পিআর সিস্টেমের নির্বাচন নিরাপদ নির্বাচন, আদর্শের নির্বাচন: শায়খে চরমোনাই
প্রকাশ:
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৮:৫৯ সকাল
নিউজ ডেস্ক |
![]()
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, পিআর সিস্টেমে নির্বাচন হলে আর ফ্যাসিস্ট তৈরি হবে না, কালো টাকার ছড়াছড়ি থাকবে না, পেশীশক্তি ব্যবহার করা হবে না, ভোট ছিনতাই হবে না, লুটপাট হবে না, ডাকাত-গুন্ডা-বদমায়েশ আর ক্ষমতায় যেতে পারবে না। পিআর সিস্টেমে নির্বাচন হলে কোটি কোটি টাকার নমিনেশন বাণিজ্য আর হবে না। এই সিস্টেমে নির্বাচন হলে জাতীয় সরকার গঠন হবে। যেখানে সমস্ত আদর্শের মানুষ থাকবে। পিআর সিস্টেমে নির্বাচন হলে কোনো ভোট আর নষ্ট হবে না। পিআর সিস্টেমে নির্বাচন হলে এমন এক সংসদ হবে, যেই সংসদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তি, সমস্যার সমাধান খোঁজা হবে। রাস্তায় হরতাল-অবরোধ আর করা হবে না। পিআর সিস্টেমের নির্বাচন নিরাপদ নির্বাচন, আদর্শের নির্বাচন। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জয়পুরহাট জেলা শহরের শহীদ ডা. আবুল কাসেম ময়দানে আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার ও জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি প্রদান এবং আপরাধী ও খুনিদের দৃশ্যমান বিচারের দাবিতে ইসলামী আন্দোলনের জেলা কমিটি এ সমাবেশের আয়োজন করে। মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, আজকে যে রাজনীতি বাংলাদেশে পরিচালিত আছে, এই রাজনীতির মধ্যে যদি ফেরেস্তাও ঢুকে সে আজাজিল হয়ে বের হয়ে যায়। ইসলামী রাজনীতির মধ্যে আজাজিল ঢুকলে ফেরেস্তা হয়ে বের হয়ে যায়। আবরার ফাহাদকে কারা হত্যা করেছে? বুয়েটের ছাত্ররা, তারা সবচেয়ে ভালো ছাত্র। কিন্তু দল করার কারণে তারা খুনি হয়ে গেছে। হাজারো ছাত্র অস্ত্রবাজ হয়ে গেছে। বর্তমানে বিএনপির ছাত্রদলের ছাত্ররা ছাত্রদলকে হত্যা করছে। ছাত্রদলের ছাত্ররা যুবলীগের মানুষদের হত্যা করছে। যুবলীগের লোক বিএনপিকে হত্যা করছে। এরা খুনি, ডাকাত, বদমায়েশ, ধর্ষক, গাঁজাখোর, অস্ত্রবাজ ছিল না, কিন্তু ওই দল তাদেরকে এসব বানিয়ে দিয়েছে। শায়খে চরমোনাই বলেন, ইসলামী দল কেন করবেন? আপনার জন্য, সন্তানের নিরাপত্তার জন্য, স্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য, সম্পত্তির নিরাপত্তার জন্য, জানমাল-ইজ্জতের নিরাপত্তার জন্য ইসলামী দল করবেন। এতিম, গরিব, মিসকিন, জেলে, তাঁতী, মজদুর, মেথোর সবার অধিকারকে বাস্তবায়ন করার জন্য আপনি ইসলামী দল করবেন। ইসলামের গোটা অর্থনীতি গরিবদের জন্য। অথচ গরিব ইসলামকে পছন্দ করে না। বর্তমান প্রচলিত অর্থনীতি একশ বছর যদি পরিচালিত থাকে, তাহলে কোনো গরিব ধনী হবে না। ধনী শুধু ধনী হবে আর গরিব শুধু গরিব হবে। আজকে ব্যাংকে দশ লাখ টাকা লোন নিতে গেলে ব্যাংক বলবে মর্টগেজ দেন, কিন্তু গবির মর্টগেজ কোথায় পাবে। কিন্তু ব্যাংক ওই ব্যক্তিদেরকে টাকা দেয়, যাদের আছে। আর যাদের নাই, ব্যাংক তাদেরকে কিছুই দেয় না। বর্তমান পুঁজিবাদী অর্থনীতি ধনীদের জন্য, গরিবদের জন্য না। আর ইসলামের গোটা অর্থনীতি গরিবদের জন্য। মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ৫৩ বছর যারা শাসক ছিলেন, তারা এই জাতিকে মুক্তি দিতে পারেননি। আমরা আজকে জিয়াউর রহমানের আদর্শের কথা বলি। জিয়াউর রহমান এইটা করেছেন, সেটা করেছেন। জিয়াউর রহমানের আদর্শের বয়ানে সাত্তার সাহেবকে আমরা ক্ষমতায় নিয়েছিলাম না? কিন্তু তিনি থেকেও পারেন নাই। জিয়াউর রহমানের আদর্শের বয়ানে ১৯৯১ সালে আমরা খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় নিয়েছিলাম না? ২০০১ সালে বিএনপিকে ক্ষমতায় নিয়েছিলাম না? কিন্তু এই সময় আমরা কী দেখেছি। জিয়াউর রহমান সাহেবের আদর্শ বিক্রি করে আপনারা শুধু ১৯৯১ সাল থেকে ৯৬ পর্যন্ত দেশকে গোটা দুনিয়ার মধ্যে দুর্নীতিতে তিন বার চ্যাম্পিয়ন করেছেন। এটা আমাদের দোষ না, দোষ আপনাদের। আমরা তো ক্ষমতায় ছিলাম না? আমরা আর আদর্শ বিক্রি করে ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমরা রাসূলের (সা.) আদর্শ বাস্তবায়ন করতে চাই। একাত্তরের চেতনা, উমুকের চেতনা, এসব বাদ দেন। আমরা মদিনার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হই। কোরআন-হাদিসকে বাস্তবায়ন করি। ইসলামী আন্দোলনের জয়পুরহাট জেলার সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদুদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মাদ নাজমুল হাসান মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির আল্লামা আব্দুল হক আজাদ। এ সময় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির ডা. মো. ফজলুর রহমান সাঈদ, গণঅধিকার পরিষদের জেলা কমিটির সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম মাসুদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী ওমর আলী বাবু প্রমুখ। আরএইচ/ |