গাজায় দুর্ভিক্ষ রোধের সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে, জাতিসংঘের সতর্কবার্তা
প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০২:১৭ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

গাজায় দুর্ভিক্ষ আরও ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোর সুযোগ এখনও রয়েছে। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এমন মন্তব্য করে গাজায় অবাধে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গাজা নগরীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষে ভুগছেন বা এর ঝুঁকিতে আছেন। এর মধ্যেই ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে নতুন অভিযান শুরু করেছে। ব্রিটিশ বার্তব সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ইসরায়েল মার্চ থেকে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ১১ সপ্তাহ ত্রাণ সহায়তা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখে। এখন তারা দাবি করছে, খাদ্যসংকট এড়াতে আরও বেশি সাহায্য ঢুকতে এবং বিতরণ করতে দিচ্ছে।  তবে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, এখনও আরও বেশি ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন।

জাতিসংঘের মানবিক সাহায্য প্রধান টম ফ্লেচার বলেছেন,  ‘সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত একটি সঙ্কীর্ণ জানালা খোলা আছে—যাতে দুর্ভিক্ষ দেইর আল-বালাহ (মধ্য গাজা) ও খান ইউনিসে (দক্ষিণ গাজা) ছড়িয়ে পড়া রোধ করা যায়। এই জানালাটি এখন দ্রুত বন্ধ হয়ে আসছে।’

গত মাসে ইসরায়েল গাজা নগরীর উপকণ্ঠে আক্রমণ শুরু করে। এখন তাদের সেনারা নগরীর কেন্দ্র থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে রয়েছে। সপ্তাহান্তে তারা নাগরিকদের সতর্ক করে জানায়, হামাস উচ্চ ভবনগুলো ব্যবহার করছে। সেগুলো খালি করার নির্দেশ দেওয়ার পরপরই সেগুলোতে বোমা বর্ষণ করে।

তবে ইসরায়েল কোনও প্রমাণ দেয়নি যে হামাস সত্যিই ভবনগুলো ব্যবহার করছিল। হামাস উচ্চ ভবন ব্যবহারের দাবি অস্বীকার করেছে।

স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতভর হামলায় শহরজুড়ে ১৪ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ গাজা নগরীর একটি স্কুলও অন্তর্ভুক্ত, যেখানে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় নিয়েছিল।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা একজন হামাস যোদ্ধাকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল এবং আক্রমণের আগে নাগরিকদের সতর্ক করা হয়েছিল।

গাজা নগরীতে এখনও কয়েক লাখ মানুষ রয়ে যাওয়ায় যুদ্ধ থামানোর চাপ বাড়ছে।

গাজার বাসিন্দা ইমাদ বলেছেন, আমরা হামাসকে বলছি, যুদ্ধবিরতি চাই, এই যুদ্ধ থামাও। আমরা এই যুদ্ধের অবসান চাই। আর কতদিন চলবে? আর কত প্রাণ নষ্ট হবে? যথেষ্ট হয়েছে।

যুদ্ধ ইসরায়েলিদের মধ্যেও ক্রমশ অজনপ্রিয় হয়ে উঠছে। শনিবার রাতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী জিম্মিদের পরিবারগুলোর সঙ্গে রাস্তায় নামে, যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানায় এবং জিম্মিদের মুক্তির আহ্বান জানায়।

এখনও গাজায় থাকা ৪৮ জন জিম্মির মধ্যে ২০ জন জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোকে রাসমুসেন রবিবার জেরুজালেমে সাংবাদিকদের বলেন, ইসরায়েলকে ‘পথ পরিবর্তন’ করতে হবে এবং সামরিক অভিযান বন্ধ করতে হবে। আমরা মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

এসএকে/