারকর্মী বলেছেন, হামলার প্রায় ১৫ মিনিট পর তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তখনই সাতজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও ১১ জন মারা যান।

মিয়ানমারে সামাজিক আড্ডাস্থল হিসেবে চায়ের দোকানের বেশ পরিচিতি রয়েছে। হামলায় ওই চায়ের দোকান ও আশপাশের প্রায় এক ডজন বাড়িঘর পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

হামলায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তি বলেন, তিনি চায়ের দোকানে বসে টেলিভিশনে বক্সিং ম্যাচ দেখছিলেন। ঠিক সেই সময়ই বোমা বিস্ফোরণ ঘটে।

‘‘বিমানের শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমি মাটিতে শুয়ে পড়ি। বিস্ফোরণের শব্দ অত্যন্ত তীব্র ছিল।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমার মাথার ওপর আগুনের শিখা দেখেছিলাম... ভাগ্য ভালো যে আমি বেঁচে গেছি। এরপরই বাড়ি ফিরে যাই।’’

তবে এই বিমান হামলার বিষয়ে জানতে দেশটির সামরিক সরকারের মুখপাত্রকে টেলিফোন করা হলেও তিনি কোনও সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে এএফপি। শনিবার স্যাগাইংয়ে নিহতদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা বলেন, কিছু মৃতদেহের মুখ চেনা যাচ্ছিল না বলে তোয়ালে দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।

তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছি। কারণ নিহতদের কয়েকজনের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল।

চলতি বছরের মে মাসে স্যাগাইং অঞ্চলে সামরিক জান্তার আরেক বিমান হামলায় ২২ জনের প্রাণহানি ঘটে। তাদের মধ্যে ২০ জনই শিশু। যদিও সেই সময় দেশটিতে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পের পর যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল জান্তা।

সূত্র: এএফপি।

এলএইস/